সুন্দরবনের নতুন হুমকি বনদস্যু নাকি মহাজন
Published: 5th, February 2025 GMT
সুন্দরবনে অল্প কিছু মানুষের লোভ-লালসা আর অপকর্মের শিকার হচ্ছে বননির্ভরশীল মানুষ ও গোটা বনের জীববৈচিত্র্য। সুন্দরবনের ওপর অত্যাচারের নতুন মাত্রা হিসেবে যোগ হয়েছে বিষ ছিটিয়ে মাছ ধরা।
গত বছরের জুলাই মাসের এক সন্ধ্যায় খুলনার কয়রা উপজেলায় পৌঁছে অটোরিকশায় চড়ে ফিরছিলাম ডাকবাংলোয়। সুন্দরবনে বিষ ছিটিয়ে মাছ ধরার আলাপ উঠতেই অটোরিকশাচালক বললেন, ‘পীর সাহেবদের অনুমতি নিয়ে মুফতি-আউলিয়ারা পানি পড়া দিয়ে মুরিদদের স্বর্গে পাঠায়।’ কৌতূহলী হয়ে জানতে পারলাম, পীর সাহেব মানে বন বিভাগ, মুফতি-আউলিয়া মানে স্থানীয় প্রভাবশালীরা, মুরিদ মানে সাধারণ জেলে, আর পানি পড়া মানে বিষ, যা দিয়ে স্বর্গ, অর্থাৎ সুন্দরবনে মাছ ধরতে যান এই জেলেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রভাবশালীদের মধ্যে বড় মাছ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় রাজনীতিবিদ যেমন রয়েছেন, তেমনি আছে প্রশাসন ও সংবাদকর্মীদের মতো নানা চক্র। কিন্তু সাধারণ জেলেরা প্রায়ই বিষ দিতে গিয়ে ধরা পড়লেও মদদদাতা চক্রের নাম প্রকাশ করতে চায় না। কারণ, সে চক্রই তাদের আবারও মুক্ত করে নিয়ে আসে।
কয়রায় বন বিভাগের কাশিয়াবাদ স্টেশনে পৌঁছাতে রাত প্রায় সাড়ে ১২টা বেজে যায়। বিষ দেওয়ার ঘটনা স্বচক্ষে দেখতে ঘুটঘুটে অন্ধকারে সেখানকার স্টেশনমাস্টারের সঙ্গে একটা নৌকায় চড়ে সুন্দরবনের শাকবাড়িয়া নদীতে চুপিসারে আমরা এগোতে থাকলাম। তখন বনে নিষেধাজ্ঞার সময়। নদীর তীরে কিছু লোককে জাল ফেলতে দেখলাম।
জানলাম, বনের সেই স্থানে নিষেধাজ্ঞা নেই। এর বাইরে আর কিছু দেখলাম না। বুঝলাম, টহল দেওয়ার খবর পেলে বিষ দেওয়া চক্র আগেই পালিয়ে যায়। তাই টহল দেওয়া এলাকায় বিষের উৎপাত কম।
পরদিন কয়রার কাটকাটা থেকে নৌকায় সাতক্ষীরার গাবুরার দিকে রওনা হলাম। মাঝে বন বিভাগের বজবজা ফাঁড়িতে যাত্রাবিরতি দিয়ে এরপর কবোদাক স্টেশন। এই দুই স্থান ও গাবুরায় পৌঁছে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আগে তাঁরা নিষেধাজ্ঞার সময় বনে না গিয়েও আশপাশের নদী থেকে মাছ ধরতে পারতেন। কিন্তু বিষ ছিটিয়ে মাছ ধরা শুরু হওয়ার কারণে খালের ছোট-বড় মাছ ও রেণু-পোনাই শুধু নয়, সাপ-ব্যাঙ, পোকামাকড়—সবই মারা যায়। ফলে নদীতে আর মাছ আসে না। তাই নিষেধাজ্ঞার সময় তাঁদের কোনো আয়রোজগার থাকে না।
এ ছাড়া অবৈধ ঘন জাল দিয়ে মাছ ধরার কারণে পোনা বড় হওয়ার সময় পায় না। বন বিভাগের কর্মীদের চার-পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ দিলেই এসব অবৈধ ঘন জাল নিয়ে সুন্দরবনে ঢোকার অনুমতি মেলে।
মাছ ধরা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই মহাজনেরা জেলেদের হাতে বিষ তুলে দেন বলে জানান। একজন মহাজন তো প্রস্তাব দিয়েই বসেছেন বনের এলাকা মহাজনদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার। তাহলে অনিশ্চয়তা থাকবে না, বিষ ছিটিয়ে মাছও ধরতে হবে না। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের জীবিকা নষ্ট হোক, বিষে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস হোক, বিষযুক্ত মাছ খেয়ে মানুষের প্রাণ যাক, কিন্তু মহাজনদের মুনাফা ঠিক থাকা চাই!কয়েকটা ফাঁড়িতে বন বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে আলাপে জানা গেল, তাঁদের অবস্থাও ভালো নয়। রেশন নেই, বেতনের পরিমাণও কম। আবার অপরাধীকে ধরলেও জামিন পেয়ে যান সহজেই। বনের মধ্যে একটা ফাঁড়িতে তাঁরা তিন-চারজন কর্মী। নেই ভালো প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও। এমন অবস্থায় স্থানীয় অপরাধীরা অতর্কিত হামলা করে কি না, এ নিয়ে তাঁরা শঙ্কায় থাকেন। তাই অপরাধী ধরতে তাঁদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করে।
এ ছাড়া বিষ দিয়ে একবার মাছ ধরেই যাঁরা ৩০–৫০ হাজার টাকা রোজগার করেন, তাঁদের রাজনৈতিক সুবিধা পেতেও সমস্যা হয় না। বন বিভাগের কর্মীরা গত্যন্তর না পেয়ে কম টাকা ঘুষ পেলেই অনুমতি দিয়ে দেন বলে জানান।
তবে এর ফলে সাধারণ মানুষের মনে ধারণা জন্মায় যে বন বিভাগের কর্মীরাই অপরাধীদের ছেড়ে দেন। তাই তাঁরা আর অপরাধীদের ধরিয়ে দেওয়ার ঝুঁকি নিতে চান না; বরং একজন ঘুষের বিনিময়ে ঘন জালে মাছ শিকার করলে অন্যরাও নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে একই কাজ করেন।
বন বিভাগের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের আস্থার সম্পর্ক না থাকলে বন রক্ষা করা কঠিন। স্থানীয় মানুষ যেহেতু সরকার বা রাষ্ট্র বলতে বন বিভাগকেই বোঝে, তাই রাষ্ট্র-নাগরিক সম্পর্কে একটা অনাস্থার দুষ্টচক্র তৈরি হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, আগে শুধু বনদস্যুদের টাকা দিলেই হতো। নির্দিষ্ট খাতায় নাম লিখিয়ে তারা দু-তিন মাসের জন্য বনে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দিত। কিন্তু এখন অনেক ‘দস্যু’ (বন বিভাগ, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড)। আবার ডাঙায় গেলে থানা-পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ এবং ট্রাফিক পুলিশকেও ঘুষ দিতে হয়। যেহেতু রেণুপোনা পরিবহন নিষিদ্ধ, তাই এই ঘুষ। এটা একটা ভয়ানক পরিস্থিতি, যেখানে নাগরিকেরা রাষ্ট্রের চেয়ে বনদস্যুদের ওপর বেশি আস্থা রাখছেন। রাষ্ট্রব্যবস্থার গলদের কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
আগে বনদস্যুরাই মহাজনদের নিয়ন্ত্রণ করত। ২০১৮ সালে সুন্দরবন বনদস্যুমুক্ত হয়। আর ৫ আগস্টের পর এখন মহাজনেরাই বনদস্যুদের নিয়ন্ত্রণ করেন। মহাজনেরা দ্রুত মুনাফার জন্য বিষ ছিটিয়ে মাছ ধরতে জেলেদের প্ররোচিত করেন।
প্রথম আলোর ২৩ জানুয়ারি প্রকাশিত অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, বনরক্ষীদের সঙ্গে যোগসাজশে বনের অভয়ারণ্যের নিয়ন্ত্রণ নেন মহাজনেরা। তাঁদের দেওয়া টিকিট ছাড়া কোনো জেলে সেখানে যেতে পারেন না। গেলে বনরক্ষী ও বনদস্যু উভয়ই সাধারণ জেলেদের আটক করে। অর্থাৎ মানুষের অধিকার হরণে রাষ্ট্র ও বনদস্যু এককাট্টা হয়েছে।
বিষ দিয়ে ধরা মাছ স্থানীয় মানুষেরা খায় না। আড়ত থেকে এগুলো চলে আসে রাজধানী ঢাকাসহ অন্য বড় শহরে। ঢাকায় দেখা যায় বড় বড় রেস্তোরাঁ, নামীদামি সুপারশপের পাশাপাশি অনলাইনে সুন্দরবনের মাছ বলে ব্র্যান্ডিং ও বিক্রি হয়।
মাছ ধরা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই মহাজনেরা জেলেদের হাতে বিষ তুলে দেন বলে জানান। একজন মহাজন তো প্রস্তাব দিয়েই বসেছেন বনের এলাকা মহাজনদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার। তাহলে অনিশ্চয়তা থাকবে না, বিষ ছিটিয়ে মাছও ধরতে হবে না। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের জীবিকা নষ্ট হোক, বিষে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস হোক, বিষযুক্ত মাছ খেয়ে মানুষের প্রাণ যাক, কিন্তু মহাজনদের মুনাফা ঠিক থাকা চাই!
সুন্দরবনের অসীম প্রাণশক্তি সম্পর্কে অমিতাভ ঘোষ ‘হাংরি টাইড’ উপন্যাসে যা লিখেছেন, তা বাংলা করলে দাঁড়ায় এমন, ‘কিন্তু এখানে, এই ভাটির দেশে রূপান্তরই জীবনের নিয়ম: নদীরা অবিরাম ছুটে চলছে, দ্বীপ জেগে উঠছে, আবার কদিনেই ডুবে যাচ্ছে। অন্যখানে বন পুনরুজ্জীবিত হতে শত শত বছর লাগে, এমনকি লাখ বছরও; কিন্তু বাদাবন ১০-১৫ বছরেই হারিয়ে যাওয়া দ্বীপ পুনরায় দখলে নিতে পারে। এমন কি হতে পারে যে পৃথিবীর ছন্দই এখানে দ্রুতলয়ে ঘটছে, যেন তারা [দ্বীপ] ত্বরিত গতিতে জেগে উঠতে পারে?’
প্রশ্ন হলো, প্রাকৃতিক নিয়মে হওয়া ক্ষত সুন্দরবন নাহয় নিজের প্রাণশক্তির জোরে পুষিয়ে নিল। কিন্তু মুনাফার লোভে চলা বিষের অত্যাচারও তাকে কেন পুষিয়ে নিতে হবে? রাষ্ট্রের কি কোনো দায় নেই?
● খলিলউল্লাহ্ প্রথম আলোর জলবায়ু প্রকল্প ব্যবস্থাপক
[email protected]
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র ক স ন দরবন র র সময় অপর ধ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বাঘ বাঁচলে সুন্দরবন বাঁচবে
আজ ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস। এ বছর বাংলাদেশে এই দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি, সুন্দরবনের সমৃদ্ধি’। বাঘ বাংলাদেশের জাতীয় পশু, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ‘টাইগার’ নামে পরিচিত, বাঘ সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের লোগো। তাই বাংলাদেশ এ দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে। বাংলাদেশে বাঘ ২০১৫–এর গণনায় ১০৬টি, ২০১৮তে ১১৪টি এবং সর্বশেষ ২০২৪–এর গণনায় ১২৫টি পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের বাঘ নানামুখী হুমকির সম্মুখীন। এরপরও বাঘের সংখ্যা যে ঊর্ধ্বমুখী, এটি আশার সঞ্চার করে। এ জন্য বন বিভাগ ও সুন্দরবনের স্থানীয় জনগণকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়।
সুন্দরবন বর্তমানে বাংলাদেশের বাঘের শেষ আশ্রয়স্থল। হরিণ বাঘের প্রধান খাদ্য। বাঘ বিজ্ঞানীরা বলেন, বাঘ শিকারের চেয়ে হরিণ শিকার বাঘের টিকে থাকার জন্য বিপজ্জনক। কারণ, পর্যাপ্ত খাবার না পেলে বাঘ দুর্বল হয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হারাবে এবং বাঘ-মানুষ সংঘাত বাড়বে।
এ মাসের ১৭ তারিখে সংবাদমাধ্যমে দেখলাম, পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের জ্ঞানপাড়া টহল ফাঁড়ির সদস্যরা একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে ১০ কেজি হরিণের মাংসসহ দুজনকে আটক করেন। ছবিতে দেখলাম বস্তার গায়ে ঢাকার প্রাপকের নাম, ফোন নম্বর ও গন্তব্যস্থলের নাম লেখা আছে। বন বিভাগের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও সুন্দরবনের হরিণ শিকার বন্ধ হবে না, যত দিন এর চাহিদা থাকবে অন্যত্র। অথচ সবাই মিলে বন বিভাগকেই দায়ী করবে, ভোক্তাকে নয়।
দেশে বর্তমানে অনেক হরিণের খামার হয়েছে। খামার করলে বনের হরিণের ওপর চাপ কমবে এটিই ছিল হরিণ লালন–পালনের পক্ষে মুখ্য যুক্তি। কোন বৈজ্ঞানিক যুক্তিতে দেশে আজও হরিণের খামার আছে এবং বাড়ছে জানি না। সেদিন এক বন্ধু বললেন, কিছু শৌখিন মানুষ চেয়েছেন, তাই এটি হয়েছে। তবে সুন্দরবন থেকে এনে জীবন্ত হরিণ কেউ খামারে রাখবেন, এ দুঃসাহস কারও হবে না। বন্ধুকে বলতে পারিনি যে ২০১২ সারে সুন্দরবনের তিনটি বাঘের বাচ্চা তো ঢাকায় পাচার হয়েছিল। বন বিভাগের ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিটের বন্ধুরা অন্যান্য বিপন্ন প্রজাতির ভাগ্যে কী ঘটছে নিশ্চয়ই ভালো বলতে পারবেন। আমাদের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। ভারতে বন্য প্রাণীর খামার নিষিদ্ধ।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সুন্দরবনের চারপাশের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ জানেন যে হরিণ শিকার এবং হরিণের মাংস ভক্ষণ আইনসম্মত নয়। এরপরও তাঁরা এ কাজটি করেন, যেহেতু হরিণের মাংস অনেক সময় অন্যান্য মাংসের চেয়ে সস্তায় পাওয়া যায়। কারণ, যিনি বিক্রি করেন, তাঁকে তো হরিণটি কিনতে হয়নি; অন্যান্য গবাদিপশু তো ক্রয় করে বিক্রয় করতে হয়। ভিয়েতনামে বন্য পশুপাখির মাংস দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করা ছিল মর্যাদার প্রতীক। ফলে ভিয়েতনাম তার শেষ বাঘটিও হারিয়েছে ২০০০ সালের দিকে।
অনেকের ধারণা, সুন্দরবনের হরিণ ব্যাপকহারে বাড়ছে এবং গুটিকয় খেলেও ওরা হারিয়ে যাবে না। তাঁদের অবগতির জন্য জানাই, উত্তর আমেরিকায় ঘুঘুর মতো দেখতে একটি কবুতর—প্যাসেঞ্জার পিজন, যার সংখ্যা ছিল ৩০০-৫০০ কোটি। এরা দল বেঁধে যখন উড়ে যেত, মনে হতো আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। আবাসস্থল নষ্ট হওয়া এবং অনিয়ন্ত্রিত শিকারের কারণে মাত্র ১০০ বছরের মধ্যে এই প্রজাতিটি পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেল।
বাঘ সুন্দরবনের জন্য একটি কিস্টোন প্রজাতি। বাঘ টিকে থাকলে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্রসহ জীববৈচিত্র্য নিজে থেকেই টিকে থাকবে, সুন্দরবন টিকে থাকবে। এলাকার জনগণ মনে করেন, ‘সুন্দরবন মায়ের মতো’—ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করে, জীবন বাঁচায়, খাদ্য জোগায়। তাঁদের মতে, বাঘ বাঁচলে সুন্দরবন বাঁচবে, সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। বন বিভাগ এবং ওয়াইল্ডটিমের সহযোগিতায় সুন্দরবনের চারপাশের গ্রামগুলোতে ৪৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী বাঘ সংরক্ষণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এই ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের সদস্যরা, বাঘবন্ধুরা এবং টাইগার স্কাউটরা আমাদের সামাজিক মূলধন।
বাঘ দিবসের প্রতিপাদ্য আমাকে আশান্বিত করে। বাঘের সংখ্যা সুন্দরবনের স্বাস্থ্য নির্দেশ করে। সুন্দরবন ভালো থাকলে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে। এটি আমাদের জাতীয় সুখ সূচকের ওপরও প্রভাব বিস্তার করবে। দেশের সামগ্রিক সুখ ও মঙ্গল পরিমাপের এ ধারণাটি এসেছে ভুটান থেকে। বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিকেও তাঁরা জাতীয় সুখ সূচকের প্রবৃদ্ধি হিসেবে দেখছেন। বাংলাদেশও সেই স্বপ্নের ‘সিল্ক রোডে’ এক পা ফেলল।
মো. আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক অধ্যাপক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়