কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সয়াবিনের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা
Published: 31st, January 2025 GMT
বড় কোম্পানিগুলো কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে আবারো সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ করছেন না ডিলাররা।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর নিউ মার্কেট ও কারওয়ান বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে ঘুরে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই। ডিলারদের পাঁচ কার্টন তেল অর্ডার দিলে এক কার্টন পাওয়া যায়। ফলে, অনেক ক্রেতা তেল না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। এখন বাজারে বোতলজাত ১ ও ২ লিটার সয়াবিন তেলের সংকট বেশি।
গত ৯ ডিসেম্বর বৈঠকের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মিল মালিকদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ভোজ্যতেলের নতুন দাম অনুমোদন দেয়। সে অনুযায়ী, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ থেকে ১৭৫ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ থেকে বাড়িয়ে ১৫৭ টাকা এবং খোলা পাম অয়েলের দাম লিটার প্রতি ১৪৯ থেকে বাড়িয়ে ১৫৭ টাকা করা হয়। এছাড়া, বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮১৮ থেকে বাড়িয়ে ৮৬০ টাকা করা হয় তখন।
মাছ, ডিম, আলু, পেঁয়াজ ও সবজির দাম কমেছে
রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, সিম ২৫ টাকা, মুলা ১০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, দেশি শসা ৩০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০, প্রতিটি পিস লাউ ৪০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা এবং বড় সাইজের ফুলকপির জোড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় কমেছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি রসুন ২৪০ টাকা ও দেশি আদা ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় মাছের দাম কিছুটা কমেছে। এখন মাঝারি সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে। বড় সাইজের চাষের পাঙাসের কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কৈ ১৫০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৩০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ টাকা, দেশি পাঁচশিশালি ছোট মাছ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা।
ডিমের দামও কমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির দাম স্বাভাবিক আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি পাওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৮০০ টাকায় এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা তানভীর হাসান রাইজিংবিডি বলেছেন, “বাসায় সয়াবিন তেল শেষ হয়েছে। তাই, আজ সয়াবিন তেল কিনতে বাজারে এসেছি। কিন্তু, ১ লিটার ও ২ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল পাচ্ছি না। ৫ লিটারের একটা বোতল পেয়েছি, দাম বেশি চাচ্ছে। দোকানদার বলছেন, বাজারে সয়াবিন তেল কম, তাই পাওয়া যাচ্ছে না। এখনই যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে সামনে রমজানে কী হবে, সে চিন্তায় আছি। সরকারের উচিত, সয়াবিন তেলের দাম ও সরবরাহ ঠিক রাখা।”
রাজধানীর নিউ মার্কেটের রাইছা স্টোরের স্বত্বাধিকারী কাইয়ুম মজুমদার রাইজিংবিডিকে বলেছেন, “আমরা অর্ডার দিয়ে ঠিকমতো সয়াবিন তেল পাচ্ছি না। ডিলাররা বলছেন, কোম্পানি ঠিকমতো তেল সরবরাহ করছে না। অনেক ক্রেতা এসে সয়াবিন তেল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। সামনে রমজানকে কেন্দ্র করে আরেক দফা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা আছে।”
ঢাকা/রায়হান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০০ ট ক সরবর হ ৩০ ট ক ৫০ ট ক ৪০ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম
ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।
আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।
সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।
পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।