রাজশাহীতে সেনাবাহিনীর এক সদস্যকে মারধরের অভিযোগে রেলের একজন গার্ড ও দুজন অ্যাটেনডেন্টকে আটক করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী সেনাসদস্যের দায়ের করা মামলায় তাঁদের তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়।

ওই তিনজন হলেন ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলাচলকারী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের গার্ড আল আমিন, অ্যাটেনডেন্ট মনছেহার আলী ও আলী আজম। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তাঁদের রেলওয়ে থানায় রাখা হয়েছিল।

সেনাবাহিনীর ভুক্তভোগী সদস্যের নাম ইসমাইল হোসেন। গতকাল বুধবার রাতে রাজশাহী রেলস্টেশনে তিনি মারধরের শিকার হন বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন। মামলায় ওই তিনজনের পাশাপাশি একই ট্রেনের ক্যারেজ অ্যাটেনডেন্ট মো.

সাব্বির হোসেন ওরফে ঝলক, মো. মোস্তাফিজুর, মো. মনির হোসেন, মো. ইসতিয়াক আহম্মেদ এবং অজ্ঞাতনামা সাত থেকে আটজনকে আসামি করা হয়েছে।

রাজশাহী রেলওয়ে থানা–পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ছুটি শেষে বুধবার সেনাসদস্য ইসমাইল হোসেন জয়দেবপুর থেকে রাজশাহীতে আসার জন্য সিল্কসিটি ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনের সিটিং টিকিট না পাওয়ায় স্ট্যাডিং টিকিট কাটেন তিনি। যাত্রাকালীন ট্রেনে কর্মরত টিটিই তাঁর টিকিট যাচাই করেন। আবদুলপুর রেলস্টেশনে পৌঁছালে কর্মরত কয়েকজন আবার টিকিট দেখতে চান। তাঁরা খারাপ আচরণ করেন। তখন তিনি তাঁদের জানান তিনি টিটিইকে টিকিট দেখিয়েছেন। তখন টিটিই আবার টিকিট চেক করে দেখেন। তখন ওই সেনাসদস্য টিটিইকে জানান, তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছে। তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেবেন। তখন তাঁরা তাঁর ওপর চড়াও হন এবং কথা-কাটাকাটি হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ট্রেনটি রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজশাহী স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেন থেকে নামলে তাঁরা আরও বেশ কয়েকজন এসে ইসমাইল হোসেনকে এলোপাতাড়ি কিল–ঘুষি মারতে শুরু করেন। হত্যার হুমকিও দেন। এলোপাতাড়ি লাথিতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সন্তানের বন্ধু হতে চাইলে

সন্তান যে কতটা প্রিয় তা ভাবে ও ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষমতা অধিকাংশ মানুষেরই থাকে না। সন্তান সব মা-বাবার জীবনে সবচেয়ে বড় সম্পদ। জন্মসূত্রে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর, গভীর, ভালোবাসা, স্নেহ, স্বার্থহীন, নির্ভেজাল এ সম্পর্ক তৈরি হয়। 
ছোট্ট শিশু থেকে বেড়ে ওঠার সময়টায় মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক আনন্দের, মজার, কষ্টের, দুঃখের, হাসির– মোট কথা ঘটনাবহুল ও স্মৃতিময়। মা-বাবা সন্তানের জন্য বহুমুখী সম্পর্ক পালন করেন। কখনও বন্ধু, শিক্ষক, সাহায্যকারী, সহমর্মী, অভিভাবক, ভ্রমণসঙ্গী হয়ে। এ যাত্রা মোটেও সহজ নয়। সামান্য কারণে সন্তানের সঙ্গে তৈরি হতে পারে দূরত্ব ও ভুল বোঝাবুঝি। 
সন্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও বন্ধুত্ব বজায় রাখার জন্য মা-বাবার কী করা উচিত– জানতে চেয়েছিলাম সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মনোচিকিৎসক বাপ্পা আজিজুলের কাছে। তিনি জানান, ‘প্যারেন্টিং বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো কোর্স বা ডিগ্রি নেই। প্যারেন্টিং শিশুর বয়স অনুসারে পরিবর্তিত হয়। মোটামুটি ৩টি বয়সে ভাগ করে মা-বাবার শিশুর সঙ্গে আচরণ ও ব্যবহারে ভিন্নতা আনা যেতে পারে।’ 
১. বাচ্চার বয়স ০-১২ বছর পর্যন্ত চাইল্ড প্যারেন্টিং। 
২. ১৩-১৯ বছর বয়সীদের জন্য টিন প্যারেন্টিং। 
৩. ২০ বছর থেকে শুরু করে ৩০-৩২ বছর পর্যন্ত অ্যাডাল্ট প্যারেন্টিং। 
একেক বয়সী সন্তানের জন্য পিতামাতার ভূমিকা একেক রকম হয়। সন্তানকে আদর, সোহাগ, কোলে-পিঠে নেওয়া, চুমু, স্নেহ, চক্ষুশীতল করে গড়ার মূল বয়স ১০ বছর বয়স পর্যন্ত। তাই বলে আপনার যে বাচ্চার বয়স ১০ পেরিয়ে গেছে তার জন্য হতাশ হবেন না, তার সঙ্গে দূরত্ব বাড়াবেন না। এখনই পজিটিভ প্যারেন্টিং শুরু করুন। সব ঠিক হয়ে যাবে। সন্তান আপনাকে বন্ধু ভাববে। দূরত্ব যাবে ঘুচে। সাধারণত প্যারেন্টিং চার ধরনের– 
ডিকটোরিয়াল বা একনায়কতন্ত্র: এমন ধরনের পিতামাতার ইচ্ছা পালন করতে হবে। সন্তান নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। 
অথরিটিটিভ বা কর্তৃত্বশীল: এমন ধরনের মা-বাবা সন্তানের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তিতে আবদ্ধ হন। যেমন– তুমি যদি আমাদের কথা শোন তবে আমরা তোমাকে এ সুযোগ-সুবিধা দেব।
পারমিসিভ বা অনুমতিসূচক: এমন ক্ষেত্রে মা-বাবা সন্তানকে অবাধ স্বাধীনতা বা ছাড় দেন; যা ইচ্ছা করলেও খারাপ কিছু যাতে না করে সেই পরামর্শ দেওয়া থাকে। 
ডেমোক্রেটিক বা গণতান্ত্রিক: এ পদ্ধতিতে পিতামাতা সন্তানের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। প্যারেন্টিংয়ের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এখন সারাবিশ্বে সমাদৃত হচ্ছে।
কিশোর-কিশোরীদের ওপর অতিরিক্ত ও অযাচিত শাসন চাপিয়ে দেবেন না। এ বয়স বুঝিয়ে বলার। যেসব মা-বাবা বাচ্চাদের লেখাপড়ার ফলাফল আশানুরূপ না হলে বকা দেন বা পড়াশোনাকেই সাফল্যের একমাত্র উপায় মনে করেন তাদের বলছি– 
১. সন্তানকে অভয় দিন। আশ্বস্ত করুন; যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। এখন কানের কাছে বারবার একই কথা বলতে থাকলে হিতে বিপরীত হতে পারে। আপনার শীতল গলা, অকৃত্রিম ভালোবাসা, মানসিক সাপোর্ট তার আত্মপর্যালোচনার জন্য যথেষ্ট হবে। 
২. সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দিন। সময় দেওয়া মানে সন্তানের পেছনে গোয়েন্দাগিরি করা নয়। সন্তানের বন্ধু হোন। ওর চোখে আদর্শ মা-বাবা হোন। মানসম্মত সময় দিন। সন্তানের সঙ্গে খেলুন। সৃজনশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত থাকুন। ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে গল্প করুন। 
৩. সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন। ওদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তাহলে মা-বাবার সঙ্গে গ্যাপ (জেনারেশন গ্যাপ) কমে আসবে। কোনো বিষয়ে সমস্যা থাকলে সেটিও জানা যাবে। আপনার সন্তানের মনে সাহস ও আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। মন হালকা হবে। ইমোশন ভেন্টিলেশন হবে।
৪. সন্তানের লক্ষ্য নির্ধারণে সহযোগী হোন। নিজের সিদ্ধান্ত সন্তানের কাঁধে জোর করে চাপিয়ে দেবেন না। রেজাল্ট, সুযোগ, সক্ষমতা ইত্যাদি বিবেচনায় আনুন। সন্তানকে সুপরামর্শ দিন। তবে দিনশেষে নিজের জীবনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তাকে নিতে দিন। 
৫. সন্তানের কাছে প্রত্যাশা কম করুন। ওদের আচরণে, ব্যবহারে বা লেখাপড়ার ফলাফলে হতাশ হবেন না। প্রত্যাশা কেবল চাপ তৈরি করে। এক সন্তানের সঙ্গে অন্যজনের বা অন্যদের সঙ্গে অযথা তুলনায় যাবেন না। v

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ
  • মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবি ১০৪ নাগরিকের
  • সন্তানের বন্ধু হতে চাইলে
  • চট্টগ্রামে অটোরিকশা চালকদের সমাবেশ পণ্ড, গ্রেপ্তার তিন
  • চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সমাবেশ পণ্ড, আটক ৩
  • খুলনায় কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১
  • পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩
  • রিকশাচালকদের সমাবেশ থেকে বাসদ নেতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার
  • চট্টগ্রামে ব্যাটরিচালিত রিকশা শ্রমিকদের সমাবেশ পণ্ড, আটক ৩
  • গতকালের বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের জন্য ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ার কথা বোঝাতে চেয়েছি: জামায়াত নেতা তাহেরের বিবৃতি