Samakal:
2025-06-16@05:54:01 GMT

হকার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ পাঠক

Published: 16th, February 2025 GMT

হকার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ পাঠক

পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের লাল-বাসন্তী রঙের রেশ গতকালও ছিল অমর একুশে বইমেলায়। ছুটির দিন হওয়ায় পাঠক ও দর্শনার্থীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এবারের মেলায় কিছু অসংগতি যেন পিছু ছাড়ছে না। এ নিয়ে সাধারণ পাঠক ও দর্শনার্থীর মধ্যে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা ও ক্ষোভের চিহ্ন।
১৫তম দিনে ভিড় হওয়ায় মেলাজুড়ে ছিল ধুলার আচ্ছাদন। কিছু স্টল নিজেদের উদ্যোগে পানি ছিটিয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমির মেলা প্রাঙ্গণে ময়লা ফেলার পর্যাপ্ত ডাস্টবিন দেখা যায়নি। বিভিন্ন খাবারের খোসা যত্রতত্র পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

এ নিয়ে দর্শনার্থী রাহিদ বলেন, ‘এত বড় একটা জায়গাজুড়ে মেলা। হাতেগোনা কয়েকটা ডাস্টবিন। একটা আইসক্রিমের খোসা ফেলতে কি ১০/১৫ মিনিট হাঁটব? আর ধুলার কথা আলাদাভাবে বলার কিছু নেই। আগেও মেলার এই ধুলাবালুর যন্ত্রণায় বিশেষ দিনগুলোতে আসতে বিরক্ত লাগত। এবারও লাগছে।’
গতকাল বিকেলে টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল। কিছুদূর হেঁটে মেলাগেটে প্রবেশ করতে হয়েছে। হাঁটতে কেউ বিরক্ত হননি। তবে বিরক্ত হয়েছেন হকারের উৎপাতে।

গতকাল সন্ধ্যায় টিএসসি চত্বরের প্রবেশমুখে থাকা ব্যারিকেড সরিয়ে বেশ কয়েকজন হকারকে খাবারের ভ্যান নিয়ে মেলায় যেতে দেখা যায়। কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা বিষয়টি সুরাহা করেন।

এ ছাড়া টিএসসির গেট দিয়ে ঢোকার পর বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসা হকারদের কারণে মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে বিপাকে পড়তে হয় পাঠক ও দর্শনার্থীকে। ভিড়ের কারণে নারী ও শিশুরা অস্বস্তিতে পড়ে। উত্তরা থেকে মেলায় বই কিনতে আসা নাহার বলেন, মেলা খালি থাকলে দেখতে খারাপ লাগে আর লোকে লোকারণ্য থাকলে বিরক্ত লাগে। এই যে মেলাভর্তি হকার কিছুক্ষণ পরপর আসছে, খাবার নিয়ে বসে আছে। মানুষের জটলা তৈরি হচ্ছে এদের ঘিরে। এতে মেলার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

গেটের কাছাকাছি হকার বসতে দেননি নিরাপত্তাকর্মীরা। তবে গেট থেকে দূরে গিয়ে হকার বসায় যাতায়াতে সমস্যায় পড়ছে মানুষ।

এ ছাড়া গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, মেলার দোয়েল চত্বর ও টিএসসি হয়ে পুলিশের সামনে দিয়ে হকার যাতায়াত করছে। পুলিশ সদস্যরা কিছু বলছেন না।

গতকাল লিটল ম্যাগ চত্বরে পাঁচটি স্টলে বই চুরি হয়েছে। এ জন্য স্টল মালিকরা হকারদের সন্দেহ করছেন। এ বিষয়ে ‘ক্ষ্যাপা’র নির্বাহী সম্পাদক অপু মেহেদী বলেন, ‘আমরা প্রতিদিনের মতো স্টল খুলতে এসে দেখি, বইগুলো নেই। প্রতিদিন আমরা স্টলের টেবিলের নিচে বইগুলো রেখে যাই। কিন্তু আজ এসে বইগুলো পাইনি।’
মেলা পরিচালনা কমিটির একাধিক সূত্র জানায়, বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশের কোনো কোনো সদস্য দায়িত্বে অবহেলা করছেন।

এ বিষয়ে বইমেলা টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ড.

সেলিম রেজা বলেন, ‘হকার সমস্যা নিয়ে টাস্কফোর্সসহ আমি ব্যক্তিগতভাবে কাজ করছি। আনসার, সিকিউরিটি অফিসার রয়েছেন; এর সঙ্গে পুলিশ যুক্ত হয়েছে। পুলিশকে আমরা এই হকার ও অস্থায়ী দোকানদারদের উৎপাতের বিষয়ে আরও তৎপর হওয়ার জন্য বলেছি।’

এ বিষয়ে মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সরকার আমিন বলেন, আমাদের এখনও কেউ জানায়নি। আমরা খোঁজ নেব এবং মেলার নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের আরও তৎপর হতে বলব।

নতুন বই
গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ১৭৫টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– ফৌজিয়া খাতুন রানার ‘নিশিকথা’ (আফসার ব্রাদার্স), অরুণ কুমার বিশ্বাসের ‘ভৌতিক ও অলৌকিক’ (রাবেয়া বুকস্), কাশফী আহসানের ‘প্রিয়া বলে’ (ওয়ার্থি), সুমু খান মজলিশের ‘রেণু এখনো ভূত’ (শব্দকথা) ও জরিনা আখতারের ‘নির্বাচিত কবিতা’ (নবান্ন)।

মঞ্চের আয়োজন
গতকাল বিকেল ৪টায় মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘জীবন ও কর্ম : সৈয়দ আলী আহসান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। আবদুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুহম্মদ আবদুল বাতেন। আলোচনায় অংশ নেন তারেক রেজা ও মহিবুর রহিম।

প্রাবন্ধিক বলেন, আধুনিক বাংলা কবিতায় ভাষা ও ভাবের স্বাতন্ত্র্য সৃষ্টিতে সৈয়দ আলী আহসান পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর কবিতার গঠন ও শব্দযোজনা এমন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত যে সেগুলো অন্য কারও রচনা বলে ভুল করার অবকাশ নেই।

আলোচকদ্বয় বলেন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সমালোচনা-সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি।

এ ছাড়া সকাল ১০টায় অমর একুশে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন সুমন মজুমদার, প্রিয়াংকা গোপ ও রেজাউল করিম।

‘লেখক বলছি’ মঞ্চে আলোচনা করেন শহীদুল্লাহ ফরায়েজী ও মহিবুর রহিম।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন তারিফ রহমান ও জাহিদ হায়দার। সংগীত পরিবেশন করেন ফারজানা আক্তার পপি, দীপ্র নিশান্ত, পার্থ প্রতীম রায় প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল অন ষ ঠ ট এসস গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয় বলে জানায় জেরুজালেম পোস্ট। বিবিসি আরও দুইজন নিহতের খবর দেয়। এরপর আরেকজনের ফলে নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছাল।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ