অনেক মানুষ রাতে ঘুমানোর আগে পায়ে ব্যথার সমস্যায় ভোগেন। এটি দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং আরামের ঘুম পেতে সমস্যা সৃষ্টি করে। পায়ে ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। নিচে এ সমস্যার সম্ভাব্য কারণ ও সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হলো–

পায়ে ব্যথার কারণ

১. পেশি ক্লান্তি বা অতিরিক্ত ব্যবহার

সারাদিন হাঁটা, দাঁড়ানো বা ভারী কাজ করার ফলে পায়ের পেশি ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে, যা ব্যথার কারণ হতে পারে।

২.

ম্যাগনেসিয়াম বা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি

শরীরে মিনারেলের ঘাটতির কারণে পায়ের পেশি দুর্বল হয়ে ব্যথা বা ক্র্যাম্প হতে পারে।

৩. সার্কুলেশন সমস্যা

পায়ে রক্তপ্রবাহ ঠিকমতো না হলে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।

৪. নিউরোপ্যাথি

নার্ভের সমস্যার কারণে পায়ে ব্যথা বা ঝিঁঝিঁ ভাব হতে পারে।

৫. আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টের সমস্যা

সন্ধিতে প্রদাহ বা ক্ষয়জনিত কারণে রাতে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।

৬. প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস

পায়ের গোড়ালিতে প্রদাহ থাকলে রাতে ব্যথা বাড়তে পারে।

৭. স্ট্রেস বা মানসিক চাপ

অতিরিক্ত মানসিক চাপ পেশির টান বা ব্যথার কারণ হতে পারে।

পায়ের ব্যথা কমাতে ঘরোয়া কিছু সমাধান অনুসরণ করতে পারেন। যেমন–

পায়ে গরম পানির সেঁক দিন

ঘুমানোর আগে গরম পানির সেঁক দিলে রক্তপ্রবাহ বাড়ে এবং পেশির ক্লান্তি দূর হয়।

স্ট্রেচিং ব্যায়াম করুন

পায়ের পেশি আরামদায়ক রাখতে হালকা স্ট্রেচিং করতে পারেন।

সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন ডি-যুক্ত খাবার রাখুন।

ম্যাসাজ করুন

হালকা তেল (যেমন– নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল) দিয়ে পায়ে ম্যাসাজ করলে ব্যথা কমে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন

দেহে পানির অভাবে পেশির ক্লান্তি ও ক্র্যাম্প হতে পারে। তাই দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

সঠিক জুতা ব্যবহার করুন

আরামদায়ক এবং সঠিক ফিটিং জুতা পরুন, যা পায়ে চাপ কমাবে।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে সঠিক কারণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন।

লেখক : মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারস বিশেষজ্ঞ

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ