পাইকগাছায় তারেক রহমানের পক্ষে শীতবস্ত্র বিতরণ
Published: 18th, January 2025 GMT
খুলনার পাইকগাছায় দুই সহস্রাধিক অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি খুলনার কপিলমুনি শ্রীরামপুর জিয়া প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার প্রাঙ্গণের মাঠে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে এ শীতবস্ত্র বিতরণ বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান ও দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার আলদীন।
পাইকগাছা বিএনপির সভাপতি ডা.
আনোয়ার আলদীন বলেন, শীত-দুর্যোগ, দুঃসময়ে আমরা এই অঞ্চলের অসহায় দুস্থ মানুষদের নিয়মিত সাধ্যমতো সর্বাত্মক সাহায্য-সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। রমজানে মাসব্যাপী তিন শতাধিক গরিব অসহায় মানুষের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই অঞ্চলের রাস্তাঘাট উন্নয়নে আমরা সাধ্যমতো ভূমিকা পালন করছি। মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সুপেয় পানির অভাব দূর করতে কয়েকটি গ্রামে, বাজারে ডিপ টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। প্রতিটি কল্যাণমূলক কাজে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ওয়াকিবহাল রয়েছেন। তার দিকনির্দেশনা ও বিশেষ সুনজর রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার ক্ষেত্রে যারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সবার জন্য দোয়া কামনা করেন তিনি।
আলদীন আরও বলেন, শীতের কষ্ট সেই বুঝবে যার কাছে শীত নিবারণের মতো কোনো বস্ত্র নেই। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় শীতের কষ্ট থেকে দরিদ্র মানুষদের রক্ষা করা সম্ভব। কপিলমুনি-পাইকগাছা এলাকায় অসহায়, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা খুশি। এই এলাকায় দরিদ্র মানুষের জন্য আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে ইনশাআল্লাহ। তিনি লন্ডনে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্যে সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
আবুল হোসেন আজাদ বলেন, উন্নয়নের রোডম্যাপে অবহেলিত পাইকগাছা-কয়রাকে সংযুক্ত করতে হবে। তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে এ অঞ্চলে আনোয়ার আলদীনের কর্মকাণ্ড প্রশংসনীয়। তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্যে সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
ডা. আব্দুল মজিদ বলেন, পাইকগাছা-কয়রার উন্নয়নে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুদৃষ্টি আমাদের জন্য প্রেরণার পাথেয়। আনোয়ার আলদীনের মাধ্যমে আমরা উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। তাকে আমরা এ অঞ্চলের সবাই ভালোবাসি।
এ দিকে নতুন কম্বল পেয়ে শীত কাতর মানুষরা আনন্দ প্রকাশ করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন র ল ইসল ম ব এনপ র র জন য ব তরণ
এছাড়াও পড়ুন:
কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা
জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।
এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।
আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?
উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’
আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।