ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেছেন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই) শুরু থেকেই নতুন নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করে আসছে। অতীতে সিএসইই প্রথম অটোমেটেড হয়েছিল এবং এখন কাজ করছে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ স্থাপনের জন্য। তাই আজকের কর্মশালার প্রোডাক্ট নিয়ে আমারা আশাবাদী।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সিএসইর উদ্যোগে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে ‘অটোমেশন অব ওপেন অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ড’ বিষয়ক একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় অনুষ্ঠানে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সম্মানিত প্রতিনিধিবৃন্দ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।

সিএসই থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আবু আহমেদ বলেন, “আমারা আশা করছি, যারা সুদবিহীন বিনিয়োগে আগ্রহী তাদের জন্য এই প্রোডাক্টটি তাদের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে। আমাদের ইকোনমি ভালো হচ্ছে এবং সামনে আরো ভালো হবে। তবে অবশ্যই পলিসি লেভেলে আমাদের সমন্বিত কাজ করার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তবে আমাদের ইনভেস্টররা বিনিয়োগের ভালো পরিবেশের সঙ্গে ভালো রিটার্ন পাবেন। সর্বোপরি সিএসইর উদ্যোগকে স্বাগত জানাই এবং খুব দ্রুত এই প্রোডাক্টের দ্বার উন্মোচিত হওয়ার শুভ কামনা করছি।” 

বিএসইসির সম্মানিত অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর শেখ লুতফুল কবির বলেন, “পেপার শেয়ার থেকে ‘অর্ডার কালেকশন সিস্টেমের (ওসিএস) মাধ্যমে লেনদেন হলে এএমসি লাভবান হবেন। এক্ষেত্রে এএমসিদেরকেই এগিয়ে আশা উচিত। তবে দেরীতে হলেও এই সিস্টেম উন্মুক্ত হলে এবং আমরা সবাই মিলে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করলে আমাদের পুঁজিবাজার উপকৃত হবে।’

সিএসইর সম্মানিত চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান সমাপনী বক্তব্যে বলেন, “সিএসই সব সময়ই নতুন প্রোডাক্ট আনয়নে অগ্রগামী। আজকের আয়োজনও নতুন মাইলফলক স্থাপন করবে।”

অনুষ্ঠানটি উদ্ভোধন করেন আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.

আবু আহমেদ এবং সভাপতিত্ব করেন সিএসইর চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার।

কর্মশালায় ওপেন অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডের অটোমেশন প্রস্তাবনার বিষয়ক বিস্তারিত উপস্থাপনা প্রদান করেন সিএসইর ডিজিএম অ্যান্ড হেড অব বিজনেস প্রমোশন মোহাম্মদ মনিরুল হক ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার কাজী মাহফুজ মোরশেদ। টেকনলজিক্যাল বিষয়ক উপস্থাপনা প্রদান করেন কোয়ান্ট ফিনটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাতেক মিনার।

কর্মশালায় ওপেন অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডের অটোমেশন অর্থাৎ ওয়েব ভিত্তিক লেনদেন প্লাটফর্মের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এই লেনদেন আল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে লেনদেন উপযোগী হবে।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স এসইর আম দ র ক জ কর স এসই

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ