এমন অনেক প্রতিযোগিতা, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ যেখানে অংশগ্রহণই ছিল শেষ কথা! নিজেদের আগামনী বার্তা দেওয়া, কিছু করে দেখাতে পারে জানান দেওয়া ছিল মূল উদ্দেশ্য। তাতে প্রত্যাশিত ফল পরাজয়কেই সঙ্গী করেছেন স্বপ্নসারথীরা। সেই পরাজয় এক সময়ে স্তুপে পরিণত হয়। সেখান থেকে পাহাড়। কালেভাদ্রে লড়াই হয়েছে, জয়ের অমৃত স্বাদও পেয়েছে; কিন্তু ধারাবাহিকতা থাকেনি।
সময় পাল্টে সেসব প্রতিযোগিতায় এখন বাংলাদেশ জিততে শিখে গেছে। যেসব প্রতিপক্ষ, যেসব ময়দানে জয় ছিল অকল্পনীয়, অভাবনীয় সেসবকেও জয় করেছে বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলো মধ্যে বাংলাদেশ এখন কেবল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জয় পায়নি। বাকি সবগুলো দলকে তাদের মাটিতেই বাংলাদেশ হারিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়াসহ সবগুলো দলের বিপক্ষে জয় পেয়েছে নিরপেক্ষ ভেন্যু এবং ঘরের মাঠে। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ, মহাদেশীয় প্রতিযোগিতা তো বটেই, বাংলাদেশ জয় পেয়েছে বৈশ্বিক ক্রিকেটেও। আফগানিস্তানের মাটিতে এখনও খেলা হয়নি। তবে তাদের আতিথ্য নেওয়া হয়েছে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। সেখানেও জয় আছে বাংলাদেশের।
আরো পড়ুন:
রোহিতের ৪৯তম সেঞ্চুরি
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের লড়াকু সংগ্রহ
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের সূচক এখন ঊর্ধ্বমুখী। তবে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘশ্বাস। যেখানে ২০০০ সালে প্রথমবার অংশ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১২ ম্যাচে মাত্র দুই জয় বাংলাদেশের। শতকরা জয়ের হার যা মাত্র ১৮.
যেখানে আইসিসি র্যাংকিংয়ের শীর্ষ আট দল অংশ নিতে যাচ্ছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত এই প্রতিযোগিতা। আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩ এ পয়েন্ট তালিকার আটের ভেতরে থাকায় বাংলাদেশ এবার এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ২০১৭ সালে সবশেষ আসরেও বাংলাদেশ খেলেছিল।
সব মিলিয়ে পাঁচ আসরে প্রতিযোগিতায় খেললেও বলার মতো কোনো পারফরম্যান্স নেই। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ একবার হারিয়েছিল জিম্বাবুয়েকে। সবশেষ ২০১৭ সালে হারিয়েছিল নিউ জিল্যান্ডকে। শুনতে অবাক লাগতে পারে, সবশেষ আসরে বাংলাদেশ ওই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সেমিফাইনালও খেলেছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গ্রুপপর্বের ম্যাচে ফল বের না হওয়ায় বাংলাদেশ বাড়তি এক পয়েন্ট পেয়ে সেমিফাইনাল খেলে।
এবার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ এশিয়ার দুই জায়ান্ট ভারত, পাকিস্তান। এছাড়া চেনা প্রতিপক্ষ নিউ জিল্যান্ড আছে এই গ্রুপে। নিকট অতীতে তিন দলকেই বাংলাদেশ হারিয়েছে। এবারের প্রতিযোগিতায় তাই বাংলাদেশের থেকে বড় প্রত্যাশাই আছে ক্রিকেট সমর্থকদের। এবারও সেমিফাইনাল খেলা অসম্ভব নয়। কাজটা কঠিন। সেজন্য নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে হবে।
ওয়ানডে ক্রিকেট বাংলাদেশের পছন্দের ফরম্যাট, স্বাচ্ছন্দ্যের খেলা। পঞ্চাশ ওভারের এই প্রতিযোগিতাতেই বাংলাদেশ খুঁজে পায় আত্মবিশ্বাস। ধূসর অতীত পেরিয়ে এবারের আসরে আলোর অপেক্ষায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। নাজমুল হোসেন শান্ত অ্যান্ড কোং এবার কেমন করে সেটাই দেখার।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ।
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়।
পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল।
ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র্যাঙ্কিং ৫৫)। র্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না।
প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।
এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ।
ঢাকা/ইয়াসিন