আবুল হায়াত। বরেণ্য অভিনেতা ও নির্মাতা। গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘দায়মুক্তি’। পাশাপাশি টিভি নাটকেও অভিনয় করছেন তিনি। এ সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছেন এমদাদুল হক মিলটন।

বেশ বিরতির পর আপনার অভিনীত সিনেমা ‘দায়মুক্তি’ প্রেক্ষাগৃহে এসেছে। সিনেমাটি নিয়ে দর্শক প্রতিক্রিয়া জানার কী সুযোগ হয়েছে?

লম্বা বিরতির পর নিজের কোনো সিনেমার মুক্তিতে ভালো লাগছে। এটি দেখতে এখনও হলে যাওয়া হয়নি। এ কারণে সরাসরি দর্শক প্রতিক্রিয়া জানা একটু মুশকিল। যারা দেখেছেন, তারা ভালোলাগার কথা জানিয়েছেন।

সিনেমার গল্প কী নিয়ে?

বৃদ্ধাশ্রমের গল্পকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। অসাধারণ গল্পটি আমাকে অভিনয়ে আগ্রহী করে তুলেছে। নির্মাতা বদিউল আলম খোকন এখানে পিতামাতার প্রতি দায়মুক্তির বিষয়টি বলতে চেয়েছেন। বাবা-মার বয়স হয়ে গেছে, টাকা-পয়সা দিয়ে আলাদা করে দিই। অনেকেই ভাবেন, টাকা-পয়সা দিয়ে দিলাম মুক্তি হয়ে গেল। না, বাবা-মা কী জিনিস, একসঙ্গে থাকার কী উপকারিতা, তা এ সিনেমাতে দেখানো হয়েছে। 

অনেকেই বলছেন সিনিয়র অভিনেতারা নাটক, চলচ্চিত্রে এখন উপেক্ষিত। আপনার কী মত?

ঠিকই বলছেন। আমাদের মতো বেশি বয়সের অভিনয়শিল্পীদের বাতিল করে দিয়েছেন নির্মাতারা। বিদেশে এ বয়সের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়ে সিনেমা হয়। বিশেষভাবে চরিত্র রচনা করে। একটা সময় চলচ্চিত্রে গুরুত্ব দেওয়া হতো সিনিয়রদের। এরপর দেখা গেল, সিনিয়র অভিনয়শিল্পীর চরিত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তারপর একটা ছবি টানানো হয় দেয়ালে। এরপর সবাই পুরো সিনেমায় ওই ছবিটি নিয়ে কান্নাকাটি করে। এভাবেই চরিত্রকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। এটি মোটেও ঠিক নয়। একটি ভিতের ওপরই দাঁড়িয়ে থাকে স্থাপনা। ভিতকে কখনও অবহেলা করা উচিত নয়। তাকে যত্ন নিতে হয়। 

চলচ্চিত্রের এ সময়কে কীভাবে দেখছেন?

আমি তো এখন আর সিনেমার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত নেই। মাঝেমধ্যে অভিনয় করছি। এককথায় বলতে হলে বলব, চলচ্চিত্রের দুরবস্থা চলছে। যারা কাজ জানেন না কিংবা সিনেমার সঙ্গে যাদের সংশ্লিষ্টতা নেই, তারাই এখন সিনেমা বানাচ্ছেন। তারা আবার ভাড়া দিচ্ছেন অন্য একজনকে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এটি ই দেখে আসছি। বিগত সরকার একটু চেষ্টা করেছিল। তারা চেষ্টায় সফল হতে পারেনি। হল নির্মাণের জন্য ঋণও দেওয়া হয়েছিল। অনেকেই ঋণ নেননি। যারা বড় বড় প্রযোজক ছিলেন, তারা টেলিভিশন মিডিয়া কিংবা ওটিটি ওয়ালাদের কাছে ঠিকমতো পাত্তা পাচ্ছেন না। তাদের কাজগুলো ঠিকঠাকভাবে পৌঁছাতে পারছেন না।

টিভি মিডিয়া নিয়ে কী বলবেন?

গত ৩০ বছর আমি ভিডিও মিডিয়ায়ই কাজ করছি। অভিনয় ও নির্মাণ নিয়ে এখানেই ব্যস্ত। প্রচুর টিভি নাটক হচ্ছে। এখানেও এখন লাইকস ও ভিউজের চল শুরু হয়েছে। একটি গল্প সাকসেসফুল হলে এরই আদলে পর পর নাটক নির্মাণ করছেন নির্মাতরা। এখন আর শিল্পী বাছাই করার কোনো বালাই নেই। গল্প নির্মাতা নিজেই লিখছেন। লেখককে কেউ আর পয়সা দিতে চান না। তারপরেও শুনি নাটকের বাজার নাকি আগের থেকে অনেক ভালো। বাস্তবে তা দেখছি না। এখন সবকিছু ইউটিউবকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। ইউটিউব থেকে পয়সা যেভাবে আসে, সেভাবে নাটক বানানো হচ্ছে। 

টিভি-সিনেমায় আপনাকে দেখা গেলেও ওটিটিতে একেবারেই অনুপস্থিত। এর কারণ কী?

অভিনয়টাই তো করছি। এখানে আমাকে কেউ ডাকছে না। ডাকলে তো অভিনয়ের প্রসঙ্গ আসে। তারা মনে করছে, আমি অপ্রয়োজনীয়। আমার তো ভিউ আর লাইক নাই। ভিউ ও লাইকের ওপর চলে এগুলো। অভিনয় জানুক আর না জানুক ভিউজ থাকলেই তাদের কাছে চলে। আগে শুনতাম ভালো গল্প বা কাহিনি। এখন গল্প হয়ে গেছে কনটেন্ট। বলা হচ্ছে, কনটেন্ট ভালো দিতে হবে। এগুলোর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছি না। এসব শুনতে শুনতে হাঁপিয়ে উঠছি। 

প্রতি বছর বইমেলায় আপনার নতুন বই আসে। এবার লিখলেন না যে.

..

কিছুদিন আগে নিজের একটি আত্মজীবনী লিখেছি। ওটা লিখতেই আমার অনেক সময় গেছে। মাঝে শারীরিকভাবে অসুস্থও ছিলাম বেশ কিছু দিন। সবকিছু মিলিয়ে আর লেখা হয়নি। ‘রবি পথ’ নামে আত্মজীবনীটিই এবার মেলায় এসেছে। এটি ‘সুবর্ণ’ প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

নীল সমুদ্রে দক্ষিণ আফ্রিকার নীল বেদনা, ভারত বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়ন

অনুমিত চিত্রনাট্যই যেন অনুসরণ করল মুম্বাইয়ের ফাইনাল ম্যাচ। ভারতের জার্সি গায়ে দর্শকে ঠাসা গ্যালারি রূপ নিল নীল সমুদ্রে। ২২ গজে আরও একবার ভারতের আধিপত‌্য, শাসন। যেন শিরোপার পায়চারি অনেক আগের থেকেই। 

ব‌্যাটিংয়ে পর্বত ছুঁই-ছুঁই রান। এরপর স্পিনে ফুল ফোটালেন স্পিনাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াই করল সাধ‌্যের সবটুকু দিয়ে। ব্যাটে-বলে সহজে হাল ছাড়ল না তারাও। হৃদয় জিতলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাত্তাই পেল না। ভারতের শক্তি-সামর্থ‌্যের গভীরতার কাছে হার মানতেই হলো প্রোটিয়া নারীদের।

আরো পড়ুন:

৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে

কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস

মুম্বাইয়ের নাভি স্টেডিয়ামের নীল সমুদ্রে সব আতশবাজি আজ রাতে ফুটল ভারতের বিশ্বকাপ  উদ্‌যাপনে। প্রথমবার ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডেতে বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়ন। ৫২ রানের বিশাল জয় বুঝিয়ে দেয় হারমানপ্রীত কৌর, জেমিমা রদ্রিগেজ, দীপ্তি শর্মা কিংবা শেফালি বার্মা, স্মৃতি মান্ধানা, রিচা ঘোষরা ২২ গজকে কতটা আপন করে নিয়েছেন। শিরোপা জয়ের মঞ্চে ছাড় দেননি একটুও। ২০০৫ ও ২০১৭ বিশ্বকাপে যে ভুলগুলো হয়েছিল...সেগুলো আজ ফুল হয়ে ঝরল। 

বৃষ্টি বাঁধায় বিঘ্ন ম‌্যাচে আগে ব‌্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ২৯৮ রানের স্কোর পায় ভারত। ৪৫.৩ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২৪৬ রান করতে পারে প্রোটিয়া নারীরা। নাডিন ডি ক্লার্ক শেষ ব‌্যাটসম‌্যান হিসেবে যখন আউট হলেন, স্টেডিয়ামের প্রায় ষাট হাজার ভারতীয় সমর্থকদের মুখে একটাই স্লোগান, চাক দে ইন্ডিয়া।

ওই জনসমুদ্রের স্লোগান, ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘বন্দে মাতরম’। 

বিস্তারিত আসছে …

 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ