দশ‌ বিষয়ে একমত হ‌য়ে‌ছে বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এসব বিষয়ের ম‌ধ্যে উল্লেখ‌যোগ‌্য হ‌লো—ন্যূনতম সংস্কার শেষে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন এবং ইসলামী শরিয়াহবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া ও ইসলামবিরোধী কোনো কথা না বলা।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে চরমোনাইর পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুর ইসলাম আলমগীর এ তথ্য জানিয়েছেন। 

রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কার্যালয়ে ওই বৈঠকে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। ইসলামী আন্দোলনের আমিরের সঙ্গে ছিলেন মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমাদ, সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম ও সহকারী মহাসচিব ইমতিয়াজ আলম।

এর আগে গত ২১ জানুয়ারি বরিশালে চরমোনাই পীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.

শফিকুর রহমান।

বৈঠ‌কের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেছেন, “আজকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মাওলানা সৈয়দ রেজাউল করীম সাহেবের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। এ আলোচনায় আমরা মোটামুটি ১০টি বিষয়ে একমত হয়েছি।”

যে ১০ বিষয়ে একমত হয়েছে বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন
১. আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত স্বাধীন সার্বভৌম টেকসই রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা।
২. দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের দ্রুত বিচার।
৩. ভোটাধিকারসহ সব ধরনের মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐকমত্য গড়া।
৪. ন্যূনতম সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ।
৫. দ্র্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে ও সব অধিকারবঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিকীকরণ।
৬. আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা।
৭. ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে আঘাত করে কথা না বলা।
৮. আগামীতে আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিবাদী শক্তি যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকা।
৯. ইসলামী শরিয়াহবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া এবং ইসলামবিরোধী কোনো কথা কেউ না বলা।
১০. প্রশাসনে বিদ্যমান ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করা।

বিএন‌পির স‌ঙ্গে বৈঠ‌কের বিষ‌য়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, “দেশ, মানবতা এবং রাজনীতির ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব আপনাদের (গণমাধ্যমে) সামনে উপস্থাপন করেছেন। এগুলো নিয়ে আমাদেরও একই কথা।”

নির্বাচনের সূচির বিষয়ে তিনি বলেন, “এটা আমরা আগের থেকেই বলেছি যে, দ্রুত সময়ে; আমরা যে শব্দটা ব্যবহার করেছি যে, খুব বেশি সময় না নিয়ে যৌক্তিক…। সেই যৌক্তিক সময়টা আমরা বলেছি—এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে। এরকম একটা কথা আমরা বলেছি। ছয় মাস তো প্রায় চলেই গেল। আর এক বছরের মধ্যেই সুন্দর একটা জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে সরকার, এটাই মূলত আমাদের কথা।”

ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, “আমাদের দুই দলের মধ্যে আলোচনা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে।”

রাইজিংবিডি/নঈমুদ্দীন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ও ইসল ম ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ ১১ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন ও এবি পার্টির ঐকমত্য

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনপদ্ধতি চালুসহ ১১টি বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে এবি পার্টি। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে দল দুটি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এবি পার্টির মধ্যে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। আজ বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার পরিবেশ তৈরি হবে। সম্প্রতি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা ধর্মবিরোধী, ইসলামবিরোধী ও দেশবিরোধী। কমিশনের প্রস্তাবগুলো বাতিল করতে হবে। এ বিষয়ে এবি পার্টিও একমত।

বৈঠক সম্পর্কে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, তাঁরা এই বৈঠকের মাধ্যমে দেশবাসীকে বার্তা দিতে চান, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন। বাংলাদেশকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বানানো পর্যন্ত এই ঐক্য টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

দুই দলের বৈঠকে আরও যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও সাম্রাজ্যবাদমুক্ত স্বাধীন–সার্বভৌম টেকসই কল্যাণকর বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা; দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা; ভোটাধিকারসহ সব নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা; দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করে নিয়ে আসা; আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে দেশ পুনর্গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা; আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে আঘাত করে কথা না বলা এবং প্রশাসনে এখনো বিদ্যমান আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করা; আগামীতে যাতে আওয়ামী লীগের মতো আর কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা; দেশের স্থায়ী শান্তি ও মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সংবিধানে বিদ্যমান শরিয়াহবিরোধী আইন বাতিল এবং ইসলামসহ সব ধর্মের প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য পরিহার করা, কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে কোনো কথা বা বক্তব্য না দেওয়া।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতেয়াজ আলম, মাওলানা সৈয়দ এসহাক মু. আবুল খায়ের ও মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম।

অপর দিকে এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম ও বি এস নাজমুল হক, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ ভূইয়া, আবদুল্লাহ আল মামুন, আনোয়ার সাদাত, এ বি এম খালিদ হাসান, শ্যাডো অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি আব্বাস ইসলাম খান, সংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) গাজী নাসির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আশু বাস্তবায়নযোগ্য’ সব সুপারিশে একমত নয় ইসি
  • তিন বিষয়ে একমত এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলন
  • সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ ১১ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন ও এবি পার্টির ঐকমত্য
  • চলছে বৈঠকের রাজনীতি
  • বৈঠকে আওয়ামী লীগের বিচার ও মৌলিক সংস্কার প্রশ্নে একমত এনসিপি ও গণসংহতি আন্দোলন
  • কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নিকে অভিনন্দন জানালেন ট্রাম্প
  • জাতীয় স্বার্থে আমরা কি একমত হতে পারি না
  • গণভোটে সংস্কার চায় নুরের গণঅধিকার
  • সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর বয়স ন্যূনতম ২৩ করার প্রস্তাব গণ অধিকার পরিষদের