রূপকথার ড্রাগনের কথা আমরা অনেকেই জানি। দেখতে ভয়ানক হলেও বাস্তবে সেই প্রাণীর কোনো অস্তিত্ব নেই। তবে উত্তর থাইল্যান্ডের লুকানো গুহায় অনুসন্ধানের সময় বিজ্ঞানীরা ছোট ড্রাগনের মতো দেখতে নতুন প্রজাতির পোকার খোঁজ পেয়েছেন। মিলিপেড প্রজাতির পোকাটির নামকরণ করা হয়েছে ডেস্মোক্সাইটিস চাফা প্রিন্সেস ড্রাগন মিলিপেড। থাই ভাষায় চাফা শব্দের অর্থ রাজকন্যা। থাইল্যান্ডে পরিবেশ সংরক্ষণে রাজকুমারী মহা চক্রী সিরিনধর্নরের প্রতি সম্মান জানাতে এই নাম রাখা হয়েছে।

চুনাপাথরের মতো দ্রবণীয় শিলা থেকে গঠিত হওয়ায় উত্তর থাইল্যান্ডের ফা দায়েং গুহার বাস্তুতন্ত্র অন্বেষণ করতে যান একদল বিজ্ঞানী। এরপর সেখানকার পাথুরে পরিবেশে বেড়ে ওঠা প্রাণী সম্পর্কে অনুসন্ধান করেন তাঁরা। এমন এক অভিযানের সময় ছোট কাঁটাযুক্ত নতুন প্রজাতির পোকাটিকে স্যাঁতসেঁতে গুহার দেয়ালে আঁকড়ে থাকতে দেখা যায়।

প্রিন্সেস ড্রাগন মিলিপেড প্রায় এক ইঞ্চি লম্বা। শরীরে ২০টি তীক্ষ্ণ অংশ রয়েছে, যা দেখতে ক্ষুদ্র কাঁটার মতো। এই কাঁটাযুক্ত গঠন এটিকে ড্রাগনসদৃশ চেহারা দেওয়ার পাশাপাশি শিকারিদের বিরুদ্ধে এক প্রকার সুরক্ষা দেয়। এর গাঢ় বাদামি রং এটিকে শেওলা আচ্ছাদিত গুহার পৃষ্ঠের সঙ্গে মিশে যেতে সাহায্য করে। কার্যকর ছদ্মবেশ নিতে পারে। এর লম্বা, সরু পা ও অ্যানটেনা এটিকে পিচ্ছিল পাথরে নির্ভুলভাবে চলাচল করতে সাহায্য করে। গুহার ঠান্ডা ও আর্দ্র পরিস্থিতি—শেওলা ও শৈবালের উপস্থিতির সঙ্গে মিলিত হয়ে একটি নিখুঁত অণু বাসস্থানে বাস করছে এটি।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ডেস্মোক্সাইটিস চাফার জিনোম একই বংশের অন্যান্য পরিচিত মিলিপেডের প্রজাতির চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ ভিন্ন। বিজ্ঞানীরা একই গুহায় গোলাপি পা থাকা আরও একটি নতুন প্রজাতির পোকা নথিভুক্ত করেছেন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নত ন প

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ মোহন কলেজের চলমান সংকট নিরসনের দাবি

ময়মনসিংহ নগরের আনন্দ মোহন কলেজের চলমান সংকট নিরসনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আজ দুপুর ১২টার দিকে মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

কলেজ চত্বরে মিছিল করে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ সারোয়ার। সংবাদ সম্মেলনে কলেজের ভবিষ্যৎ, শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা ও কলেজের প্রশাসনিক সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়।

রিয়াদ সারোয়ার বলেন, দুই মাস ধরে কলেজে অধ্যক্ষ না থাকায় প্রশাসনিক শৃঙ্খলা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। নবনির্মিত হিন্দু হলটি এখনো চালু হয়নি। হিন্দু শিক্ষার্থীরা তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা বৈষম্যমূলক। শিক্ষার্থীদের প্রশংসাপত্র ও ছাড়পত্র উত্তোলনসহ অন্যান্য কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অধ্যক্ষ না থাকায় কলেজের সার্বিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। সন্ধ্যার পর কলেজ প্রাঙ্গণে মাদকসেবীরা অবস্থান করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেন ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ। দাবিগুলো হলো অবিলম্বে অধ্যক্ষ পদায়ন, পদায়নের আগপর্যন্ত কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে জেলা প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ, পদায়নপ্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা, হিন্দু হল দ্রুত চালু, প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, ছিনতাইকারী ও মাদকসেবীদের দমনে যথাযথ ব্যবস্থা এবং কলেজ ক্যাম্পাসে একটি পুলিশ বক্স স্থাপন করা।

প্রসঙ্গত, আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ আমান উল্লাহকে গত ৩১ জুলাই ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করায় ৩ আগস্ট বিকেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন উপাধ্যক্ষ সাকির হোসেন। তাঁর অপসারণ দাবিতে ১২ আগস্ট থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আন্দোলন শুরু করে। অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। ১৮ আগস্ট কলেজের নতুন একাডেমিক ভবনের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগে একাডেমিক কাউন্সিল ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা ডাকা হয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের ভেতরে শিক্ষকদের নিয়ে সভা করছেন—এই খবরে শিক্ষার্থীরা ফিন্যান্স বিভাগেও তালা ঝুলিয়ে দেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাদা কাগজে লেখেন, ‘আনন্দ মোহন কলেজের চলমান সংকট উত্তরণ না হওয়া পর্যন্ত আমি কোনো প্রকার দায়িত্ব পালন করব না’। এরপর পুলিশি পাহারায় কলেজ ত্যাগ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাকির হোসেন। এর পর থেকে তিনি আর কলেজে যেতে পারছেন না।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাকির হোসেন বলেন, ‘আমিও চাই কলেজের চলমান সংকট নিরসন হোক। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যে আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, আমার ত্রুটি কোথায়? আমার কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই, কারও পক্ষপাতিত্ব করেছি এমনও না। তাহলে কেন বিনা কারণে তারা এমন করল? আমি চাই, আমি থাকি বা না থাকি, কলেজটি ভালোভাবে চলুক।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ