লা লিগায় রিয়াল বেতিস, লেগানেস, অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের ও হেতাফে, এই চার দলের বিপক্ষে টানা পয়েন্ট হারিয়েছিল বার্সালোনা। তার মাঝে লেগানেস ও অ্যাতলেটিকোর বিপক্ষে তো হেরে মাঠে ছাড়তে হয়েছিল। তাই রোববার (২৬ জানুয়ারি, ২০২৫) রাতে অবনমন অঞ্চলে থাকা ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না বার্সার। দেয়ালে পিঠ থেকে যাওয়াতেই কিনা এই ম্যাচে জলে উঠল হ্যান্সি ফ্লিকের দল। গোল উৎসব করে ভ্যালেন্সিকে ৭-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিল।

ঘরের মাঠ এস্তাদিও অলিম্পিকে রোববার বদলি নামার ছয় মিনিট পর জালের দেখা পান বার্সা স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানদোভস্কি। যা ছিল চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার শততম গোল। চলতি মৌসুমের শুরুতে বার্সার ম্যানেজারের দায়িত্ব নেওয়ার পর ফ্লিকের অধীনে এটি ক্লাবটির শততম গোল।

 

জার্মান ম্যানেজারের অধীনে এখন পর্যন্ত ৩২ ম্যাচে বার্সা পেয়েছে ১০১ গোল, যা ক্লাবটির ইতিহাসে এক মৌসুমের দ্বিতীয় দ্রুততম গোলের ‘সেঞ্চুরি’। কেবলমাত্র ১৯৫০-এর দশকে হেলেনিও হেরেরার বার্সেলোনা মাত্র ৩১ ম্যাচে এই সংখ্যায় পৌঁছেছিলেন। তবে ফ্লিক পেছনে ফেলে দিয়েছেন লুইস এনরিকে, তিতো ভিলানোভা, ডোমেনেক বালমানিয়া, লাডিস্লাও কুবালা এবং জোসেপ গার্দিওলাদের মতো কোচদের।

এদিন তিন মিনিট যেতেই ফ্রাঙ্কি ডি ইয়াং ডান পায়ের শটে জাল খুঁজে নিয়ে গোল উৎসবের শুরটা করেন। পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফেরান তোরেস। ১৫ মিনিট যেতেই প্রতিপক্ষের রক্ষণের ভুলে স্কোর ৩-০ করেন রাফিনিয়া। প্রথমার্ধেই চতুর্থ ও পঞ্চম গোলটি আসে ফের্মিন লোপেসের পা থেকে।

ম্যাচের ৫৯ মিনিটে ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে এক গোল শোধ করেন হুগো দুরো। ৬৬তম মিনিটে আবারও পাঁচ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। লোপেসের কাছ থেকে বল পেয়ে আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন লেভানদোভস্কি। ৭৫তম মিনিটে আত্মঘাতী গোল হজম করে ৭-১ গোলের ভাপে পিষ্ট হয় ভ্যালেন্সিয়া।

এই জয়ের ফলে ২১ ম্যাচে ১৩ জয় ও তিন ড্রয়ে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ফিরেছে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে চূড়ায় রিয়াল মাদ্রিদ,। আর ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অ্যাতলেটিকো।

চার ম্যাচ পর জয়ে ফিরে বার্সার কোচ হ্যান্সি ফ্লিক বলেন, “আমি জয়ের জন্য এই ক্ষুধা থাকাটা আমার পছন্দের এবং যেভাবে সেটা প্রকাশ করেছে (ফুটবলাররা) সেটাও। ম্যাচটা ২-০ বা ৩-০তে শেষ হয়ে যায়নি। আমরা খুব দারুণভাবে ম্যাচটা শুরু করেছিলাম। ঘরের মাঠে পরের ম্যাচটাতেও আমাদের এভাবেই এগিয়ে যেতে হবে।”

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 

পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুনিচু ঢালু পথ পাড়ি দিয়ে আলোক শোভাযাত্রা করে করলেন হাজারো খৃষ্ট ভক্ত। মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’ তে ছিলো এ বছরের আয়োজন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার জীবন্ত ক্রুশের পথ ও পবিত্র মহাখ্রিষ্টযাগের মধ্যে দিয়ে। 

এ উৎসবে শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র‌্যান্ডেল। 

এসময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজক কমিটি জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রধান পৌরহিত্যকারী ন্যুনসিওকে বরণ, তীর্থের জুবিলী উদজাপন, পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খিষ্টযাগ, জপমালার প্রার্থন, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও নিশি জাগরণের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের তীর্থোৎসব। 

১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গোমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব। এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।

রংপুর থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন আরেং বলেন, “সবাই যখন মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করতে করতে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা পথ অতিক্রম করছিলেন, তখন পাহাড় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তীর্থে আমরা মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।”

চট্টগ্রাম থেকে আসা রীতা নকরেক বলেন, “পুত্রবধূর সন্তান হচ্ছিল না। গতবার মানত করার পর এবার নাতী পেয়েছি। তাই এবার নাতীকে নিয়ে আবার এসেছি।”

গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী ঝর্ণা আরেং বলেন, “মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।”

শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই তীর্থযাত্রাকে নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত রাখতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেখেছি। পাঁচ শতাধিক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। যে কোন ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।”

শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে সহযোগীতা করে আসছে। এবারের তীর্থযাত্রায় সারাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উৎসব পালন করেছে।”

ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি বলেন, “এ উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ তীর্থে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। তাঁরা দুই দিনব্যাপী তীর্থে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। মা ফাতেমা রানীর কাছে দেশ ও মানবজাতির কল্যাণে প্রার্থনা শেষে যার যার বাড়ি ফিরে যাবেন।”

ঢাকা/তারিকুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
  • সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন
  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক