Samakal:
2025-08-01@22:27:16 GMT

প্রথম দিনই নির্বাহী আদেশের ঝড়

Published: 22nd, January 2025 GMT

প্রথম দিনই নির্বাহী আদেশের ঝড়

নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের ঝড় তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দায়িত্ব নেওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসের ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিন সোমবারই শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। শুরুতেই তিনি সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিল করেন। পাশাপাশি অভিবাসন নীতি কঠোর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া, আপাতত টিকটক চালু রাখা এবং ২০২১ সালে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িতদের ক্ষমা করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাহীর আদেশে যা করতে পারেন, তারও কিছু আইনগত সীমাবদ্ধতা এবং ট্রাম্পের অনেক আদেশই আদালতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ আইনি প্রক্রিয়া আদেশের বাস্তবায়নকে ধীর এবং এমনকি বন্ধ করে দিতে পারে। শপথ গ্রহণের কিছুক্ষণ পরই ট্রাম্প যেসব নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, তার মধ্যে শুরুতেই তিনি বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিল করেন। যার মধ্যে আছে কিউবাকে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থলের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবৈধ দখলদার ইসরায়েলিদের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা। এ ছাড়া প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার আদেশেও সই করেছেন তিনি। এর আগে ক্ষমতা ছাড়ার আগমুহূর্তে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বাইডেন ফৌজদারি মামলার হুমকিতে রয়েছেন এমন বেশ কয়েকজনকে ক্ষমা করে দেন। নিজের প্রথম ভাষণে ট্রাম্প বলেছেন, ওই আদেশও বাতিল হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত একটি আদেশেও সই করেছেন ট্রাম্প।

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িত প্রায় ১ হাজার ৫০০ সমর্থককে ক্ষমার আদেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। এরই মধ্যে তারা ওয়াশিংটনের কারাগার থেকে ছাড়া পেতে শুরু করেছেন। এ ছাড়া তিনি বাইডেন প্রশাসনের ‘রাজনৈতিক বিরোধীদের’ অর্থাৎ ট্রাম্প সমর্থকদের বিরুদ্ধে ফেডারেল মামলা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের দিন ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায় ট্রাম্পের হাজারো সমর্থক। ট্রাম্প তাদের উস্কে দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের ক্ষমা করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ওই সময় ডেমোক্রেটিক হাউস স্পিকার থাকা ন্যান্সি পেলোসি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেলোসি বলেন, ‘এই পদক্ষেপ দেশের বিচার ব্যবস্থা এবং শারীরিক ক্ষত ও মানসিক ট্রমার সম্মুখীন হওয়া মানুষের প্রতি অত্যন্ত অবমাননাকর।’ ট্রাম্পের পদক্ষেপের সমালোচনা করে সিনেটর ও ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেন, তারা আইন অমান্য করে ক্যাপিটলে ঢুকে শান্তিপূর্ণভাবে চলমান ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া ঠেকানোর চেষ্টা করেছিল। তারা যা করেছে, তা ছিল একটি গুরুতর অপরাধ। তাদের ক্ষমা করা উচিত হয়নি। 

ট্রাম্প তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করা হবে এবং কয়েক লাখ অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে। সেই প্রতিশ্রুতির আলোকেই অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। এ লক্ষ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আবারও প্রাচীর নির্মাণ শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন।
ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার প্রক্রিয়া শুরু করতে ট্রাম্প সোমবার একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। বাইডেন-যুগের নীতি থেকে সরে এসে ট্রাম্প ফেডারেল কর্মীদের জন্য কভিড টিকা নেওয়ার বাধ্যবাধকতাও বাতিল করেছেন। এ ছাড়া আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের আশা করছেন। যদিও চীনা আমদানিতে কর আরোপের পরিকল্পনাটি তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি টিকটককে আইনি বাধ্যবাধকতা পালনের জন্য ৭৫ দিন সময় দিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। এ সময় কোনো আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ট্রাম্প নতুন ফেডারেল নিয়োগও স্থগিত করেছেন। আবার ‘হোম অফিস’ বাতিল করে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের দপ্তরে উপস্থিত থেকে কাজ করতে হবে– এমন একটি নির্বাহী নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। তিনি প্রতিটি ফেডারেল বিভাগ ও সংস্থাকে আমেরিকানদের জীবনযাত্রার খরচ কমানোর ওপর গুরুত্ব দিতে বলেছেন। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘আমেরিকা উপসাগর’ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আলাস্কার মাউন্ট ডেনালির নাম পরিবর্তন করে ‘মাউন্ট ম্যাককিনলি’ রাখার নির্দেশ দেন।

এদিকে ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই ট্রাম্প চার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। তিনি তাঁর ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে হাজারো কর্মকর্তাকে বরখাস্তের হুমকিও দিয়েছেন। বরখাস্ত হওয়া চার ব্যক্তি হলেন– মার্কিন প্রেসিডেন্টের খেলাধুলা, স্বাস্থ্য-সবলতা ও পুষ্টিবিষয়ক পরিষদের হোসে আন্দ্রেজ, জাতীয় অবকাঠামো উপদেষ্টা পরিষদের মার্ক মিলে, উইলসন সেন্টার ফর স্কলারসের ব্রায়ান হুক ও রপ্তানিবিষয়ক পরিষদের কেইশা ল্যান্স বটমস। তাদের তৎক্ষণাৎ বরখাস্ত করা হয়েছে।

শপথ গ্রহণের পর পানামা খাল প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি এমন একটি বোকা উপহার, যা আমাদের কখনও তৈরি করাই উচিত হয়নি।’ পানামা খাল চীনারা পরিচালনা করছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আমরা এটি চীনকে দিইনি। আমরা আবার এটি ফিরিয়ে নেব।

নিজের রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট বলেন, মার্কিন নাগরিকরা কথা রেখেছেন। আমি এটার প্রমাণ হিসেবে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি। অসম্ভব বলে কিছু বিশ্বাস করা কখনোই উচিত নয়। অসম্ভবকে সম্ভব করাই আমরা আমেরিকায় সবচেয়ে ভালো পারি। যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত করা বা ভয় দেখানো যাবে না বলেও ভাষণের শেষে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে পানামা খাল নিয়ে বক্তব্যের পর ট্রাম্পকে পাল্টা হুংকার দিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো। তিনি বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান এই রুটটি তাঁর পানামার হাতে আছে এবং তাদের হাতেই থাকবে। বিশ্বে এমন কোনো দেশ নেই, যারা আমাদের কর্তৃত্বে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর মার্কো রুবিও। সোমবার মার্কিন সিনেট তাঁর নিয়োগের মনোনয়ন অনুমোদন দেয়। তিনি চীনের কড়া সমালোচক এবং ইসরায়েলের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের সময়ই ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি’র (ডিওজিই) প্রধান ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসির ফেডারেল জেলা আদালতে ডিওজিইর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলো দায়ের করেছে প্রগ্রেসিভ কনজিউমার ওয়াচডগ পাবলিক সিটিজেন, আমেরিকান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সেলরস নামক একটি জনস্বার্থ আইন সংস্থা। মামলাগুলোয় দাবি করা হয়েছে, ডিওজিই ফেডারেল অ্যাডভাইজরি কমিটি অ্যাক্ট (এফএসিএ) মেনে চলছে না। 

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ত ল কর বরখ স ত পদক ষ প গ রহণ র কর ছ ন র কর ছ প রথম ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

ভোগবাদী যুগে ইসলামে সুখের খোঁজ

আপনার বাড়িতে কি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের স্তূপ জমে আছে? জানেন কি, এর থেকে মুক্তির পথ আছে ইসলামের সরল জীবনধারায়? আধুনিক বিশ্বে ভোগবাদের তীব্র ঝড়ে আমরা প্রায়ই নিজেদের দেখি অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে ঠাসা ঘরে।

নতুন ফ্যাশনের পোশাক, সর্বশেষ প্রযুক্তির গ্যাজেট বা মধ্যরাতে এক ক্লিকে কেনা অপ্রয়োজনীয় পণ্য—এসব আমাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ইসলাম আমাদের ন্যূনতম একটি সরল জীবনধারার পথ দেখায়, যা পার্থিব লোভ থেকে মুক্ত করে আমাদের আল্লাহর পথে নিবেদিত হতে উৎসাহিত করে।

আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০সংযম কেন জরুরি

মিনিমালিজম বা ন্যূনতাবাদ এমন একটি জীবনধারা, যেখানে আমরা শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর নির্ভর করব এবং অতিরিক্ত ভোগবিলাস থেকে দূরে থাকব। ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ না হয়ে শুধু যেটুকু না হলেই জীবন চলে না, সেটুকু নিজের কাছে রাখব।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান, প্রত্যেক নামাজের সময় বেশভূষা সৌন্দর্য গ্রহণ করো, খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত: ৩১)।

এই আয়াত আমাদের জীবনে সংযম ও সরলতার গুরুত্ব মনে করিয়ে দেয়।

আরও পড়ুনদুনিয়ার ভোগ–বিলাস নিয়ে সুরা তাকাসুরের সতর্কতা১০ এপ্রিল ২০২৩

বিজ্ঞাপনের প্রলোভন আজকাল আমাদের অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার দিকে ঠেলে দেয়। প্রায়ই এমন জিনিস কিনে ফেলি, যেমন একটি ইউএসবি মগ হিটার বা জামাকাপড়, যা তারপর বছরের পর বছর অব্যবহৃত পড়ে থাকে।

বাড়িতে জমে থাকে প্যাকেট না খোলা গ্লাস–বক্স, অপঠিত বইয়ের স্তূপ। প্রশ্ন করে দেখি তো, আমাদের আসলেই কি এগুলো প্রয়োজন ছিল?

মহানবী (সা.)-এর সাদাসিধা জীবন

মহানবীজি (সা.) এবং তাঁর সাহাবারা সরল জীবনযাপনের উজ্জ্বল উদাহরণ। হজরত আয়েশা (রা.)-কে নবীজি বলেছিলেন, ‘হে আয়েশা, তুমি যদি আমার সঙ্গে মিলিত হতে চাও, তবে এই দুনিয়া থেকে একজন পথিকের প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো সামান্য গ্রহণ করো। ধনীদের সঙ্গে মেলামেশা থেকে সাবধান থাকো এবং কোনো পোশাককে তখনই জীর্ণ হয়ে গেছে মনে করো, যখন তুমি তাতে প্যাঁচ লাগিয়েছ (মানে যখন পুরোনো হয়ে যাওয়ার কারণে পেঁচিয়ে যায়)।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৭,৮০০)।

এই হাদিসে নবীজি (সা.) স্পষ্টভাবে সরল জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।

ইসলাম আমাদের শেখায় যে পার্থিব সম্পদ ক্ষণস্থায়ী এবং এটি আমাদের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য প্রস্তুতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। নবীজি (সা.) কখনো অপ্রয়োজনীয় সম্পদ সঞ্চয় করেননি এবং সব সময় দানশীলতার মাধ্যমে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করেছেন।

দানের সংস্কৃতি

আজকের বিশ্বে ভোগবাদী সংস্কৃতি আমাদের জীবনকে জটিল করে তুলেছে। ক্রেডিট কার্ড, সহজলভ্য ঋণ এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের ক্রমাগত কেনাকাটার দিকে প্রলুব্ধ করে। আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, যেমন আমাদের দাদা-দাদিরা, সীমিত সম্পদের মধ্যে সরল জীবন যাপন করতেন। কিন্তু গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান এবং সহজে ঋণ পাওয়ার সুযোগ আমাদের ভোগবাদী প্রবৃত্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুনখাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে ইসলামের নির্দেশনা০৯ জুন ২০২৫

কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায়, প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত সম্পদ সঞ্চয় করা লোভ ও কৃপণতার দিকে নিয়ে যায়, যা একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়।

ইসলাম আমাদের জীবনকে সরল করার পাশাপাশি আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহিত করে। আমরা চাইলে মাসিক বাজেটের একটি অংশ দানের জন্য বরাদ্দ করতে পারি।

যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪

বিয়ের মতো উৎসবে আমরা বিলাসবহুল আয়োজনের পরিবর্তে সরলতা বেছে নিতে পারি। উপহারের পরিবর্তে আমরা দাতব্য সংস্থায় দানের জন্য অনুরোধ করতে পারি। এমনকি আমাদের একটি অনলাইন সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে সেই অর্থ স্থানীয় মসজিদে দান করতে পারি।

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদে সংযমী হয় এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৯৪)।

আমাদের ভালো কাজ এবং দানশীলতা পরকালে যেমন উপকারে আসবে, তেমনি সমাজের জন্যও হবে কল্যাণকর। অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে দানশীলতার দিকে মনোযোগ দিলে সমাজের দরিদ্র ও অভাবী মানুষের জীবন উন্নত হবে।

ভোগবাদী জীবন মানুষকে অস্থির করে তোলে এবং ন্যূনতম খরচের জীবনধারা মানুষকে তৃপ্তির জীবন উপহার দেয়। এটি একই সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেরও একটি পথ।

আমরা যদি আমাদের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে আল্লাহর পথে ব্যয় করি, তবে তা আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। ন্যূনতমবাদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের প্রকৃত সুখ পার্থিব সম্পদে নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের প্রস্তুতিতে নিহিত।

আরও পড়ুনআধুনিক এই প্রবণতার শিকড় ইসলামে২০ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ