বাফুফের বিশেষ কমিটির প্রতিবেদন সাবিনা খাতুনদের বিপক্ষে যাচ্ছে, আগের দিনই জানা গিয়েছিল তা। কার্যত সেটাই হয়েছে। কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ১৮ ফুটবলারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে প্রতিবেদন দিয়েছে বিশেষ কমিটি। তবে প্রতিবেদনে ছাড় পাননি কোচ পিটার বাটলারও। তাঁর বিরুদ্ধেও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজের অভিযোগ আনা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনটি আজ রাত ৯টার পর বাফুফের সভাপতির দপ্তরে জমা দিয়েছে বাফুফে গঠিত সাত সদস্যের বিশেষ কমিটি। এর কয়েক ঘণ্টা আগে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের একুশে পদক পাওয়ার ঘোষণা আসে সরকারের তরফ থেকে। প্রতিবেদন দেওয়ার সময় মেয়েদের একুশে পদকপ্রাপ্তির বিষয়টি কমিটিকে প্রভাবিত করেছে কি না, সে প্রশ্ন এসেছে।
রাত সাড়ে নয়টায় বাফুফে ভবনের নিচে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কাছে বিশেষ কমিটির প্রধান বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘নারী ফুটবল দলের একুশে পদক পাওয়া শুধু ফুটবল নয়, বাংলাদেশের যেকোনো খেলার জন্য বড় প্রাপ্তি। বাফুফে, সংশ্লিষ্ট পক্ষ, খেলোয়াড়দের কাছে আমরা আন্তরিক কৃতজ্ঞ। নারী দলের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু সবচেয়ে বড় হলো শৃঙ্খলা।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদনে আবেগ যেমন ছিল, তারা (মেয়েদের) সাফল্য পেয়েছে, সব দিক বিবেচনা করেই প্রতিবেদন দিয়েছি আমরা। সেখানে মেয়েদের সাফল্য বা ব্যর্থতা প্রভাবক হিসেবে কাজ করেনি।’
আমরা প্রায় প্রতিদিনই অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করে সংশ্লিষ্ট সবার বক্তব্য শুনেছি। সেই আলোকে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কিছু সুপারিশ করেছিবিশেষ কমিটির প্রধান ইমরুল হাসানপ্রতিবেদন তো জমা হলো। এরপর কী? ইমরুল জানিয়েছেন, বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল এককভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন, নাকি খেলায়াড়দের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন, না বাফুফের সভা ডাকবেন, সে সিদ্ধান্ত তাঁর। নারী ফুটবলে অচলাবস্থা নিরসনে গত শনিবার থেকে কাজ করার কথা জানিয়ে ইমরুল বলেছেন, ‘আমরা প্রায় প্রতিদিনই অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করে সংশ্লিষ্ট সবার বক্তব্য শুনেছি। সেই আলোকে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কিছু সুপারিশ করেছি।’
শোনা গিয়েছিল, ইংল্যান্ড থেকে কাল ঢাকায় ফেরা বাফুফে সভাপতি আজ বাফুফে ভবনে আসতে পারেন এবং নিজ হাতে প্রতিবেদন নিতে পারেন। তবে তিনি ভবনে আসেননি। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাফুফে সভাপতি কী ব্যবস্থা নেন, সেদিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে।
বাফুফের বিশেষ কমিটি সূত্র জানিয়েছে, মেয়েরা গত ২৯ জানুয়ারি বাফুফে সভাপতির কাছে কোচের বিরুদ্ধে চিঠি লিখে পরদিনই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিদ্রোহ প্রকাশ্যে এনে ঠিক কাজ করেননি। তাঁরা বাফুফে সভাপতিকে কোনো সময় দেননি।
কোচ না বদলালে খেলা ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা বলেন নারী ফুটবলাররা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ ষ কম ট ক জ কর ফ টবল ইমর ল
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।
বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।
দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।
নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’
২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।