পটুয়াখালী জেলা জজ আদালত চত্বরে হাজিরা দিতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন আসামিরা। বাদীর লোকজন ইট দিয়ে পা থেতলে দিয়েছে আসামিদের। বুধবার বেলা ১২টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির প্রধান গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বাদীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ভুক্তভোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসাও নিতে পারেননি। এ ঘটনায় আদালত পাড়ায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হামলায় অংশ নেওয়া সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এদিকে এ কর্মকাণ্ডের সময় উপস্থিত লোকজন ছবি ও  ভিডিও ধারণ করলেও তা রাখতে পারিনি। হামলাকারীরা নানা ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে জোরপূর্বক হামলার ছবি ও ভিডিও ডিলেট করতে বাধ্য করেন। হামলায় আহতরা হচ্ছেন- মো.

সোহাগ মিয়া ও মো. জামাল। এদের মধ্যে সোহাগ মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত সোহাগ সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মরহুম মাহবুবুর রহমান তালুকদারের ভাতিজা এবং কলাপাড়া নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়ার ছোট ভাই।

হামলায় গুরুতর আহত সোহাগ মিয়ার বড় ভাই মো. আল-আমিন জানান, ২০১২ সালে কলাপাড়ায় ছাত্রদল নেতা মো. জিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে একটি মামলা হয়। সেই মামলার আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বুধবার পটুয়াখালী আদালতে হাজিরা দিতে গেলে মামলার বাদীসহ পটুয়াখালী বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় তারা ইট দিয়ে আঘাত করে সোহাগের হাটু থেতলে দেয় এবং বাকীদের বেধড়ক মারধর করে। 

এদিকে হামলার শিকার হয়ে ভুক্তভোগীরা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেও আহতদের সেখানে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকে মোটরসাইকেলে করে টহল দিতে দেখা যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া বলেন, ‘উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসার পর বুধবার তারা আদালতে হাজিরা দিতে যায়। এ সময় তাদের ১০ থেকে ১২ জনকে মারধর করে গুরুতর জখম করে। আহত করার পর তাদের কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে বসাকবাজার এলাকায় নিয়ে যায় এবং পরে সেখানে ছেড়ে দেয়। তারা তাদের চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেয়নি। আদালতের মত জায়গায় আজ মানুষের নিরাপত্তা নেই।’ 

এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.টি এম. মোজাম্মেল হোসেন তপন বলেন, ‘আমি তখন আদালতে ছিলাম, কি হয়েছে তা ঠিক বলতে পারছি না।’

পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াহিদ সরওয়ার কালাম সমকালকে বলেন, ‘আদালত চত্বরে এ ধরনের ঘটনা নিন্দনীয় এবং আইনজীবীদের জন্য দুঃখজনক ঘটনা। আদালত এলাকায় মানুষের নিরাপত্তা থাকা উচিত।’ 

পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ জানান, আদালত চত্বরে হামলার সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে এ বিষয় আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। শুনেছি, আহতরা কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল 

বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”

গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।

তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আইনজীবী সোমার মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • ভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
  • বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 
  • পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল অংশে নির্মাণকাজে স্থিতাবস্থা আপাতত বহাল, চলবে না কার্যক্রম
  • চারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও, উচ্চ আদালতে দুটি রিট
  • বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড