সাত বছর আগে ‘নিম্নমানের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন’ (ইভিএম) ক্রয় করে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে দুদক। পাশাপাশি অর্থ অপচয়ের অভিযোগ ওঠার পর অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের মতো বিশেষজ্ঞরা কেন আগে এ মেশিনগুলোকে ভোটের জন্য যথাযথ মনে করেছিলেন, সেটি খতিয়ে দেখার কথা বলছে সংস্থাটি। 

আজ সোমবার কমিশনের এ সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো.

আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, ‘নিম্নমানের ইভিএম মেশিন ক্রয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। অভিযান সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, কেনা ইভিএম মেশিনগুলো নির্বাচন কমিশন প্রধান কার্যালয়, ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় ও বিএমটিএফে সংরক্ষিত আছে। অভিযানে এক হাজার ৫৯৯টি মেশিন কোথায় রয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য উপস্থাপন করতে পারেননি ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।’

অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম মেশিনগুলো অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। ইসির প্রধান কার্যালয়ে সংরক্ষিত ৬১৮ মেশিনের মধ্যে দৈবচয়নের মাধ্যমে কয়েকটি মেশিনের অপারেশনাল ক্যাপাসিটি যাচাই করা হয়। যাচাইকালে মেশিনগুলোর যান্ত্রিক ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়, যা নিম্নমানের মেশিন ক্রয়ের ইঙ্গিত বহন করে। দুদক টিমের সঙ্গে উপস্থিত বিশেষজ্ঞরাও ইভিএম মেশিনগুলো মানসম্মত নয় মর্মে মতামত জ্ঞাপন করেন। 

২০১৮ সালে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ইভিএম প্রকল্প চালু করে নির্বাচন কমিশন। প্রতিটি মেশিন কিনতে খরচ হয় ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। জীবনকাল কমপক্ষে ১০ বছর ধরা হলেও নষ্ট হয়ে যায় তার আগেই। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ইভিএম মেশিন ব্যবহার না করার ঘোষণা দিয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলরের মৃত্যু

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার বলছে, পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। তবে পুলিশ বলছে, তারা অন্য কাজে এলাকায় গিয়েছিল, ওই কাউন্সিলরকে ধরতে যায়নি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নগরের দাসপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ওই কাউন্সিলরের নাম কামাল হোসেন (৫৫)। তিনি নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং দাসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। একসময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে দলে তাঁর কোনো পদ–পদবি ছিল না।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কামাল হোসেনের নামে চারটি মামলা হয়। তিনি এলাকায় থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন। পরিবারের ধারণা, মামলা থাকায় পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে কিংবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

কামালের ছেলে সোহান শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে আমাদের এলাকায় পুলিশ এসেছিল। পুলিশ দেখে আমার বাবা তবজুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে যান। তখন সিঁড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।’

নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। তিনি আত্মগোপনে থাকতেন। শুনেছি রাতে তিনি মারা গেছেন।’

ওসি বলেন, রাতে দাসপুকুর এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। তবে কামালকে ধরতে যায়নি। পুলিশ গিয়েছিল অন্য কাজে। কিন্তু পুলিশ দেখে পালাচ্ছিলেন কামাল হোসেন। তখন হৃদ্‌রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছেই আছে। তারা দাফনের ব্যবস্থা করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ