বছরে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি
Published: 28th, January 2025 GMT
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগের মতোই বছরে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভারে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান মাহমুদ।
তিনি বলেন, এতদিন আইন অনুযায়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায় বছরে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার বা বিক্রিতে ভ্যাট দিতে হতো না। কিন্তু সম্প্রতি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এটি কমিয়ে ৩০ লাখ টাকা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অর্থাৎ ৩০ লাখ টাকার বেশি টার্নওভার হলে ভ্যাট দিতে হবে। এটি প্রত্যাহার করে আগের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার ভ্যাটমুক্ত রাখতে হবে। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শপিংমলে অবস্থিত দোকানগুলোকে এই নিয়মের মধ্যে রাখতে হবে।
এনবিআর নতুন করে বিভিন্ন পণ্যের ওপর যে বাড়তি ভ্যাট আরোপ করেছে, তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, উৎপাদন বা আমদানি পর্যায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে ভ্যাট আদায় করতে হবে। এতে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা ভ্যাটের হয়রানি থেকে মুক্ত থাকবেন।
বাংলাদেশ দোকান সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান টিপু বলেন, ছোট ব্যবসায়ীরা বছরের ১০ মাসে যে পরিমাণ বেচাকেনা করেন, তার চেয়ে পাঁচ-ছয় গুণ বেচাকেনা করেন রোজার মাসে। কিন্তু ভ্যাট কর্মকর্তারা এই মাসকে ভ্যাট আদায়ের মাস হিসেবে বেছে নেন। তারা রোজার বেচাকেনাকে ভিত্তি ধরে পুরো বছরের ব্যবসার হিসাব করেন। এতে কয়েক গুণ বেশি ভ্যাট গুনতে হয় ব্যবসায়ীদের।
এ প্রসঙ্গে সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান মাহমুদ বলেন, ভ্যাট আদায়ের সময় কিছু কর্মকর্তা টেবিলের নিচ দিয়ে টাকা নেন। দেখা যায়, কর্মকর্তা একটি দোকান থেকে ৫০০ টাকা ভ্যাট আদায় করে তা সরকারি কোষাগারে দিলেন, কিন্তু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিলেন এক হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে সরকার যথাযথ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান ব্যবসায়ীদের সুদ মওকুফ করে ১ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ১৫ বছরের কিস্তিতে এককালীন ঋণ পরিশোধের প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া ভোগ্যপণ্যের দাম নির্ধারণের সময় দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ৫০ ল খ ট ক ন ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাঝপথে জ্বালানি শেষ স্পিডবোটের, ২৭ যাত্রী নিয়ে ভেসে ছিল আড়াই ঘণ্টা
সন্দ্বীপ চ্যানেলে দুর্ঘটনায় পড়া একটি স্পিডবোট আড়াই ঘণ্টা সাগরে ভেসে থাকার পর কূলে পৌঁছেছে। বোটটিতে ৩ শিশু, ২ নারীসহ মোট ২৭ জন যাত্রী ছিলেন।
আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা বোটটি বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট কুমিরা উপকূলে পৌঁছায়। বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি হলো সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস।
বোটের কয়েকজন যাত্রী প্রথম আলোকে জানান, কুমিরা ঘাটের কাছাকাছি আসতেই বোটটির গতি কমে যায়। এরপর প্রবল ঢেউ ও স্রোতের মুখে বারবার পানিতে আছড়ে পড়তে থাকে। চালক তখন যাত্রীদের জানান, বোটের জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে বোটের সামনের অংশে পানি ঢুকতে দেখা যায়। আতঙ্কিত যাত্রীরা তখন চিৎকার করতে থাকেন। পরে বোটটি ভাসতে ভাসতে কূলে পৌঁছায়।
বোটে থাকা যাত্রী ফুয়াদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোটের তলা ফেটে পানি ঢুকছে আর আমরা এক কিলোমিটার দূরে উত্তাল সাগরে ভাসছি। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল বেঁচে ফিরতে পারব না, এমনকি সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার কথাও ভাবছিলাম। কিন্তু ভাগ্য ভালো, শেষ পর্যন্ত কূলে পৌঁছাতে পেরেছি।’
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সবাই নিরাপদে কূলে নামতে সক্ষম হন বলে জানান ফুয়াদ।
বিকেলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্পিডবোট ডুবে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রাণহানির আশঙ্কায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টির কারণ জানতে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।
জানতে চাইলে বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বোটের জ্বালানি শেষ হয়নি। তীব্র স্রোতের কারণে বোটটি কুমিরা ঘাট থেকে উত্তরে সরে গিয়ে তীরের কংক্রিট ব্লকে ধাক্কা খায়। এতে বোটের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু যাত্রীরা সবাই নিরাপদে কূলে পৌঁছাতে সক্ষম হন।’
বৈরী আবহাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বোট চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সার্ভিস বন্ধ ছিল। তবে বিদেশগামী কয়েকজন যাত্রীর অনুরোধে এই একটি ট্রিপ চালু করতে হয়েছে।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই সময়ে বোট চলাচলের অনুমতি ছিল না। তিনি বলেন, মাঝ সাগরে জ্বালানি শেষ হওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তার দায় চালক ও মালিকের। ইতিমধ্যে স্বত্বাধিকারীদের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। চালকের লাইসেন্স স্থগিত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।