শাজাহানপুর ইউএনও অফিসে চুরির ঘটনায় সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা বরখাস্ত
Published: 14th, January 2025 GMT
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে চুরি ও অন্যান্য দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিরব মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার বিকালে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাইফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা সম্প্রতি এ অফিস আদেশ দেন।
বগুড়ার জেলা প্রশাসকের ওই অফিস আদেশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গত ২০২৪ সালের ১৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টা থেকে ২০ এপ্রিল বেলা ১১টার মধ্যে চুরির ঘটনা ঘটে। ওই সময় চারটি কম্পিউটার, একটি ল্যাপটপ ও হার্ডডিক্সসহ দুটি সিসি ক্যামেরা চুরি হয়। এছাড়া নিরব মিয়া দুপচাঁচিয়ার মেসার্স সিদ্দিক ব্রিকসের মালিককে ইট পোড়ানোর লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেন। ওই ব্রিকস ফিল্ড হতে এক হাজার ইট গ্রহণ করে মূল্য সাড়ে ১৪ হাজার টাকা পরিশোধ না করা এবং অফিসের গোপনীয় নথিপত্র বাহিরে পাচারের অপচেষ্টার অভিযোগ উঠে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন থেকে তদন্ত করা হয়। অভিযুক্ত সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিরব মিয়া অভিযোগের ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক লিখিত জবাব দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(ঘ) বিধিমতে ‘অসদাচরণ’ ও ‘দুর্নীতি পরায়ণতার' অভিযোগে বিভাগীয় মামলার কার্যধারা সূচিত হয়েছে। বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ১২(১) মোতাবেক সরকারি চাকরি হতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এছাড়া সাময়িক বরখাস্তকালে বিধিমোতাবেক তিনি খোরাকি ভাতা পাবেন।
তবে অভিযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্ত নিরব মিয়া এ প্রসঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি চক্রান্তের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগেগতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।
ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।
আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে