চিনির দাম বেশি চাওয়ার প্রতিবাদ করায় মারধর, পাল্টা হামলা
Published: 27th, January 2025 GMT
রাজশাহী সুগার মিলে চিনির দাম বেশি চাওয়ার প্রতিবাদ করায় দুই কর্মচারী রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে সুগার মিলের প্রশাসনিক ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন ‘এলাকার কিছু ছেলে’। এ সময় মারফুল ইসলাম দুলাল নামে এক ওজনদারকে পিটিয়ে আহত করেন তারা।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে ঘটনাটি ঘটে।
আহত রফিকুল ও মারফুল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি।
আরো পড়ুন:
মৌলভীবাজারে ‘ভারতীয়দের কোপে’ বাংলাদেশির মৃত্যু
গোপালগঞ্জে সমন্বয়কদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা
আহত রফিকুলের অভিযোগ, রেশন বিতরণের দায়িত্বে থাকা করনিক শাহীনুর রহমান এবং ওজনদার মারফুল ইসলাম দুলাল তাকে মারধর করেছেন।
রফিকুল জানান, এক বস্তা (৫০ কেজি) চিনির দাম ৬ হাজার ২০০ টাকা। তিনি চিনি নিতে গেলে সাড়ে ৬ হাজার টাকা চাওয়া হয়। তিনি প্রতিবাদ করলে শাহীনুর ও মারফুল বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। একপর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়। এতে তার চোখের নিচে জখম হয়। রফিকুল চিনিকল থেকে বের হয়ে বাসায় চলে যান। এ সময় তাকে রক্তাক্ত দেখে এলাকার ছেলেরা চিনিকলে হামলা চালায়।
রফিকুল দাবি করেন, তিনি নিজে হামলার সময় যাননি। আহত হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তিনি রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রেশন করনিক শাহীনুর রহমান জানান, দুপুর ১২টার দিকে রফিকুল ইসলাম রেশনের এক মণ চিনি নিতে আসেন। এ সময় তার কাছে চিনির দাম ছাড়াও বস্তার দাম বাবদ আরো ২০ টাকা চাইলে তর্কবিতর্ক শুরু করেন। এর জেরে রফিকুল ফোন করে তার নিজ এলাকা শ্যামপুরের লোকজনকে ডাকেন। কিছুক্ষণ পর অন্তত ১০ থেকে ১২ জন এসে প্রশাসন ভবনে হামলা করে। এ সময় রেশন করনিক শাহীনুর ও ওজনদার মারফুলকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে শাহিনুর সেখান থেকে পালিয়ে গেলেও দুলালকে জখম করে ওই ব্যক্তিরা। এ সময় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
রাজশাহী চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ন কবীর বলেন, “হামলাকারীরা তিনতলা প্রশাসন ভবনের প্রতিটি ফ্লোরেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কক্ষ ভাঙচুর করেছে। চেয়ার, টেবিল ও টেবিলের কাঁচ ভাঙচুর করেছে। সাতটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার ভেঙে ফেলা হয়েছে। চিনি বিক্রির কিছু টাকাও লুট হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা দ্রুতই থানায় একটা অভিযোগ দায়ের করব।”
তিনি আরো বলেন, “কেন এমন ঘটনা ঘটেছে সেটা এখনই বলতে পারছি না। পুলিশ এসেছে, তদন্ত করছে।”
রাজশাহীর কাটাখালী থানার ওসি আবদুল মতিন বলেন, “আমরা এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। হামলার খবর শুনেই আমরা এসেছি। প্রাথমিক তদন্ত চলছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম র কর ছ এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা