স্টিভ ওয়াহ। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ও সর্বকালের সেরা দাপুটে অধিনায়ক। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি এই অধিনায়কের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণার কথা 
তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক
শূন্য দিয়ে শুরু। কথাটা কাকতালীয় মনে হলেও আমার জীবনে দেখা মিলেছে এ সত্যের। আমার বাবা রজার ওয়াহ ছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা এবং মা বেভারলি ওয়াহ শিক্ষকতা করতেন। সাউথ-ওয়েস্টার্ন সিডনির কাছেই ছিল আমাদের পাননিয় গ্রাম। আমার সহোদর ও সাবেক অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান মার্ক ওয়াহর চেয়ে তিন মিনিটের বড় আমি। আমার আরও দুই ভাই ডিন ওয়াহ এবং ড্যানি ওয়াহ অস্ট্রেলিয়ার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন। জীবনের প্রথম ক্রিকেট খেলায় কাকতালীয়ভাবে আমি ও মার্ক দু’জনই শূন্য রানে আউট হয়েছিলাম।
রাজ্যদল থেকে যেভাবে জাতীয় দলে
১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলস কম্বাইন্ড হাইস্কুল ও অনূর্ধ্ব-১৯ রাজ্য দলের সদস্য ছিলাম। গ্রেট পাবলিক স্কুলের বিপক্ষে ১৭০ রান করে ডাক পাই জাতীয় দলে। জাতীয় পর্যায়ের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে একটি টেস্ট ও একদিনের সিরিজে সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিলাম। ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে আমার। ১৩ ও ৫ রানের পাশাপাশি প্রথম ইনিংসে ৩৬ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট তুলে নিয়েছিলাম। টেস্ট ক্রিকেটে দশ হাজার রান সংগ্রহ করার চেয়ে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ অস্ট্রেলিয়া দলকে রেকর্ড সংখ্যক টানা ১৬টি টেস্ট জয় এনে দিতে পেরেছিলাম। ২০০৪ সালে বর্ষসেরা অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলাম। সেটিও গৌরবের। 
নেতৃত্বের গুণাবলি ও দায়িত্বশীলতা
অধিনায়ক হিসেবে আমি যখন দলের দায়িত্ব নিই, তখন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট টিম থেকে অনেক পুরোনো খেলোয়াড় অবসরে যাচ্ছিলেন। তাই ভাবলাম, নতুন করে নেতৃত্ব দেব সবাইকে। জানতাম, অধিনায়ক কিংবা সিইওর দায়িত্বটিকে অনেকে লোক দেখিয়ে বেড়াতে ভালোবাসে। বুঝে গেলাম, শুরুতেই নিজের চারপাশে একটি পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, যেন অন্যরা আমার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি খুঁজে পায়। দায়িত্বশীল হতে হবে লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রেও! অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট টিমের নেতৃত্ব দেওয়ার শুরুর দিকে আমি দলের ম্যানেজারের সব কথা মেনে নিতাম। এক সময় দেখলাম, আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফল আমাকে ভোগ করতে হবে, তাই নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করলাম। 
দলের কাছে প্রশ্ন…
লক্ষ্য স্থির করে আমার দলের কাছে প্রশ্ন তুলতাম, ‘আমরা কেন প্রতি ম্যাচে জিততে পারব না?’ এটিই ছিল আমাদের দলের লক্ষ্য। মাথা ঠান্ডা রাখাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের লক্ষ্য নির্দিষ্ট ছিল– এমন কিছু আমরা অর্জন করব। এভাবেই টানা ১৬ টেস্ট ম্যাচ জিতেছি।
প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী 
সব সময় আস্থা রেখেছি, ভালো ফল এনে দিতে পারে–আমাদের এমন একাগ্র ক্ষমতা ব্যবহারের। ক্ষমতার অপচয় এমন ক্ষেত্রে করা উচিত না; যেখানে দলের কোনো লাভ হবে না। আমি প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী, আর মনে করি মানুষ রেগে গেলে বা বিরক্ত থাকলে তার ক্ষমতার অপচয় করে। 
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম মো. আরিফুল। শুক্রবার বেলা এগারোটার দিকে তিনি ভবন থেকে পড়ে যান বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিংতম বলেন, বেলা এগারোটার দিকে কয়েকজন ওই শ্রমিককে নিয়ে আসেন। অবস্থা গুরুতর দেখে তখনই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

নির্মাণাধীন ভবনটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোমিনুল করিম শুক্রবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ভবনটির নির্মাণকাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু শ্রমিক ওই ভবনে থাকেন। দুপুরের দিকে তিনি জানতে পারেন একজন শ্রমিক ভবন থেকে পড়ে গেছেন। তাঁকে এনাম মেডিকেলে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিলো। সন্ধ্যাবেলায় তাঁকে জানানো হয় ওই শ্রমিক মারা গেছেন।

তবে এনাম মেডিকেলের ডিউটি ম্যানেজার সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীরনগর থেকে একজন রোগীকে আনা হয়েছিল। উনি ছাদ থেকে পড়ে গেছেন বলে জানানো হয়। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তিনি মারা যান।

শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আধা ঘণ্টা আগে খবর পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এমন একটি ঘটনা আমাদের আগে জানানো হয়নি কেন, তা জিজ্ঞাসা করেছি। বিষয়টি প্রো-ভিসি (এডমিন) দেখছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ