Prothomalo:
2025-11-03@11:29:48 GMT

ভোক্তাদের জিম্মি করা যাবে না

Published: 10th, February 2025 GMT

আন্তর্জাতিক বাজারে যখন ভোজ্যতেলের দাম পড়তির দিকে, তখন বাংলাদেশে দাম বেড়ে চলেছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকটের কারণে এক মাসের ব্যবধানে খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে লিটারে পাঁচ থেকে সাত টাকা।

বাংলাদেশ ট্রেড আন্ড ট্যারিফ কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, দেশে বছরে ২২ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে, যার বেশির ভাগই আমদানি করতে হয়। দেশীয় কয়েকটি বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান অপরিশোধিত ভোজ্যতেল ও বীজ আমদানি করে এবং তা থেকে উৎপাদিত ও পরিশোধিত তেল বাজারে বিক্রি করে।

গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অপরিশোধিত তেল খালাস হয়েছে ২ লাখ ৩২ হাজার টন, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৯ শতাংশ বেশি। এরপরও সয়াবিনের এই সংকট কেন?

প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরের অন্যতম বাণিজ্যকেন্দ্র বহদ্দারহাটে পাইকারি ও খুচরা মিলিয়ে ৩০টি দোকানে সয়াবিন তেল বিক্রি হয়। কিন্তু শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, মাত্র একটি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন মিলেছে। ঢাকার চিত্রও এর ব্যতিক্রম নয়। আগে যেখানে পাঁচ লিটারের বোতল কিনলে দামে ছাড় পাওয়া যেত, এখন সেখানে নির্ধারিত দরের বাড়তি মূল্য গুনতে হয় ক্রেতাদের।

পবিত্র রমজান সামনে রেখে ভোজ্যতেলের বাজারের এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনকই বটে। এর আগে আমদানিকারকেরা লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে লিটারপ্রতি আট টাকা বাড়িয়ে নেন।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, আরও অনেক আমদানি পণ্যের মতো ভোজ্যতেল বা সয়াবিনের বাজারও কয়েকটি বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হাতে জিম্মি। কোনো কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বলেছে, তারা নিয়মিত বাজারে সয়াবিন সরবরাহ করছে। তাহলে এই কৃত্রিম সংকটের কারণ কী? বর্তমানে বোতলজাত সয়াবিনের ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮৫০ টাকা। যদি পণ্য বাজারে না–ই পাওয়া যায়, তাহলে দামের বিষয়টিই অপ্রাসঙ্গিক।

অন্য একটি পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, টানা দুই মাস বাড়ার পর গত নভেম্বরের পর নিম্নমুখী হয়ে ওঠে সয়াবিন তেলের আন্তর্জাতিক বাজার। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত দুই মাসের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে টনে ৮৪ ডলার। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমছে আর দেশীয় বাজারে সেটা বেড়ে যাওয়া কিংবা সরবরাহে ঘাটতি থাকা রহস্যজনক।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেছেন, ‘ভোজ্যতেলের সরবরাহ ও দাম নিয়ে কারসাজি বন্ধের বিষয়ে সরকারের অনতিবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’ কিন্তু অন্যান্য বিষয়ের মতো বাজার নিয়ন্ত্রণেও সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীদের মতো অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারকেরাও অদৃশ্য সিন্ডিকেটের কথা বলে হাওয়ায় ছড়ি ঘোরাচ্ছেন; যদিও সেই সিন্ডিকেটকে দৃশ্যমান করার কোনো উদ্যোগ নেই।

কয়েক দিন আগে প্রথম আলোয় খবর বের হয়েছিল, পবিত্র রমজান সমানে রেখে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি হচ্ছে। এতে সরকার একধরনের নিশ্চিন্ত ছিল। কিন্তু ভোজ্যতেল তথা সয়াবিনের বাজার দেখলে মনে হয় নিশ্চিন্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকার ব্যবসায়ীদের ওপর খবরদারি করতে পারছে না। ব্যবসায়ীরাই নানা অজুহাত দেখিয়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে চলেছেন এবং সরকারকে তা হজমও করতে হচ্ছে। রোজা সামনে রেখে সয়াবিনের ঘাটতি বাড়ার আগেই সরকারের উচিত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে একটি উপায় খুঁজে বের করা। কোনো অবস্থায় ভোক্তাদের জিম্মি করা যাবে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ জ যত ল র সরক র র ব যবস আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।

ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।

ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।

কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।

কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’

ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

শুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।

জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প
  • দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প