এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের ইজারা বাতিলের দাবি
Published: 3rd, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের ইজারা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা। সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্টেডিয়ামটি চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস)। এই স্টেডিয়াম স্থানীয়দের খেলাধুলার স্বার্থে চট্টগ্রামের বিত্তবান লোকজন নির্মাণ করেছিলেন। গত ২ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক ফুটবল স্টেডিয়াম হিসেবে তৈরির জন্য ১২ শর্তে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাছে লিজ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক ক্রিকেটার শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এমএ আজিজ স্টেডিয়ামটি প্রথমে ১০ বছরের জন্য এবং পরবর্তী সময়ে ২৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) বরাদ্দ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এই সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছেন স্থানীয় ক্রীড়ামোদীরা। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ও ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ একটা সংশোধনী চিঠি পাঠিয়েছে। তাতে স্থানীয় খেলাধুলার জন্য বাফুফের অনুমতি নিতে বলা হয়েছে। এটা কোনোভাবে কাম্য নয়।
এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বাফুফের নয়, চট্টগ্রামবাসীর স্টেডিয়াম উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বাফুফেকে ইজারা দেওয়ার ফলে স্থানীয় ফুটবলও এখানে হতে পারবে না। কারণ এখানে তিনটা লিগ হয়। আন্তর্জাতিক মানের যখন স্টেডিয়াম করা হবে, তখন চাইলেই এই মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে না। তাই এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
স্টেডিয়াম ফুটবলের জন্য বরাদ্দ দিয়ে অন্য খেলাধুলো ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে দাবি করে তারা বলেন, এই মাঠকে কেন্দ্র করে ৩০টির বেশি খেলাধুলা হয়। এ ছাড়া সকাল থেকে মাঠ এবং সামনের প্রশিক্ষণ মাঠে কিশোর-তরুণেরা অনুশীলন করে থাকে। চট্টগ্রামের সব খেলাধুলা এই মাঠ ঘিরেই চলে। এই মাঠ শুধু ফুটবলের জন্য বরাদ্দ দিয়ে অন্য খেলাগুলোর ক্ষতি করা হয়েছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নতুন চিঠি ক্রীড়া সংগঠকদের মনে মারাত্মক আঘাত করেছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ‘তারা বলেছে বাফুফের সঙ্গে সমন্বয় করে খেলার আয়োজন করার জন্য। আমাদের মাঠ আমাদের থাকবে। আমরা কেন মাঠ ব্যবহারে তাদের জিজ্ঞেস করব? তারা কিছু আয়োজন করলে আমাদের সঙ্গে কথা বলবে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে ৮৫টি ক্লাব আছে। ক্লাব প্রতিনিধিরাই কমিটিতে থাকবে। তাদের সিদ্ধান্ত বাফুফে এবং বিসিবিকে মানতে হবে। কিন্তু তারা যে সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে সেটাতো আমরা মানতে পারব না।’ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে চট্টগ্রামে আগামীতে কোনো খেলাধুলায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব অংশ নেবে না জানিয়ে ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ফ্রেন্ডস ক্লাবের প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল বশর, সিজেকেএসের সাবেক সহ সভাপতি হাফিজুর রহমান, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল, ক্রীড়া সংগঠক আমিনুল ইসলাম, শাহজাদা আলম, শাহাবুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও নিয়াজ মোহাম্মদ খান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল এ আজ জ স ট ড য় ম র জন য ব র র জন য এই ম ঠ ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।
২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক