সাত ঘণ্টার বেশি সময় পর রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে সরে গেলেন গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের মধ্যস্থতায় আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তাঁরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। পরে শাহবাগ এলাকায় যান চলাচল শুরু হয়।

অভ্যুত্থানের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচারের লক্ষ্যে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার, শহীদ ও আহত ভাইদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় শাহবাগে অবস্থান নেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। বেলা সোয়া ১১টার সময় তাঁরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা ছাড়া তাঁরা অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো.

নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি আন্দোলনকারীদের জানান, প্রধান উপদেষ্টা আগামী রোববার শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বসবেন। তবে তাঁর কথায় অবরোধ থেকে সরেননি তাঁরা। এরপর বিকেলে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ঘটনাস্থলে আসেন এবং ঘণ্টাখানেক শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে শহীদ পরিবারের সদস্যরা অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে শহীদ পরিবারের কেন্দ্রীয় গ্রুপের মুখপাত্র শহীদ ইমাম হাসানের (তায়িম) ভাই রবিউল আউয়াল বলেন, তাঁরা জনভোগান্তির জন্য দুঃখিত। তিনি বলেন, ‘সারজিস আলম ভাই আসছেন (এসেছেন)। উনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন এবং সরকারে আমাদের পক্ষে যে তিনজন ভাই আছেন, ওনারা আজ আমাদের প্রতিনিধি টিমের সঙ্গে বসবেন। ইভেন (এমনকি), আগামীকাল (শুক্রবার) সারজিস ভাই, হাসনাত ভাই আমাদের শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি পক্ষের সঙ্গে বসবেন। দেন (তারপর), রোববার মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের শহীদ পরিবারের প্রতিনিধিদল দেখা করবে। এই শর্তে আমরা আজ ব্লকেড (অবরোধ) কর্মসূচি প্রত্যাহার করলাম।’

আরও পড়ুনসাড়ে ৫ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ শহীদ পরিবারের সদস্যদের, মানুষের ভোগান্তি চরমে২ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ