প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসীরাই দেখা পায় সাফল্যের
Published: 18th, January 2025 GMT
স্টিভ ওয়াহ। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ও সর্বকালের সেরা দাপুটে অধিনায়ক। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি এই অধিনায়কের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণার কথা
তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক
শূন্য দিয়ে শুরু। কথাটা কাকতালীয় মনে হলেও আমার জীবনে দেখা মিলেছে এ সত্যের। আমার বাবা রজার ওয়াহ ছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা এবং মা বেভারলি ওয়াহ শিক্ষকতা করতেন। সাউথ-ওয়েস্টার্ন সিডনির কাছেই ছিল আমাদের পাননিয় গ্রাম। আমার সহোদর ও সাবেক অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান মার্ক ওয়াহর চেয়ে তিন মিনিটের বড় আমি। আমার আরও দুই ভাই ডিন ওয়াহ এবং ড্যানি ওয়াহ অস্ট্রেলিয়ার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন। জীবনের প্রথম ক্রিকেট খেলায় কাকতালীয়ভাবে আমি ও মার্ক দু’জনই শূন্য রানে আউট হয়েছিলাম।
রাজ্যদল থেকে যেভাবে জাতীয় দলে
১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলস কম্বাইন্ড হাইস্কুল ও অনূর্ধ্ব-১৯ রাজ্য দলের সদস্য ছিলাম। গ্রেট পাবলিক স্কুলের বিপক্ষে ১৭০ রান করে ডাক পাই জাতীয় দলে। জাতীয় পর্যায়ের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে একটি টেস্ট ও একদিনের সিরিজে সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিলাম। ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে আমার। ১৩ ও ৫ রানের পাশাপাশি প্রথম ইনিংসে ৩৬ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট তুলে নিয়েছিলাম। টেস্ট ক্রিকেটে দশ হাজার রান সংগ্রহ করার চেয়ে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ অস্ট্রেলিয়া দলকে রেকর্ড সংখ্যক টানা ১৬টি টেস্ট জয় এনে দিতে পেরেছিলাম। ২০০৪ সালে বর্ষসেরা অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলাম। সেটিও গৌরবের।
নেতৃত্বের গুণাবলি ও দায়িত্বশীলতা
অধিনায়ক হিসেবে আমি যখন দলের দায়িত্ব নিই, তখন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট টিম থেকে অনেক পুরোনো খেলোয়াড় অবসরে যাচ্ছিলেন। তাই ভাবলাম, নতুন করে নেতৃত্ব দেব সবাইকে। জানতাম, অধিনায়ক কিংবা সিইওর দায়িত্বটিকে অনেকে লোক দেখিয়ে বেড়াতে ভালোবাসে। বুঝে গেলাম, শুরুতেই নিজের চারপাশে একটি পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, যেন অন্যরা আমার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি খুঁজে পায়। দায়িত্বশীল হতে হবে লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রেও! অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট টিমের নেতৃত্ব দেওয়ার শুরুর দিকে আমি দলের ম্যানেজারের সব কথা মেনে নিতাম। এক সময় দেখলাম, আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফল আমাকে ভোগ করতে হবে, তাই নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করলাম।
দলের কাছে প্রশ্ন…
লক্ষ্য স্থির করে আমার দলের কাছে প্রশ্ন তুলতাম, ‘আমরা কেন প্রতি ম্যাচে জিততে পারব না?’ এটিই ছিল আমাদের দলের লক্ষ্য। মাথা ঠান্ডা রাখাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের লক্ষ্য নির্দিষ্ট ছিল– এমন কিছু আমরা অর্জন করব। এভাবেই টানা ১৬ টেস্ট ম্যাচ জিতেছি।
প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী
সব সময় আস্থা রেখেছি, ভালো ফল এনে দিতে পারে–আমাদের এমন একাগ্র ক্ষমতা ব্যবহারের। ক্ষমতার অপচয় এমন ক্ষেত্রে করা উচিত না; যেখানে দলের কোনো লাভ হবে না। আমি প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী, আর মনে করি মানুষ রেগে গেলে বা বিরক্ত থাকলে তার ক্ষমতার অপচয় করে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রুয়া নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। এর আগে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রুয়া অ্যাডহক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ মে পুনর্মিলনী এবং ১০ মে রুয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেন বিএনপিপন্থী সাবেক শিক্ষার্থীরা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই পক্ষের নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি যুক্তি চলতে থাকে।
এদিকে গতকাল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রুয়া নির্বাচন কমিশনের প্রধান কমিশনার পদত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে নোটিশ জারি করেন রুয়ার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করছেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘সিলেকশন না ইলেকশন, ইলেকশন ইলেকশন’, ‘প্রশাসন জবাব দে, রুয়া কি তোর বাপের রে’, ‘রুয়া নিয়ে টালবাহানা, চলবে চলবে না’, ‘অ্যাডহক না নির্বাচন, নির্বাচন নির্বাচন’, ‘সিন্ডিকেট না রুয়া, রুয়া রুয়া’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এ সময় ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা-কর্মীদেরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। পরে জামায়াত ইসলামীর কয়েকজন নেতাও কর্মসূচিতে যোগ দেন। একপর্যায়ে বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। বিকেল ছয়টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ মে রুয়া নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ সেই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাসের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছে। যারা রুয়া নির্বাচন দিতে পারে না, তারা রাকসু নির্বাচন কীভাবে বাস্তবায়ন করবে? ১০ মের নির্বাচন সেই একই তারিখে হতে হবে। এই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’