ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ব্যাংক ডাকাতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। আরও কার্যক্রম চলছে। তাদের বিচারের আওতায় আনা বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার।

রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিফ্রিংয়ে এসব কথা বলেন প্রেস সচিব। তিনি জানান, রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড.

ইউনূসের উপস্থিতিতে অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক একটি প্রেজেন্টেশন হয়। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সচিব, কয়েকজন উপদেষ্টা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের সূত্র ধরে শফিকুল আলম বলেন, ‘ব্যাংক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিংয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন– যারা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাদের খুব দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। যারা এ কাজ করেছেন, তারা মূলত বাংলাদেশের মানুষের টাকা মেরে দিয়েছেন। তাদের যে করেই হোক আইনের আওতায় আনতে হবে।’

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এস আলমের বাংলাদেশে যত সম্পত্তি আছে, সব অ্যাটাচ করা হয়েছে। নগদের বিরুদ্ধেও কিছু অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে। দেশের বাইরে যেসব সম্পদ চলে গেছে, সেগুলোর বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের একটি টিম বাংলাদেশে ঘুরে গেছে। এখন সুইজারল্যান্ডের একটি টিম এসেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএসএর সঙ্গে কথা বলছি, কানাডার সঙ্গেও। বাংলাদেশ থেকে যে টাকাটা চলে গেছে, তা কীভাবে ফেরানো যায়, সে বিষয়ে বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। ১২ জন, যারা ব্যাংকিং সিস্টেমের লুটপাটে জড়িত, বিদেশে টাকা নিয়ে গেছে, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা কীভাবে টাকা নিয়েছে, সেটা আমরা দেখছি।’

বৈঠকে উপস্থাপিত প্রেজেন্টেশনের সূত্র ধরে শফিকুল আলম বলেন, ইতোমধ্যে মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। রিজার্ভের সঙ্গে বেড়েছে রপ্তানি। হুমকির মুখে পড়া ১০টি ব্যাংকের মধ্যে ইউসিবিএল ও ইসলামী ব্যাংক দুটি আবার ভালো করতে শুরু করেছে। প্রয়োজনীয় খাদ্য মজুত আছে। রেমিট্যান্স বেড়েছে। তিন মাসের আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় রিজার্ভ আছে। এক কথায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

সারাদেশে ‘ডেভিল হান্ট’ অপারেশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য রোববার সন্ধ্যা থেকে একটি কমান্ড সেন্টার চালু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এটি পরিচালিত হবে। সেন্টারের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী– পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, কোস্টগার্ড, আর্মডফোর্স ব্যাটালিয়নের সদস্যরা যুক্ত থাকবেন। রাজধানীসহ দেশের কোথাও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে কমান্ড সেন্টার থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইন র আওত য়

এছাড়াও পড়ুন:

গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’

এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’

এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ