আসাদুজ্জামান খান কামাল ‘বাংলাদেশের কসাই’: প্রেস সচিব
Published: 26th, January 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ‘বাংলাদেশের কসাই’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া আন্দোলন, সে সময় তার এবং তৎকালীন সরকারের অবস্থানসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
সাবেক ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা
লায়লা কানিজের রিমান্ড শুনানিতে মুন্নী সাহা প্রসঙ্গ
ওই সাক্ষাৎকারে কামাল দাবি করেন, বাংলাদেশে যৌথ অভ্যুত্থান ঘটানো হয়েছে; ইসলামী উগ্রবাদ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভ্যুত্থান।
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রেস সচিব বলেন, “আসাদুজ্জামান খান কামাল হচ্ছেন ‘বাংলাদেশের কসাই’। দেশে যে ছোট ছোট বাচ্চা ছেলে-মেয়ে, শিক্ষার্থী, শ্রমিক, রিকশাওয়ালাদের নির্দয়ভাবে খুন করা হয়েছে, তার অন্যতম কসাই হচ্ছেন উনি। তাকে যারা প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছে, নিউজ যারা করছে, তাদের মানটা বোঝেন। এটা আন্তর্জাতিক প্রোপাগান্ডার অংশ। পৃথিবীর কেউ কোনো কসাইকে প্ল্যাটফর্ম দেয় না।”
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সুইজারল্যান্ড সফরের সার্বিক বিষয় জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনে আসেন শফিকুল আলম।
গুজবের বিষয়ে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “যদি এটা আইনের ব্যত্যয় হয় তাহলে আইনি ব্যবস্থার বিষয় আছে।”
ব্যবসায়ীদের নির্বাচনের দাবি প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, “ব্যবসায়ীদের জন্য বিনিয়োগের ভালো পরিবেশ দিয়েছি। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের সঠিক পরিবেশ দিতে পারছি কি না, সেটা তাদের বড় কনসার্ন হওয়া উচিত।”
প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা পালিয়েছেন বলে যে গুজব রটেছে, সে বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, “যারা পালিয়েছেন, তারাই ছড়াচ্ছে। শেখ হাসিনা পালায় না বলে, উনি পালালেন। ওনার চ্যালা-চামুন্ডারা এগুলো করছেন। প্রতিবার উনি (প্রধান উপদেষ্টার বিদেশ সফর) আসলে এটা বলেন। এটা বলে যদি উনারা মনে মনে সুখ পান, তা পেতে দেন।”
দেশে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কারখানা খুলবে, বন্ধ হবে এটা প্রাকৃতিক নিয়ম। কিন্তু সরকার দেখে রপ্তানি বাড়ছে কি না। দেশের রপ্তানি সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ৭ শতাংশ, অক্টোবরে ১৬ বা ১৮ শতাংশ, নভেম্বরে ২২ শতাংশ, ডিসেম্বরের ১৮ শতাংশের মত। আমাদের প্রবৃদ্ধি সেই রকম আছে। রপ্তানি বৃদ্ধি মানেই হচ্ছে নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হওয়া।”
বন্ধ হওয়া কারখানার মালিকদের বিষয়ে তিনি বলেন, “তাদের বেশিরভাগ মালিক পালিয়ে গেছেন। পুরো দায়টা আমাদেরও ওপর দিয়ে গেছেন। ব্যাংক থেকে যা যা ছিল তা চুরি করে পালিয়ে গিয়ে বেতন না দিয়ে, মজা দেখতেছেন। ভাঙচুর করা হচ্ছে দুই-তিনটা কারখানা মিলেই। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদান খুবই সামান্য। একদমই কিছুই না।”
রপ্তানি তথ্যে সরকার কারসাজি করছে না জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, “শেখ হাসিনার আমলে রপ্তানির তথ্য কারসাজি করা হয়েছিল। এটা ওই সময়ে রিপোর্ট হয়েছিল।”
সুইজারল্যান্ডে অনেকগুলো বৈঠকের মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
কবে নাগাদ অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, “বৈশ্বিকভাবে পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনা খুবই ধীরগতির (স্লো) প্রক্রিয়া। এটা নিয়ে যত দ্রুত মুভ নেওয়া দরকার, তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করেছে।
“যে টাকা চুরি হয়েছে তা দেশের খেটে খাওয়া মানুষের টাকা, সেটা চুরি করে নিয়েছে শেখ হাসিনার চোরতন্ত্রের লোকজন। এটা যেভাবে হোক ফিরিয়ে আনব। এটার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রয়োজন, তা সবাই দিচ্ছে। টাকা ফিরিয়ে আনা আমাদের টপ প্রায়োরিটি। প্রধান উপদেষ্টা যাদের সঙ্গেই বৈঠক করছেন, সেখানে বিষয়টি তুলছেন।”
সরকারের কঠোর হুঁশিয়ারির পরও মাজারে হামলার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, “মাজার বাংলাদেশে একটি অন্যতম ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। দেশের লাখ লাখ জনগণ মাজারে যান। তাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান করি। যারা মাজারে হামলা করবে, তাদের বিষয়ে সরকারের জিরো টলারেন্স। কোনোভাবে বরদশত করব না।”
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ সরক র র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫