পাবনার আমিনপুর থানার কাশিনাথপুরে ইট বোঝাই ভটভটি ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলের অন্য দুই আরোহী।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে কাশিনাথপুর ফুলবাগান মোড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিনাথপুর ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক রাবিন্দ্র নাথ মন্ডল।

নিহত যুবক পাবনার বেড়া উপজেলার নগরবাড়ি বসন্তপুর গ্রামের ইকবাল শেখের ছেলে জামিল শেখ (২৩)। আহতরা হলেন- একই এলাকার মাখম আলীর ছেলে পরাগ হোসেন ও সিংহাসন গ্রামের ধ্বনি শেখের ছেলে ইমরান শেখ।

আরো পড়ুন:

ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত

বান্দরবানে ট্রাকচাপায় তিন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কাজিরহাট এলাকা থেকে জামিল, পরাগ ও ইমরান মোটরসাইকেলে করে কাশিনাথপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। কাশিনাথপুর ফুলবাগান মোড়ে নগবাড়িগামী ইট বোঝাই ভটভটির  সঙ্গে মোটরসাইকেলটির সংঘর্ষ হয়। এতে তিন মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়।

জামিল ও পরাগের অবস্থা গুরুতর ছিল। তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথেই জামিল মারা যান। আহত পরাগ পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ও ইমরান কাশিনাথপুরের ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

কাশিনাথপুর ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক রাবিন্দ্র নাথ মন্ডল বলেন, ‍“আজ আমরা বেড়া এলাকায় ডিউটিতে ছিলাম। দুর্ঘটনা ঘটেছে শোনা মাত্রই ঘটনাস্থলে এসে ভটভটি এবং মোটরসাইকেল উদ্ধার করে আমিনপুর থানায় হস্তান্তর করেছি। একজন মারা গেছেন। দুইজন হাসপাতাল ভর্তি।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন আহত

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ