ব্যাংক ডাকাতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে
Published: 9th, February 2025 GMT
ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ব্যাংক ডাকাতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। আরও কার্যক্রম চলছে। তাদের বিচারের আওতায় আনা বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার।
রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিফ্রিংয়ে এসব কথা বলেন প্রেস সচিব। তিনি জানান, রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড.
বৈঠকের সূত্র ধরে শফিকুল আলম বলেন, ‘ব্যাংক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিংয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন– যারা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাদের খুব দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। যারা এ কাজ করেছেন, তারা মূলত বাংলাদেশের মানুষের টাকা মেরে দিয়েছেন। তাদের যে করেই হোক আইনের আওতায় আনতে হবে।’
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এস আলমের বাংলাদেশে যত সম্পত্তি আছে, সব অ্যাটাচ করা হয়েছে। নগদের বিরুদ্ধেও কিছু অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে। দেশের বাইরে যেসব সম্পদ চলে গেছে, সেগুলোর বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের একটি টিম বাংলাদেশে ঘুরে গেছে। এখন সুইজারল্যান্ডের একটি টিম এসেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএসএর সঙ্গে কথা বলছি, কানাডার সঙ্গেও। বাংলাদেশ থেকে যে টাকাটা চলে গেছে, তা কীভাবে ফেরানো যায়, সে বিষয়ে বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। ১২ জন, যারা ব্যাংকিং সিস্টেমের লুটপাটে জড়িত, বিদেশে টাকা নিয়ে গেছে, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা কীভাবে টাকা নিয়েছে, সেটা আমরা দেখছি।’
বৈঠকে উপস্থাপিত প্রেজেন্টেশনের সূত্র ধরে শফিকুল আলম বলেন, ইতোমধ্যে মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। রিজার্ভের সঙ্গে বেড়েছে রপ্তানি। হুমকির মুখে পড়া ১০টি ব্যাংকের মধ্যে ইউসিবিএল ও ইসলামী ব্যাংক দুটি আবার ভালো করতে শুরু করেছে। প্রয়োজনীয় খাদ্য মজুত আছে। রেমিট্যান্স বেড়েছে। তিন মাসের আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় রিজার্ভ আছে। এক কথায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
সারাদেশে ‘ডেভিল হান্ট’ অপারেশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য রোববার সন্ধ্যা থেকে একটি কমান্ড সেন্টার চালু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এটি পরিচালিত হবে। সেন্টারের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী– পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্টগার্ড, আর্মডফোর্স ব্যাটালিয়নের সদস্যরা যুক্ত থাকবেন। রাজধানীসহ দেশের কোথাও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে কমান্ড সেন্টার থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইন র আওত য়
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]