দিনাজপুরের ব্যক্তি মালিকানাধীন স্বপ্নপুরী পার্ক ও মিনি চিড়িয়াখানা থেকে অবৈধভাবে রাখা সাম্বা ও মায়া প্রজাতির ১৮টি হরিণ, ৫টি ধনেশ পাখি বনবিভাগের গোয়েন্দা বিভাগ জব্দ করে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে অবমুক্ত করেছে। গত বুধবার রাত ১টার সময় এসব প্রাণী সাফারি পর্কে আনা হয়।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্ট রেঞ্জার মাজহারুল ইসলাম জানান, বুনো হরিণ ও পাখিগুলোকে জীবাণুনাশক ভ্যাকসিন দিয়ে পার্কের খাঁচায় অবমুক্ত করা হয়েছে। এসব প্রাণী সুস্থ আছে।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও জানান, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক প্রতিষ্ঠাকালে অন্তত ২০টি সাম্বার ও মায়া হরিণ ছিল। একসময় হরিণগুলো পার্কের ভাঙা দেয়াল দিয়ে পালিয়ে বনে চলে যায়। কিছু হরিণ স্থানীয় লোকজন ধরে খেয়ে ফেলেন। বিপন্ন প্রজাতির একসঙ্গে ১৪টি সাম্বার হরিণ ও ৪টি মায়া হরিণ পার্কে অবমুক্ত করায় হরিণ বেষ্টনীতে এখন প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। 
প্রসঙ্গত, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে পশুপাখি মুক্ত অবস্থায় বিচরণ করে। এটি  প্রথম সাফারি পার্ক। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে উত্তরে পার্কটির দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটার এবং চকরিয়া সদর থেকে ১১ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই পার্কের আয়তন প্রায় ৯০০ হেক্টর। 
স্থানীয় আবদুর রহিম বলেন, ‘ডুলাহাজারা সাফারি এই অঞ্চলের প্রধান বিনোদনকেন্দ্র। এতদিন এখানে বিভিন্ন রকম বন্যপ্রাণী থাকলেও, হরিণ তেমন ছিল না। অন্যসব খাঁচা পূর্ণ থাকলেও হরিণের খাঁচা ছিল শূন্য। ফলে বিনোদনপ্রেমীরা হরিণ দেখা থেকে বঞ্চিত হতো। সম্প্রতি স্বপ্নপুরী পার্ক ও মিনি চিড়িয়াখানা থেকে অবৈধভাবে রাখা সাম্বার ও মায়া প্রজাতির ১৮টি হরিণ ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে আনা হয়েছে। এটা শুনে হরিণ দেখার জন্য অনেকে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে আসছেন।’
চকরিয়ার কাকারার সুবর্ণা চৌধুরী বলেন, ‘ডুলাহাজারা পার্কে দেশ-বিদেশ থেকে আরও বন্যপ্রাণী আনা দরকার। কারণ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ একমাত্র ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে গিয়ে কিছুটা বিনোদন পান।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বন য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ