জাতীয় দল ছাড়লেও ক্রিকেটেই থাকবেন তামিম ইকবাল খান। খেলোয়াড় হিসেবে আরও এক মৌসুম দেখা যেতে পারে তাঁকে। খেলা ছাড়ার আগে নিজেকে সংগঠক হিসেবে গড়ে তুলতে চান। ঢাকা লিগের ক্লাব কেনার মধ্য দিয়ে সে প্রক্রিয়ায় বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছেন ৩৫ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার। ফরচুন বরিশালের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমানের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব কিনেছেন তিনি।
বিপিএলের সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ক্রিকেট সংগঠক হওয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন তামিম। তিনি বলেছিলেন, রাজনীতি নয়, ক্রিকেট নিয়ে থাকতে চান। ক্রিকেট ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া তারই প্রথম পদক্ষেপ। গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ছিল বেক্সিমকো গ্রুপের। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে বেক্সিমকোর পক্ষে স্পোর্টস ক্লাব পরিচালনা করা সম্ভব হতো না। এ কারণে ক্লাবটি বিক্রি করার উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নবাগত গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কোচ বিসিবির সাবেক পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন। তামিম জানান, ক্লাবের সভাপতি করা হয়েছে মিজানুর রহমানকে। তিনি থাকছেন সহসভাপতি পদে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করা হবে বলে জানান তামিম। সভাপতি মিজানুর রহমানও ক্লাব কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিসিবির নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্রিকেট সংগঠকদের অনেকেই ক্লাব কেনার চেষ্টা করছেন। বিসিবির সাবেক পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিকের মালিকানায় থাকা ২৩টি ক্লাবের মালিকানা পেতে চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। তামিম-মিজান সে পথে না গিয়ে টাকা বিনিয়োগ করে ক্লাবের মালিকানা কিনেছেন বেক্সিমকো স্পোর্টসের কাছ থেকে।
জাতীয় দলের সাবেক একজন ক্রিকেটারের এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন আরেক সাবেক অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, ‘খুবই ভালো উদ্যোগ, একজন ক্রিকেটার ক্লাব সংগঠক হচ্ছেন। তিনি নিজের অর্থ বিনিয়োগ করছেন। একজন ক্রিকেটারের হাতে ক্লাবের মালিকানা থাকলে ভালো। তবে কাজ করতে চাইলে জেলা বা বিভাগে সম্পৃক্ত হলে উত্তম। জেলা পর্যায়ে কাজের ক্ষেত্র বেশি থাকে। কে কোথায় সংগঠক হবে, এটা ব্যক্তিগত পছন্দ। আমি তামিমকে অভিনন্দন জানাই, ক্লাবে সংগঠক হিসেবে সম্পৃক্ত হওয়ায়।’
তামিমের আগে ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন সাকিব আল হাসান। মোহামেডান ক্লাবের সদস্য তিনি। বিসিবির নির্বাচন সামনে রেখে আরও অনেক ক্রিকেটারই হয়তো ক্লাবে বিনিয়োগ করবেন। কারণ এ বছর অক্টোবরে বিসিবির নির্বাচন। পরিচালক পদে নির্বাচন না করলেও কাউন্সিলর হওয়ার সুযোগ তো থাকেই।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত ম ম ইকব ল স গঠক হ
এছাড়াও পড়ুন:
পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার পর মুসলিমদের ব্যাপকভাবে ধরপাকড় ও তাঁদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা পেহেলগামের হামলাকে ব্যবহার করে দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর দমন–পীড়ন আরও বৃদ্ধি করছে।
কাশ্মীরের পেহেলগাম শহরের কাছে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে একজন বাদে বাকি প্রায় সবাই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। পর্যটক হিসেবে তাঁরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পেহেলগামে গিয়েছিলেন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ জোরালোভাবে নাকচ করে দিয়েছে।
পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার জবাবে ভারত সামরিকভাবে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে তাদের ঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। পাকিস্তান সরকারের একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন ভারত শিগগিরই সামরিক হামলা চালাতে পারে।
এই মুহূর্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মূলত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেমন আন্তসীমান্ত নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধের হুমকি দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিজেপি সরকার ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলিমদের হয়রানি করছে। তারা এটিকে ‘অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান’ বলে দাবি করছে।
মোদির বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে কর্তৃপক্ষ এই সুযোগে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ এবং ‘রোহিঙ্গাদের’ বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। রোহিঙ্গারা মূলত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন। ‘পাকিস্তানি’ বা ‘বাংলাদেশি’ তকমা অনেক সময়েই হিন্দুত্ববাদীরা ভারতের অভ্যন্তরীণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে থাকে।
উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটক—এই দুই রাজ্যে মুসলিমদের হত্যার খবর পাওয়া গেছে। গণমাধ্যমের খবরে সেগুলোকে বিদ্বেষমূলক অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরে ইতিমধ্যেই শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে যাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক সরকারি কর্মকর্তার মতে, প্রায় দুই হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে, যা অনেকটা সমষ্টিগত শাস্তির মতো।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি