শঙ্খচিল অবমুক্ত করল সিকৃবির প্রাধিকার
Published: 8th, February 2025 GMT
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) প্রাণীকল্যাণ ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা সংগঠন প্রাধিকারের উদ্যোগে একটি উদ্ধার করা শঙ্খচিল অবমুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সংলগ্ন টিলাগড় ইকোপার্কের গভীর অরণ্যে পাখিটিকে অবমুক্ত করেন প্রাধিকারের সদস্যরা।
প্রাধিকার সুত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জানুয়ারি সিলেট নগরীর মেজরটিলার পশ্চিম ভাটপাড়া এলাকার স্থানীয় রনি ও আলিফ নামক দুইজন ব্যাক্তি পাখিটি উদ্ধারের পর প্রাধিকারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেন। উদ্ধারের সময় পাখিটি আহত অবস্থায় ছিল। পরবর্তীতে আহত পাখিটির কথা জানতে পেরে প্রাধিকারের শুভাকাঙ্ক্ষী প্রত্যয় হাসান পাখিটির সেবার দায়িত্ব নেন। দীর্ঘ ১১ দিনের সেবাশুশ্রূষা শেষে সুস্থ অবস্থায় আজ পাখিটি অবমুক্ত করা হয়।
প্রাধিকারের সাধারণ সম্পাদক ইসহাক হাসিব বলেন, “প্রাধিকার প্রাণীকল্যাণ নিয়ে কাজ করে। এরই অংশ হিসেবে পশুপাখি উদ্বারের পর সাধ্যানুযায়ী চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়। আজ আমরা একটি শঙ্খচিল অবমুক্ত করেছি।”
তিনি বলেন, “এসব পাখি নানাভাবে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে। কিন্তু যত্রতত্র বিদ্যুৎ তারের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনায় শিকার হয়। সবার প্রতি অনুরোধ, আহত প্রাণী দেখলে তাদের আঘাত না করে সেবার মাধ্যমে আমরা সবাই জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এগিয়ে আসতে পারি।”
পাখিটিকে অবমুক্ত করার সময় প্রাধিকারের সভাপতি জিহাদ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ইসহাক হাসিব, সহ সভাপতি মো.
শঙ্খচিল চিল পরিবারের অন্তর্ভুক্ত একটি পাখি, যা ব্রাহমিনি কাইট নামেও পরিচিত। শঙ্খচিলের মাথা, ঘাড়, বুক, পেটের তলার পালক শঙ্খের মতো সাদা হয়ে থাকে বলে এই পাখিটি শঙ্খচিল নামে পরিচিত। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত উপমহাদেশের সর্বত্র, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় পাখিটি দেখা যায়।
ঢাকা/আইনুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫