বন্দরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুলাঙ্গার সন্তান জহিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী কাকলী বেগমের বিরুদ্ধে। গত রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারী) পুরান বন্দর মোল্লাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। 

অবহেলা কারনে চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে  ভূক্তভোগী  পিয়ারা বেগম। গণমাধ্যমের কাছে এমন কথা  জানিয়েছে নির্যাতিত মা পিয়ারা বেগম। এ ঘটনায় সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী মা পিয়ারা বেগম। 

মৃত্যু পথযাত্রী মা পিয়ারা বেগম আরো জানান, তার গর্ভজাত সন্তান জহিরুল ইসলামকে তার বিষয় সম্পত্তি লিখে দেয়ার পর তাকে তার ছেলে ও পুত্রবধূ কাকলী মিলে ক্যান্সার হয়েছে তুমি বাড়িতে থাকলে এ রোগ আমাদেরও হবে এ কথা বলে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।  পরে মা পিয়ারা তার কন্যার বাসা নবীগঞ্জে গিয়ে আশ্রয় নেন। 

কান্না জড়িত কন্ঠে মা পিয়ারা বেগম আরো বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর এ সন্তানদের অনেক কষ্ট করে লেখা পড়া শিখিয়ে মানুষ করেছিলাম জীবনের শেষ বয়সে এসে একটু শান্তিতে বসবাস করব। কিন্ত তা আমার ভাগ্যে জোটেনি। আমার ক্যান্সার ধরা পরেছে। ডাক্তার বলেলে আমার সময় বেশী নেই। কবে মরে যাই জানি না।

ছেলে আমার কোন খোঁজ নেয়না। আমি আমার বাড়িঘর ছেলের নামে লিখে দেয়ার পর সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমাকে কোর প্রকার ভরন পোষন দেয়না। অবশষে আমি নিরুপায় হয়ে আদালতের ধ্বারস্থ হই। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নিয়ে গেলে সে আদালতে আমার ভরনপোষন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু আমি তো মা আমি তাকে নিজ জিম্মায় জামিন করাই। 

পরে সে আদালত থেকে ফিরে এসে আমাকে মারধর করে। এ বিষয়ে আমি বন্দর থানা, পুলিশ সুপার সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ করি যাতে আমার ছেলে আমার খোঁজ খবর নেয়। তাতে আমি কোন প্রতিকার পাইনি। 

গত রোববার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা আমাকে ঘরে ঢুকয়ে দিয়ে যাওয়ার পরও আমাকে আবারো বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমার ছেলে আমার উপর এমন অত্যাচার করবে আমি কখনো কল্পনাও করিনি। আমি যত দিনই বেঁচে থাকব ততদিন আমার চিকিৎসার প্রয়োজন।

কিন্তু আমাকে আমার ছেলে দেখছে না। তবে আমার ছেলে যেন আমার খোঁজ নেয়। আমার শেষ সময়টুকু আমাকে শান্তিতে মরতে দেয়। এই প্রত্যাশা করি। 

এ বিষয়ে জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি যখন বিদেশে ছিলাম তখন আমি আমার মায়ের কাছে টাকা দিয়েছি সব টাকা আমার বোনদের দিয়ে দিয়েছে। গত রোববার স্থানীয় শালিসগণ মাকে ঘরে দিয়ে যাওয়ার পর মা নিজেই বাড়ি থেকে চলে গেছে। 

এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলামের সাথে আলাপ কালে তিনি সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠালে সেখানে ভুক্তভোগী পিয়ারা বেগমকে পাওয়া যায়নি।  
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আম র ছ ল ল ইসল ম ব র কর য় র পর

এছাড়াও পড়ুন:

বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা

বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ চিহ্নিত ১৫ জন জীবিতকে হাজির করাতে পারলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নেবেন। বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবীদের এ আশ্বাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচী এ আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া দেওয়া হলে তাঁরা অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

আবেদনকারীদের উদ্দেশে দুই বিচারপতি বলেছেন, প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বা ত্রুটি পাওয়া গেলে অবশ্যই তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

মামলাকারীদের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য খসড়া ভোটার তালিকা পেশ করার ওপর স্থগিতাদেশ দেননি। তবে ইসিকে তাঁরা বলেছেন, তাদের কাজ গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া নয়। তাদের দেখা উচিত যাতে গণহারে ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা যায়।

এসআইআর–প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংশোধনের পর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ আগস্ট। সে লক্ষ্যেই ইসি এগিয়ে চলেছে। ইসি সূত্রে খবর, নিবিড় সংশোধনপ্রক্রিয়ার পর প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে ৬৫ লাখেরও বেশি নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২২ জন ‘মৃত’, ৩৬ লাখ ‘নিখোঁজ’। এ ছাড়া বেশ কয়েক লাখ ভোটারের নাম বিভিন্ন এলাকার তালিকায় রয়েছে। অর্থাৎ একই ভোটার অন্তত দুই জায়গায় নথিভুক্ত। আগের তালিকা অনুযায়ী বিহারে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৮৯ লাখ। ইসির দাবি, এই তালিকায় বহু ভোটার ভুয়া। তাদের বাদ দিতেই এই নিবিড় সংশোধন।

যে প্রক্রিয়ায় এই খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, মামলাকারীদের আপত্তি তা নিয়েই। তাঁদের অভিযোগ, ইসি যেভাবে নাগরিকত্বের যাচাই করছে, সে জন্য যেসব নথি পেশ করতে বলা হচ্ছে, তা বহু ক্ষেত্রে সম্ভবপর নয়। তেমন করা তাদের কাজও নয়। সেই কাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে বহু দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকার ইসি কেড়ে নিচ্ছে।

গত সোমবার ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে আশ্বস্ত করে বিচারপতিরা বলেন, কমিশনের ত্রুটি–বিচ্যুতি দেখলে তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ভোটার প্রমাণে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডকে নথি হিসেবে গ্রাহ্য করার সুপারিশ বিচারপতিরা জোরের সঙ্গে করেছেন। এই দুই নথি জাল করা সহজ বলে ইসির দাবি নস্যাৎ করে বিচারপতিরা বলেছেন, যে ১১টি নথির ওপর নির্ভর করে তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেগুলোর প্রতিটিই জাল করা সম্ভব। কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে বিচারপতিরা বলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ অথচ আসলে জীবিত, এমন ১৫ জনকে আপনারা হাজির করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব।

আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে ৮ আগস্টের মধ্যে মামলাকারীদের বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে পেশ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ