মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশদের যৌথভাবে দাখিল করা নামজারির আবেদন বণ্টননামা দলিল না থাকার অজুহাতে নামঞ্জুর করা যাবে না।

সম্প্রতি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত জমি বা স্থাবর সম্পত্তি নামজারির বিষয়টি স্পষ্টীকরণ করে পরিপত্র জারি করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, ওয়ারিশসূত্রে অর্জিত জমির মালিকদের নামজারি দুভাবে হতে পারে। কোনো মৃত ব্যক্তির সব ওয়ারিশের নাম একটি খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ওয়ারিশরা যৌথভাবে নামজারির আবেদন করতে পারেন। যৌথভাবে নামজারি (জমাভাগ ছাড়া) করার ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র বা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনারদের কাছ থেকে ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করে আবেদনের সঙ্গে দাখিল করতে হবে।

এ ধরনের আবেদন পাওয়ার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) নামজারি মামলা দায়ের করে খতিয়ানে মৃত ব্যক্তির মোট জমির মধ্যে প্রত্যেক ওয়ারিশের প্রাপ্য হিস্যা উল্লেখপূর্বক নামজারি খতিয়ান সৃজন করে দেবেন। এ ক্ষেত্রে বণ্টননামা দলিলের প্রয়োজন হবে না।

অন্যদিকে ওয়ারিশরা যদি জমাভাগের মাধ্যমে পৃথক পৃথকভাবে খতিয়ান সৃজন করে আলাদা-আলাদাভাবে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে চান তাহলে ওয়ারিশরা প্রাপ্যতা অনুযায়ী কে কোন দাগে বা একটি দাগের কোন অংশে জমি ভোগ-দখল করতে চান সকল ওয়ারিশ মিলে তা নির্ধারণ করে একটি আপস বণ্টননামা দলিল সম্পাদন করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

এভাবে সৃজিত বণ্টননামা দলিল ব্যবহার করে ওয়ারিশরা পৃথক পৃথকভাবে নামজারির আবেদন করলে প্রত্যেক ওয়ারিশের নামে পৃথক পৃথক নামজারি খতিয়ান সৃজন করা যাবে।

অনলাইনেই করতে হবে নামজারির আবেদন

পরিপত্রে আরও বলা হয়, উত্তরাধিকারমূলে প্রাপ্ত জমি বা স্থাবর সম্পত্তি ওয়ারিশ সনদমূলে উত্তরাধিকাররা যৌথভাবে নামজারি বা রেকর্ড সংশোধনের আবেদন করলে অনেক ক্ষেত্রে তা নামঞ্জুর করা হচ্ছে। ফলে নাগরিকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বণ্টননামা দলিল ছাড়া শুধু ওয়ারিশ সনদমূলে খতিয়ানে মৃত ব্যক্তির মোট জমির বিপরীতে প্রত্যেক ওয়ারিশের প্রাপ্য হিস্যা উল্লেখ করে সকল ওয়ারিশদের নামে যৌথ খতিয়ান তৈরি আইনসিদ্ধ।

তবে জমাভাগের মাধ্যমে প্রত্যেক ওয়ারিশের নামে পৃথক পৃথক খতিয়ান তৈরির ক্ষেত্রে ‘রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০’ এর ১৪৩(খ) উপধারা অনুযায়ী অবশ্যই বণ্টননামা দলিলের ভিত্তিতে নামজারি করতে হবে।

সুতরাং মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ব্যক্তিদের আগের খতিয়ান (মৃত ব্যক্তির নামে) ভেঙে পৃথক পৃথক খতিয়ান সৃজনের মাধ্যমে জমাভাগ করার ক্ষেত্রেই শুধু বণ্টননামা দলিল আবশ্যক বলেও জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্ট সবাইকে মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশদের যৌথভাবে দাখিল করা নামজারির আবেদন বণ্টননামা দলিল না থাকার অজুহাতে নামঞ্জুর করা থেকে বিরত থাকার জন্যও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন// 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির বক্তব্য একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে

দেশের চলমান সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে শ্রমিকসহ সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। তিনি বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনে সংস্কার নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছি, ইসি কিছু বিষয়ে দ্বিমত জানাচ্ছে; ইসির বক্তব্য একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। তারা একটি বিশেষ দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার আয়োজন করছে বলে মনে হচ্ছে।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে ‘মে দিবসের আহ্বান ও ২৪–এর গণ–অভ্যুত্থানের প্রেরণায়: নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে শ্রমিকের ন্যায্য হিস্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন সারোয়ার তুষার। এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে দলের শ্রমিক উইং।

নির্বাচনের আগে ইসি পুনর্গঠন এবং ইসি সংস্কার করতে হবে উল্লেখ করে সারোয়ার তুষার বলেন, সংশয় তৈরি হয়েছে যে এই ইসি আসলে কার ইসি, এই ইসি আসলে কী চায়। এই ইসি দ্বারা আদৌ সুষ্ঠু নির্বাচন করা যাবে কি না, প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যে আইন, যে বিধান দ্বারা এই ইসি পরিচালিত হয়, এই বিদ্যমান আইন এবং এই বিদ্যমান বিধানে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ফলে আগামী নির্বাচনের আগেই ইসির সংস্কার করাটা সবচেয়ে জরুরি।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, বর্তমান সমাজব্যবস্থায় শ্রমিকদের ‘দাস’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁদের কোনো স্বাধীন সত্তা নেই। তাঁদের ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কখনো ১২ ঘণ্টা শ্রমের বিনিময়ে যে সামান্য অর্থ দেওয়া হয়, তাতে জীবনধারণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি, নাগরিকের মুক্তি, শ্রমিকের মুক্তির জন্য আমাদের সুস্পষ্টভাবে কাজ করতে হবে এবং সেটাই হবে আগামী নতুন বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য মুক্তি এবং নতুন বন্দোবস্ত।’

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ চলমান সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। সংস্কারের মাধ্যমে শুধু কোনো একক দল যেন সুবিধা না পায়, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের প্রতিটি স্তর বঞ্চিত হয়েছি। ৪৭–পরবর্তী সময়ে বঞ্চিত হয়েছি। ৭১–পরবর্তী সময়ে বঞ্চিত হয়েছি। ৯০–পরবর্তী সময়ে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। সর্বশেষ আমরা ২০২৪–এ এসে দাঁড়িয়েছি। আমাদের মাথায় রাখতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের দায় রয়েছে।’

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, দেশের পোশাক খাতে একটি মালিকবান্ধব ব্যবস্থা দাঁড় করানো হয়েছে। এখানে শ্রমিকদের শোষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, অচিরেই এ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। শ্রমিক অঞ্চল থেকে বিপ্লব গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি শ্রমিকদের বিদ্যমান এ অবস্থায় রাখতে চায় না। বাংলাদেশ পুনর্গঠনে এনসিপি শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করবে এবং তাদের পাশে থাকবে।

এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের সংগঠক রহমতউল্লা রবিন নিহালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক রিয়াজ মোর্শেদ, দলের শ্রমিক উইংয়ের যুগ্ম সমন্বয়ক শাহ আলম, আল আমিন, সজিব ওয়াফি, আবু আবদুল্লাহ, সদস্য ফয়সাল আহমেদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ