নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের ঝড় তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দায়িত্ব নেওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসের ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিন সোমবারই শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। শুরুতেই তিনি সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিল করেন। পাশাপাশি অভিবাসন নীতি কঠোর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া, আপাতত টিকটক চালু রাখা এবং ২০২১ সালে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িতদের ক্ষমা করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাহীর আদেশে যা করতে পারেন, তারও কিছু আইনগত সীমাবদ্ধতা এবং ট্রাম্পের অনেক আদেশই আদালতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ আইনি প্রক্রিয়া আদেশের বাস্তবায়নকে ধীর এবং এমনকি বন্ধ করে দিতে পারে। শপথ গ্রহণের কিছুক্ষণ পরই ট্রাম্প যেসব নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, তার মধ্যে শুরুতেই তিনি বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিল করেন। যার মধ্যে আছে কিউবাকে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থলের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবৈধ দখলদার ইসরায়েলিদের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা। এ ছাড়া প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার আদেশেও সই করেছেন তিনি। এর আগে ক্ষমতা ছাড়ার আগমুহূর্তে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বাইডেন ফৌজদারি মামলার হুমকিতে রয়েছেন এমন বেশ কয়েকজনকে ক্ষমা করে দেন। নিজের প্রথম ভাষণে ট্রাম্প বলেছেন, ওই আদেশও বাতিল হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত একটি আদেশেও সই করেছেন ট্রাম্প।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িত প্রায় ১ হাজার ৫০০ সমর্থককে ক্ষমার আদেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। এরই মধ্যে তারা ওয়াশিংটনের কারাগার থেকে ছাড়া পেতে শুরু করেছেন। এ ছাড়া তিনি বাইডেন প্রশাসনের ‘রাজনৈতিক বিরোধীদের’ অর্থাৎ ট্রাম্প সমর্থকদের বিরুদ্ধে ফেডারেল মামলা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের দিন ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায় ট্রাম্পের হাজারো সমর্থক। ট্রাম্প তাদের উস্কে দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের ক্ষমা করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ওই সময় ডেমোক্রেটিক হাউস স্পিকার থাকা ন্যান্সি পেলোসি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেলোসি বলেন, ‘এই পদক্ষেপ দেশের বিচার ব্যবস্থা এবং শারীরিক ক্ষত ও মানসিক ট্রমার সম্মুখীন হওয়া মানুষের প্রতি অত্যন্ত অবমাননাকর।’ ট্রাম্পের পদক্ষেপের সমালোচনা করে সিনেটর ও ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেন, তারা আইন অমান্য করে ক্যাপিটলে ঢুকে শান্তিপূর্ণভাবে চলমান ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া ঠেকানোর চেষ্টা করেছিল। তারা যা করেছে, তা ছিল একটি গুরুতর অপরাধ। তাদের ক্ষমা করা উচিত হয়নি।
ট্রাম্প তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করা হবে এবং কয়েক লাখ অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে। সেই প্রতিশ্রুতির আলোকেই অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। এ লক্ষ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আবারও প্রাচীর নির্মাণ শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন।
ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার প্রক্রিয়া শুরু করতে ট্রাম্প সোমবার একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। বাইডেন-যুগের নীতি থেকে সরে এসে ট্রাম্প ফেডারেল কর্মীদের জন্য কভিড টিকা নেওয়ার বাধ্যবাধকতাও বাতিল করেছেন। এ ছাড়া আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের আশা করছেন। যদিও চীনা আমদানিতে কর আরোপের পরিকল্পনাটি তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি টিকটককে আইনি বাধ্যবাধকতা পালনের জন্য ৭৫ দিন সময় দিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। এ সময় কোনো আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ট্রাম্প নতুন ফেডারেল নিয়োগও স্থগিত করেছেন। আবার ‘হোম অফিস’ বাতিল করে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের দপ্তরে উপস্থিত থেকে কাজ করতে হবে– এমন একটি নির্বাহী নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। তিনি প্রতিটি ফেডারেল বিভাগ ও সংস্থাকে আমেরিকানদের জীবনযাত্রার খরচ কমানোর ওপর গুরুত্ব দিতে বলেছেন। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘আমেরিকা উপসাগর’ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আলাস্কার মাউন্ট ডেনালির নাম পরিবর্তন করে ‘মাউন্ট ম্যাককিনলি’ রাখার নির্দেশ দেন।
এদিকে ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই ট্রাম্প চার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। তিনি তাঁর ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে হাজারো কর্মকর্তাকে বরখাস্তের হুমকিও দিয়েছেন। বরখাস্ত হওয়া চার ব্যক্তি হলেন– মার্কিন প্রেসিডেন্টের খেলাধুলা, স্বাস্থ্য-সবলতা ও পুষ্টিবিষয়ক পরিষদের হোসে আন্দ্রেজ, জাতীয় অবকাঠামো উপদেষ্টা পরিষদের মার্ক মিলে, উইলসন সেন্টার ফর স্কলারসের ব্রায়ান হুক ও রপ্তানিবিষয়ক পরিষদের কেইশা ল্যান্স বটমস। তাদের তৎক্ষণাৎ বরখাস্ত করা হয়েছে।
শপথ গ্রহণের পর পানামা খাল প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি এমন একটি বোকা উপহার, যা আমাদের কখনও তৈরি করাই উচিত হয়নি।’ পানামা খাল চীনারা পরিচালনা করছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আমরা এটি চীনকে দিইনি। আমরা আবার এটি ফিরিয়ে নেব।
নিজের রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট বলেন, মার্কিন নাগরিকরা কথা রেখেছেন। আমি এটার প্রমাণ হিসেবে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি। অসম্ভব বলে কিছু বিশ্বাস করা কখনোই উচিত নয়। অসম্ভবকে সম্ভব করাই আমরা আমেরিকায় সবচেয়ে ভালো পারি। যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত করা বা ভয় দেখানো যাবে না বলেও ভাষণের শেষে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে পানামা খাল নিয়ে বক্তব্যের পর ট্রাম্পকে পাল্টা হুংকার দিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো। তিনি বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান এই রুটটি তাঁর পানামার হাতে আছে এবং তাদের হাতেই থাকবে। বিশ্বে এমন কোনো দেশ নেই, যারা আমাদের কর্তৃত্বে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর মার্কো রুবিও। সোমবার মার্কিন সিনেট তাঁর নিয়োগের মনোনয়ন অনুমোদন দেয়। তিনি চীনের কড়া সমালোচক এবং ইসরায়েলের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে পরিচিত।
নিউইয়র্ক প্রতিনিধি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের সময়ই ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি’র (ডিওজিই) প্রধান ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসির ফেডারেল জেলা আদালতে ডিওজিইর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলো দায়ের করেছে প্রগ্রেসিভ কনজিউমার ওয়াচডগ পাবলিক সিটিজেন, আমেরিকান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সেলরস নামক একটি জনস্বার্থ আইন সংস্থা। মামলাগুলোয় দাবি করা হয়েছে, ডিওজিই ফেডারেল অ্যাডভাইজরি কমিটি অ্যাক্ট (এফএসিএ) মেনে চলছে না।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ত ল কর বরখ স ত পদক ষ প গ রহণ র কর ছ ন র কর ছ প রথম ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
‘ভোল পাল্টে’ সক্রিয় কিশোর গ্যাং, অতিষ্ঠ বাসিন্দারা
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর আবাবিল ইউনিয়নের উদমারা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। এলাকায় নারীদের উত্ত্যক্ত করা, মাদক সেবন, মারামারি, খুনসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের এসব সদস্যদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত বছরের ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার ছত্রচ্ছায়ায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত। তবে এখন ভোল পাল্টে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভিড়েছে তারা।
সম্প্রতি এলাকাটিতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন জাহাঙ্গীর আলম (৫২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন। মসজিদের পাশে জুয়ার আসর বসানো ও মাদক সেবনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তাঁর ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গত ৩ এপ্রিল তাঁর ওপর হামলা করা হয়। এরপর গত শনিবার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন কয়েকজন স্থানীয় তরুণ। ওই তরুণেরা রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় মিছিল-সমাবেশে কিশোরদের ব্যবহার করে আসছেন। ফলে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতাও এসব কিশোরকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে প্রশ্রয় দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আগে এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণ ছিল চর আবাবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম ও ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক সর্দারের হাতে। তাঁরা এসব কিশোরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই কিশোরেরা ভোল পাল্টে বিএনপির কর্মসূচিতে সক্রিয় হচ্ছে। আবদুর রহিম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি এসব তরুণকে নতুন করে আশ্রয়–প্রশ্রয় দিচ্ছেন। রহিম ইউনিয়ন বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হলেও তাঁর পদপদবি নেই।
জাহাঙ্গীর আলম খুনের ঘটনায় আবদুর রহিমকেও আসামি করা হয়। মামলার পর তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আমি প্রশ্রয় দিচ্ছি—এমন অভিযোগ প্রায় করা হচ্ছে। তবে এসব অভিযোগ সত্য নয়। আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে।’
ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক সর্দার বলেন, ‘কিশোর গ্যাংকে আমি কখনো প্রশ্রয় দিইনি। তারা (কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা) আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করত।’ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম আত্মগোপনে থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দলীয় কোনো নেতা-কর্মী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের প্রশ্রয় দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো নেতা-কর্মীর অপকর্মের দায় দল নেবে না।
জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলার ঘটনায় গত ৭ এপ্রিল লক্ষ্মীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলার আবেদন করেন তাঁর স্ত্রী রাজিয়া বেগম। আদালত রায়পুর থানাকে মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, মসজিদের আশপাশে জুয়ার আসর ও মাদক সেবন করত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এসব বিষয়ের প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে সাব্বির হোসেন, জুবায়ের হোসেনসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে ৮–১০ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা করেছেন। নিহত জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে শারমিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, মামলার পর আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের। স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিয়ে আসছে।
জানতে চাইলে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, কিশোর অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন পাঠান বলেন, কিশোর-তরুণদের খেলাধুলা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের ফেরাতে না পারলে অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। কেউ যাতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবাইকে তৎপর থাকতে হবে।