নব্বই দশকের লাস্যময়ী ও সাহসী অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নি। অক্ষয় কুমার, আমির খান, সালমান খান, গোবিন্দ, সঞ্জয় দত্তের মতো তারকা শিল্পীদের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় ঝড় তুলেছেন। কয়েক দিন আগে আলো ঝলমলে দুনিয়াকে বিদায় জানিয়ে সন্ন্যাসিনী হয়েছেন এই অভিনেত্রী।

গত বছরের শেষ লগ্ন থেকে আলোচনায় মমতা। সন্ন্যাসিনী হয়ে আলোচনার আগুনে ঘি ঢেলেছেন তিনি। মজার বিষয় হলো, প্রায় দুই যুগ আগে খাবার নিয়ে ঝগড়া করে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন তিনি। তা-ও তৎকালীন নবাগত অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেলের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া হয়েছিল এই অভিনেত্রীর। ঠিক কী হয়েছিল মমতা-আমিশার?

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইসের তথ্য অনুসারে, মরিশাসে এক বন্ধুর পার্টিতে হাজির হয়েছিলেন মমতা কুলকার্নি এবং আমিশা প্যাটেল। সবকিছু ভালোই চলছিল। কিন্তু যখন খাবার পরিবেশন করা হয়েছিল, তখন খাবারের মান নিয়ে মমতা কুলকার্নি ওয়েটার এবং বাবুর্চিদের তিরস্কার করেছিলেন। ওয়েটারদের হেনস্তা করতে দেখে আমিশা প্যাটেল অভিনেত্রী মমতার শিষ্টাচারের অভাব বলে মন্তব্য করেছিলেন। এ খবর জানতে পেরে নবাগত আমিশা প্যাটেলকে বাক্যবাণে জর্জরিত করেছিলেন।

আমিশা প্যাটেলকে মমতা কুলকার্নি বলেছিলেন, “চুলের তেলের বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ের জন্য তুমি মরিশাসে আছো, তাই না? তোমার অবগতির জন্য বলছি, তোমাকে এক লাখ রুপি পারিশ্রমিক দেওয়া হলেও, আমি পাচ্ছি ১৫ লাখ রুপি। তাহলে তুমিই বলো, কে বড় তারকা, তুমি নাকি আমি?”

এ ঘটনার অনেক বছর পর মাসালা ডটকমকে সাক্ষাৎকার দেন আমিশা প্যাটেল। এই আলাপচারিতায় মমতার সঙ্গে ঘটা সেই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। প্রথমে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অস্বীকার করেন। পরে এ অভিনেত্রী বলেছিলেন— “আমরা সবাই মিস্টার বাজাজের (বাজাজ সেবাশ্রম খ্যাত) আয়োজিত একটি ডিনার পার্টিতে ছিলাম। মমতা খাবার নিয়ে সকলকে অভিযোগ এবং হয়রানি করছিলেন। মমতা ও তার ব্যক্তিগত সহকারী লোকজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন।”

বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে আমিশা প্যাটেল বলেছিলেন, “মরিশাসে অবস্থান করলেও আয়োজকরা ভারতীয় রাঁধুনিদের দিয়ে ভালো খাবার রান্নার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। তাই আমার মনে হয়েছিল, এটা নিয়ে অভিযোগ করা উচিত নয়। আমার কথায় মমতা রেগে গিয়েছিলেন। কারণ সে নিজেকে বড় তারকা ভেবেছিলেন। এরপর মমতা নিজেকে বড় তারকা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিলেন। সে আমাকে বলেছিলেন— ‘তুমি নিজেকে কি মনে করো?”

“তুমি যদি একটু শিক্ষিত হতে, তবে তা তোমার কাজে আসতো।” আমিশা প্যাটেলের এ কথা শুনে তার দিকে তেড়ে আসেন মমতার ব্যক্তিগত সহকারী। শুধু তাই নয়, আমিশাকে মারধরের হুমকিও দেন। এরপরই আমিশার মা মমতার ব্যক্তিগত সহকারীর হাত ধরে চিৎকার করে বলেছিলেন, “আমার মেয়েকে স্পর্শ করার সাহস কারো নেই।”

১৯৯২ সালে রাজ কুমার ও নানা পাটেকরের ‘তিরঙ্গা’ সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়জীবন শুরু করেন মমতা কুলকার্নি। নব্বইয়ের দশকে ‘করণ অর্জুন’, ‘ওয়াক্ত হামারা হ্যায়’, ‘ক্রান্তিবীর’, ‘সাবছে বড় খিলাড়ি’-এর মতো হিট সিনেমার নায়িকা তিনি।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ছ ল ন হয় ছ ল ন মমত মমত র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণসহ ৯ বিষয়ে সুপারিশের জন্য নতুন উপদেষ্টা কমিটি

বিদেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণসহ ৯ বিষয়ে সুপারিশের জন্য ১১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল রোববার ‘বাংলাদেশিদের বিদেশে নিয়োগ–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। একই প্রজ্ঞাপনে ২০২৪ সালের ৮ এপ্রিল জারি হওয়া প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়েছে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ কমিটিতে ১১ জন উপদেষ্টা রয়েছেন। তাঁরা হলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। আগের সরকারের একই কমিটি ছিল ১৩ সদস্যের।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, অর্থসচিবসহ ১৬ জন সচিব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হচ্ছেন কমিটির সহায়তাদানকারী কর্মকর্তা। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। কমিটি প্রয়োজন অনুযায়ী বৈঠক করবে এবং চাইলে নতুন সদস্য যুক্ত করতে পারবে।

কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে বিদেশে জনশক্তি নিয়োগসংক্রান্ত কাজের সমন্বয়, শ্রমবাজার সম্প্রসারণ ও নতুন শ্রমবাজার অন্বেষণের দিকনির্দেশনা, বৈদেশিক কর্মসংস্থানসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, অভিবাসী কর্মীদের সামগ্রিক কল্যাণ, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দক্ষতা উন্নয়ন, বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানো ইত্যাদি ৯ ধরনের বিষয়ে সুপারিশ তৈরি করা। ২০২৪ সালের কার্য পরিধি যা ছিল, গতকালের কার্যপরিধিও একই। দুই কার্যপরিধিতে দাঁড়ি, কমা ও সেমিকোলনের কোনো পরিবর্তন নেই।

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বিদেশে তিন লাখ কর্মীর কর্মসংস্থান কমে গেছে। কারণ, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান—এ তিন শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। বড়দের মধ্যে টিকে আছে শুধু সৌদি আরবের শ্রমবাজার।

বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, করোনা চলাকালীন ২০২১ সালে বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গেছেন ৬ লাখ ১৭ হাজার কর্মী। ২০২২ সালে গেছেন ১১ লাখের বেশি। ২০২৩ সালে গেছেন আরও বেশি অর্থাৎ ১৩ লাখ। তবে ২০২৪ সালে ৩ লাখ কমে ১০ লাখে দাঁড়ায়। এর মধ্যে ৯০ শতাংশই গেছেন ৫ দেশে। এগুলো হচ্ছে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

জানা গেছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ ২০২৪ সালের জুন থেকে। ওমানে ২০২৩ সালে গিয়েছিলেন যেখানে সোয়া লাখের বেশি, ২০২৪ সালে গিয়েছেন মোটে ৩৫৮ জন। একই অবস্থা সংযুক্ত আমিরাতেও। এ দেশে ২০২৩ সালে কর্মী গিয়েছিলেন প্রায় ১ লাখ, আর ২০২৪ সালে গেছেন অর্ধেকের কম অর্থাৎ ৪৭ হাজার। তবে সৌদি আরবে ২০২৩ সালে প্রায় ৫ লাখ কর্মী গেলেও ২০২৪ সালে গেছেন সোয়া ৬ লাখ।

সূত্রগুলো জানায়, সরকারিভাবে ১৬৮টি দেশে কর্মী পাঠানোর দাবি করা হলেও ২০২৪ সালে ১৩৫টি দেশে কর্মী গেছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ দেশে কর্মী গেছেন নামমাত্র। যেমন ১৪টি দেশে কর্মী গেছেন একজন করে। ১৪টি দেশে গেছেন দুজন করে। ১০ হাজার কর্মী গেছেন, এমন দেশ ৮টি। আর লাখের বেশি কর্মী পাঠানো দেশ শুধু সৌদি আরব।

কমিটির নাম ‘বাংলাদেশিদের বিদেশে নিয়োগসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ রাখা হলো কেন এবং ‘নিয়োগ’ শব্দটিই রাখার উদ্দেশ্য কী—এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানান, নিয়োগের বদলে এটা হওয়া উচিত ‘কর্মসংস্থানের সুযোগ’। কিন্তু মন্ত্রীদের বদলে উপদেষ্টাদের নাম বসানো ছাড়া আগের প্রজ্ঞাপন থেকে হুবহু সব নেওয়ার কারণে ঘটনাটি এমন হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ