আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল
Published: 2nd, February 2025 GMT
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারী) দুই ধাপের প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার আজ তৃতীয় দিন। রোববার সকাল ৯ টার মধ্যেই আখেরি মোনাজাত শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ফজরের পর বয়ান করেছেন মাওলানা আব্দুর রহমান। আখেরি মোনাজাতের আগে নসিহতমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা। এরপর আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের।
রোববার ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিন ভোর থেকে ঢাকা, টঙ্গী ও গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে মোনাজাতে শরিক হতে হাজার হাজার মুসল্লিদের পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানের দিকে আসতে দেখা গেছে। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ ঢল অব্যাহত থাকবে।
ইজতেমা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়ার জন্য শত শত নারী-পুরুষ রাস্তা ও আশপাশের মিল-কারখানা ও বাসাবাড়ির ভেতর অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। নারীদের জন্য আলাদা কোনো জায়গার ব্যবস্থা না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে নিজ উদ্যোগে পর্দায় ঘেরা বিভিন্ন স্থানে বসার জায়গা করে নিচ্ছেন। বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের তাশকিল কামরার পাশে প্রতিবন্ধীদের ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ব্যবস্থায় দুই শতাধিক প্রতিবন্ধী বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন।
মিলগেট এলাকায় গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে আসা আলী হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৬টায় মোনাজাতে অংশগ্রহণের জন্য ইজতেমার মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত বাসে আসছি। তারপর পায়ে হেঁটে মিলগেট পর্যন্ত আসতে পেরেছি। ইচ্ছা আছে যেখান থেকে মোনাজাত করা হবে সেখানে গিয়ে মোনাজাত ধরব।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা মমিনুল হক বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে আসছি মোনাজাত ধরার জন্য। ভোরবেলা বাসা থেকে রওনা দিয়ে এখানে এসে বসে আছি। মোনাজাত শেষ করে বাসায় ফিরে যাব।
সকাল সাড়ে ৭টায় কামারপাড়া রোডের মাথায় কথা হয় জয়নব বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, গাজীপুরা থেকে পায়ে হেঁটে এখানে আসছি মোনাজাতের জন্য। সঙ্গে ছেলের ঘরে নাতি রয়েছে। শুনেছি- মোনাজাত তাড়াতাড়ি শুরু হয়ে যাবে। লোকজনের কারণে সামনের দিকে যেতে পারিনি। তাই এখানে বসে মোনাজাতের জন্য অপেক্ষা করছি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার ড.
শনিবার বাদ আসর ইজতেমা ময়দানের মূল বয়ানের মঞ্চে মোহরে ফাতেমি বা হজরত ফাতেমা (রা.) ও হজরত আলী (রা.)-এর বিয়ের দেনমোহর অনুসারে যৌতুকবিহীন গণবিয়ে সম্পন্ন হয়। প্রতিবারের মতো এবারও ৬৩ যুগলের যৌতুকবিহীন গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিয়ে পড়ান ভারতের মাওলানা যোহাইরুল হাসান।
৭২টি দেশ থেকে ২ হাজার ১৫০ জন এবারের ইজতেমায় বিদেশি মেহমান হিসেবে এসেছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, কুয়েত, সৌদি আরব, আফগানিস্তান, জাপান, ওমান, কানাডা, মোজাম্বিক, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কিরগিস্তান, সিঙ্গাপুর, ইতালি, জর্ডান ও যুক্তরাজ্য অন্যতম।
আজ আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হচ্ছে সুরায়ে নেজামের দুই ধাপের ইজতেমার প্রথম পর্ব। আবার ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে শুরায়ে নেজামের দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা। এর পর মাওলানা সাদ কান্দলভী অনুসারিদের ইজতেমা ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব শ ব ইজত ম ইজত ম র র ইজত ম র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা
আজ শ্রাবণের ১৬ তারিখ। প্রকৃতির নিয়মে এ মাসে বৃষ্টি বেশি ঝরে। আজও ঢাকার আকাশ মেঘলা। বুধবার রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও ঝুম বৃষ্টি কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি। তবে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রয়েছে ভূমিধসের ঝুঁকি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে।
আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অতিভারী বৃষ্টির কারণে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কিছু এলাকায় সাময়িক জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ বাস, রিকশা ও সাধারণ চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নদী ও সমুদ্রবন্দর এলাকায় অবস্থানরত নৌযানগুলোকে সাবধানতার সঙ্গে চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সারা দেশে আজ দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
শুক্রবার ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
শনিবারও সারা দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে অধিকাংশ এলাকায় এবং অন্যান্য বিভাগে অনেক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
রবিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগে অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে অতি ভারী বৃষ্টিপাত।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বর্ধিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজার ৬৮ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা/ইভা