ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আজ রোববার থেকে তালিকাভুক্ত ৩২৬ কোম্পানির শেয়ারের দর ও বাজার মূলধনের ভিত্তিতে গণনা করা হবে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৫৩ শেয়ার নিয়ে সূচকটি গণনা হতো। গত বছরের শেষ ছয় মাসের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর টাকার অঙ্কে শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ এবং বাজার মূলধনের ভিত্তিতে ৮৭টি শেয়ার যুক্ত হয়েছে। বাদ পড়েছে আগের ১৪ শেয়ার।
বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার সূচকে যুক্ত হওয়ায় সূচকের ওঠানামায় তার প্রভাব থাকবে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বৃহৎ বাজার মূলধনি শেয়ারগুলোর দর ওঠানামা কম হওয়ায় বড় বেশি পরিবর্তন না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
এদিকে গত সপ্তাহের বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বেশির ভাগ ‘পেনি স্টক’ বা স্বল্প মূল্যের শেয়ার দর হারালেও সপ্তাহের হিসাবে এমন শেয়ারের দরেই জয়-জয়কার ছিল। শেষ পর্যন্ত ভালোমন্দ বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর হারিয়েছে। কমেছে মূল্য সূচকও। তবে লেনদেনের পরিমাণ ৯ শতাংশ বেড়েছে। ডিএসইর মূল লেনদেন প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১০৭টির দর বেড়েছে, ২৬৩টি দর হারিয়েছে এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৭টির। এতে ডিএসইএক্স সূচক ৬০ পয়েন্ট হারিয়ে ৫১৩৪ পয়েন্টের নিচে নেমেছে। তবে সার্বিক লেনদেন ১৫৭ কোটি টাকা বেড়ে ১ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সাপ্তাহিক গড় লেনদেন বেড়ে উন্নীত হয়েছে ৩৭৮ কোটি টাকায়।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহের শেষে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ পতন থেকে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ দর বেড়েছে বা কমেছে ১৬৬টির। এমন শেয়ারের তালিকায় রয়েছে সিঙ্গার বাংলাদেশ, এমজেএল বাংলাদেশ, বিএটি বাংলাদেশ, ইউনাইটেড পাওয়ার, বার্জার পেইন্টস, রবি, যমুনা অয়েল, এক্‌মি ল্যাবরেটরিজ, স্কয়ার ফার্মার মতো কোম্পানি।
কমপক্ষে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ দর বেড়েছে ২৯ কোম্পানির। আর ৫ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়েছে মোট ৪১ কোম্পানি। ১৮ শতাংশ দর হারিয়েছে ফাইন ফুডস এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক। ১০ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়েছে ইসলামিক ফাইন্যান্স, সাউথবাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্স।
সাড়ে ২৮ শতাংশ দরবৃদ্ধি নিয়ে শীর্ষে ছিল বন্ধ কোম্পানি খুলনা প্রিন্টিং। বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতে আগের দিনের তুলনায় সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ সাড়ে ৯ শতাংশ দর বেড়ে ২০ টাকা ৭০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছিল। লেনদেনের শেষ সোয়া ২ ঘণ্টায় সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দর ১৭ টাকা ১০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছিল। অর্থাৎ এক দিনেই শেয়ারটির দর ওঠানামা করেছে ১৯ শতাংশের বেশি। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দোয়ার ফজিলত ও আদব

দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।

প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)

আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)

মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)

‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)

দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)

দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)

নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)

নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)

দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।

হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম

[email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ