পুলিশ চেকপোস্টের ২০০ গজের মধ্যে যশোর উপশহর এলাকার নৈশপ্রহরীকে বেঁধে ইজিবাইকের একটি শোরুমে ডাকাতি হয়েছে। দরজার তালা কেটে ডাকাত দল প্রায় ২৫ লাখ টাকার পণ্য লুট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাতে উপশহর এলাকার গোল্ডেন বাইক শোরুমে ডাকাতি হয়।

এদিকে, ডাকাতির ঘটনায় উপশহর পুলিশ ফাঁড়ি সরকারি উপপরিদর্শক মো.

ইসারতসহ ও দুই কনস্টেবলকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড (সংযুক্ত) করা হয়েছে। এর আগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন যশোরের পুলিশ সুপার জিয়া উদ্দিন।

তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জেলা পুলিশের মুখপাত্র নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, দায়িত্ব অবহেলার কারণে নয়; বদলি পুলিশের রুটিন কাজ। উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির তিন পুলিশ সদস্যকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

শো-রুমের প্রোপ্রাইটর আবুল কাশেম জানান, রাতে নৈশপ্রহরীর ফোন পেয়ে আমি শোরুমে আসি। প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫০ পিস ব্যাটারি ও অন্যন্য মালামালসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকার জিনিসপত্র নিয়ে গেছে।

কোতয়ালি থানার ওসি (দায়িত্বপ্রাপ্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, শো-রুমের তালা কেটে মালামাল লুট হয়েছে। পুলিশের টিম কাজ করছে। দ্রুতই ডাকাতির ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হবে। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ