পরিত্যক্ত ইটভাটায় হত্যাচেষ্টার সময় রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে মো. আলম শেখ (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে জনতা। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের ভীমনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় চারজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

আলম শেখের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার মাঝবাড়ী এলাকায়। গাজীপুরের টঙ্গীর চেরাগ আলী বড় দেওয়া ফকির মার্কেটে মাংসের ব্যবসা করেন তিনি। এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন– ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সবুজ রায় (২২), একই জেলার ইয়াকুবপুরের হিরা শেখ (২৮), আবু বক্কর সিদ্দিক (১৮) ও রাজবাড়ী সদরের ধুনচি এলাকার ফরহাদ মণ্ডল (৩৮)।

আলম শেখের ভাষ্য, ফরহাদের কাছে তিনি টাকা পাবেন। ওই টাকা নিতে ও বাড়িতে বেড়ানোর জন্য ফরহাদ তাঁকে রাজবাড়ী আসতে বলেন। মঙ্গলবার তিনি আসার পর জামালপুর বাজার থেকে ফরহাদের স্ত্রী তাঁকে নিয়ে ভীমনগর আসেন। পরে পরিত্যক্ত ইটভাটায় নেওয়া হয়। সেখানে আগেই অবস্থান করছিলেন ফরহাদসহ কয়েকজন। তিনি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই মিলে তাঁকে হাত-পা-মুখ বেঁধে মাটিতে ফেলে দেন। এ সময় হত্যাচেষ্টা করলে তাঁর চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসেন। তারাই চারজনকে আটক করেন।

যদিও আলমের অভিযোগ অস্বীকার করেন ফরহাদ মণ্ডল। জনতার হাতে আটক হওয়ার সময় তিনি দাবি করেন, টঙ্গীতে আলমের বাসার কাছে তাঁর বাসা ছিল। তাঁর স্ত্রীকে বিরক্ত করতেন আলম। মোবাইল ফোনেও কুপ্রস্তাব দিতেন। এমনকি বিয়ের প্রস্তাব দেন। বিষয়টি নিয়ে আলমকে সতর্ক করলে স্থানীয় বখাটেদের দিয়ে তাঁকে (ফরহাদ) পিটিয়েছেন। এমনকি টাকাও নিয়েছেন আলম।

বালিয়াকান্দি থানার ওসি জামাল উদ্দিন বলেন, এলাকাবাসীর কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে আহত আবস্থায় আলমকে উদ্ধার করেন। এ সময় চারজনকে পিটুনি দিয়ে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, এ ঘটনায় আলম শেখের ছোট ভাই উজ্জ্বল শেখ বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এতে আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আলম শ খ চ রজনক ফরহ দ

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ