Samakal:
2025-09-18@06:52:28 GMT

সার্চের প্রশ্নে এআই বিতর্ক

Published: 16th, February 2025 GMT

সার্চের প্রশ্নে এআই বিতর্ক

বিশ্বজুড়েই বাড়ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দৌরাত্ম্য। এআই প্রযুক্তির উন্নয়নে অনেক দেশ আগ্রহী। প্যারিস সম্মেলনে বক্তারা এআই পরিচালিত ভবিষ্যতের জন্য মানবিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। আবার এআই প্রযুক্তি নিয়ে কিছুটা শঙ্কাও ছড়ান। প্যারিস সম্মেলনে ঘোষণা আসে, পরের আন্তর্জাতিক এআই সামিটের আয়োজক হবে ভারত। লিখেছেন সাব্বিন হাসান

গুগল বা এআই সার্চের মধ্যে মৌলিক তফাত কোথায়– এমন প্রশ্ন অনেকেরই। গুগল ছাড়া অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিনে যখনই কিছু টাইপ করে সার্চ করেন, তখন ওই বিষয়ে বহু তথ্যচিত্র ও লেখা স্ক্রিনে দৃশ্যমান হয়। প্রয়োজনে পরপর ক্লিক করে তা পড়ে নিতে পারেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে প্যারিস সম্মেলনে অনেকেই শুনিয়েছেন আশঙ্কার কথা। অনেকে আবার বলেছেন অমিত সম্ভাবনার কথা।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়ে প্রায় সবারই কমবেশি ধারণা জন্মেছে। মূল কথা, জটিল সব কাজ আগের তুলনায় এখন এআই প্রযুক্তির কল্যাণে অনেক সহজলভ্য হয়ে যাচ্ছে। বিপরীতে ক্ষতির দিকটি হলো, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভবিষ্যতে মানবীয় কাজে চূড়ান্ত ভাগ বসাতে পারে। অনেকে হারাতে পারেন কর্ম; বিনষ্ট হতে পারে মানবীয় সক্ষমতা ও সৃজনশীলতা।

সহজে বললে, সব ধরনের কাজকেই নিমেষে তুড়ি বাজিয়ে করে দিচ্ছে এআই প্রযুক্তি। দিনে দিনে এমন প্রযুক্তির সক্ষমতা কল্পনাকেও হার মানাবে।
ফলে আর কাজের জন্য মানুষ নয়, প্রয়োজন হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। সময় বলছে, এআই দিব্যি কবিতা লিখে ফেলছে। তাহলে আগামী দিনে কবির কদর কমে যাবে। এসবের চেয়ে রয়েছে বড় বিপদ। বিষয়টি আলোচনায় খুব কমই এসেছে। প্যারিসে এআই অ্যাকশন সম্মেলনে কয়েকটি দেশের শীর্ষ নেতারা এমন কথাই বলেছেন।

স্বাভাবিকভাবে ওপরের দিকে আসা কয়েকটা লেখা পড়ি। বাকি সব খুলে দেখি না। ওই ওপরে থাকা সব লেখার ভিত্তিতেই তৈরি হয় মতামত। কিছু সার্চ করলে কোন ওয়েবসাইটের লেখা প্রথমে আসবে আর কোনটা শেষের দিকে আসবে– সেসবই ঠিক করে গুগল উদ্ভাবিত নিজস্ব অ্যালগরিদম। যার রহস্য অনেকেরই অজানা। সার্চ আগ্রহীরা শুধু দেখতে পাই, গুগল কী দিচ্ছে। কেন দিচ্ছে, তার সদুত্তর জানা নেই। প্রায় সবার প্রত্যাশা, তার ওয়েবসাইটে লেখা গুগল সার্চে ওপরের সারিতে দৃশ্যমান হোক। যেন বেশি ভিউ হয়। এমন চাহিদা পূরণে পেছনে যা কাজ করে, তাকে বলা হয় (এসইও) সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন।
এমন প্রত্যাশা পূরণে শুধু চেষ্টাই করা সম্ভব। সিদ্ধান্ত কিন্তু নেয় গুগল অ্যালগরিদম। এবার জানা যাক এআই সার্চের কথা। যেমন জেমিনি বা কো-পাইলটের মতো অ্যাপ্লিকেশন ব্রাউজার খুলবেন। তার পর টাইপ করে কিছু জানার আগ্রহ প্রকাশ করবেন। এআই চাহিদা পূরণে প্রত্যাশিত লেখা তৈরি করে দেবে। যতটুকু ও যেভাবে চাইবেন, ঠিক সেভাবে লেখা তৈরি করবে। সারাংশ (সিনপসিস) চাইলে ছোট লেখাই দেবে। ঠিক কোথা থেকে তথ্য নিয়ে জেমিনি বা কো-পাইলট লেখাটা তৈরি করল, তা কিন্তু জানার সুযোগ নেই। কিছু তথ্য খুঁজলে গুগল অন্তত পঞ্চাশের বেশি কনটেন্ট সামনে হাজির করবে। ওখান থেকে সব পড়ে নিজের প্রয়োজন পূরণ করে– এমন লিঙ্কে যেতে পারবেন। এআই চাহিদা পূরণে প্যারাগ্রাফ তৈরি করে দেবে। সহজেই যা বুঝতে পারবেন। বিশেষজ্ঞদের ঠিক এখানেই চিন্তা। গুগল অ্যালগরিদম দেখতে পান, কিন্তু ঠিকঠাক বুঝতে পারেন না। এআই প্রযুক্তি অ্যালগরিদম বুঝতে পারবে না। আর তা অনুমান করা সহজও নয়। ফলে এমন প্রযুক্তির সাহচর্যে অসত্য তথ্য, ভুয়া তথ্য, পক্ষপাতদুষ্ট তথ্য দৃশ্যমান হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়।

ভুল তথ্য পরিবেশনের কারণে জানার জায়গাটা অসত্য হয়ে যাবে। ভুল বুঝব। যার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী ও মারাত্মক ক্ষতিকর। অনেকেই রাজনৈতিক তথ্য জানার প্রয়োজনে (পলিটিক্যাল ন্যারেটিভ) তৈরিতে এআই প্রযুক্তির শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। অনেকে বিজনেসে আনডিউ অ্যাডভান্টেজ নিতে এআইমুখী হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নিজের অজান্তে তথ্য প্রতারণার মুখোমুখি হতে পারেন। প্যারিস সম্মেলনে বক্তারা এআই প্রযুক্তির অ্যালগরিদমকে পক্ষপাতদুষ্ট তথ্য পরিবেশন থেকে বিরত রাখার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। প্যারিস সম্মেলনে বক্তারা এআই পরিচালিত ভবিষ্যতের জন্য মানবিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। আবার এআই প্রযুক্তি নিয়ে কিছুটা সতর্ক করেন।
সারাবিশ্বে এআই প্রযুক্তির বিকাশে কর্মসংস্থান কি কমবে– এমন প্রশ্ন উঠছে স্বাভাবিকভাবেই। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ইতিহাস বলছে, প্রযুক্তি বিকাশে মানুষের কাজ কখনও কমেনি, বরং কাজের মানোন্নয়ন হয়েছে, ধরন বদলেছে। ঠিক এমন যুক্তিতেই এআই পরিচালিত ভবিষ্যতের জন্য মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করতে হবে।
প্যারিস সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অংশ নেন। ছিলেন বিশ্বের নানা দেশের প্রতিনিধিরা। 

প্যারিস মঞ্চে জানানো হয়, পক্ষপাতহীন মানোন্নত ডেটা সেন্টার তৈরি করতে হবে। সারাবিশ্বের কাছে এমন ওপেন সোর্স সিস্টেম তৈরি করতে হবে, যা বিশ্বাস ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করবে, মানুষের কল্যাণে কাজে লাগবে। এআই প্রযুক্তির সুবিধা যেন সমভাবে সবাই পায়, সেদিকে বিশেষ নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেন বিশ্বনেতারা।

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ত র ম ব দ ধ মত ত র জন য ম ন এমন প

এছাড়াও পড়ুন:

এদের কোনো দিন শিক্ষা হবে না

আগের পর্বআরও পড়ুন‘বাংলাদেশের কি সুপারফোরে ওঠার চান্স আছে?’১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ