গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হলে অনেক কারখানা বন্ধ হবে: বিটিএমএ সভাপতি
Published: 18th, February 2025 GMT
গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হলে একটার পর একটা কারখানা বন্ধ হবে বলে মন্তব্য করেন বস্ত্রমালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ। সেটা হলে বাংলাদেশের বস্ত্র খাত কোনো দিন টেকসই হবে না। নতুন বিনিয়োগ আসবে না। কোনো ব্যাংক নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে না।
বস্ত্র খাতের যন্ত্রপাতির সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী ঢাকা আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট মেশিনারি এক্সিবিশন (ডিটিজি) নিয়ে বিস্তারিত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন শওকত আজিজ। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন।
সম্প্রতি শিল্প ও ক্যাপটিভের প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ টাকা ও ৩১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা বাড়িয়ে দ্বিগুণের বেশি করার প্রস্তাব দিয়েছে পেট্রোবাংলা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিটিএমএ আজ এই সংবাদ সম্মেলন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী বৃহস্পতিবার চার দিনব্যাপী ডিটিজি শুরু হবে। এবার প্রদর্শনীতে ৩৩টি দেশের ১ হাজার ৬০০ স্টল থাকবে।
মেলায় টেক্সটাইল যন্ত্রপাতি, ফেব্রিক, ফিলামেন্ট, কেমিক্যালস, ডাইং প্রযুক্তি ও এক্সেসরিজ প্রদর্শিত হবে। এ ছাড়া থাকবে টেকসই উৎপাদন ও আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনার। থাকবে ডিটিজি ফ্যাশন শো। এই প্রদর্শনী হবে এক ছাদের নিচে দেশি-বিদেশি পেশাদার, উৎপাদক ও সরবরাহকারীদের একত্র হওয়ার সুযোগ।
প্রদর্শনীটির লক্ষ্য হলো, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সংশ্লিষ্ট শিল্পে আরও বিনিয়োগে আগ্রহী করে তোলা এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় ঘটানো।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রদর শ
এছাড়াও পড়ুন:
দেড়শ বছর টিকে আছে বালিকান্দি চামড়ার হাট
প্রায় দেড়শ বছর আগে মৌলভীবাজারের বালিকান্দি গ্রামে গড়ে ওঠে চামড়ার হাট। কোরবানির ঈদ এলেই মনু নদী তীরবর্তী গ্রামের এ হাটে চামড়া কেনাবেচা চলে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত। ক্রেতা-বিক্রেতা, শ্রমিকের আনাগোনায় উৎসবমুখর থাকে বালিকান্দি বাজার।
মৌলভীবাজার জেলায় চামড়া কেনাবেচার একমাত্র হাট বালিকান্দি বাজার। জল ও স্থলপথে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় এটি দ্রুত বিভিন্ন এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। স্থানীয় বাজারে চা স্টলের মালিক আব্দুল করিম জানান, তারা বাপ-দাদার আলোচনায় শুনেছেন, চার-পাঁচ পুরুষ আগে এ ব্যবসার যাত্রা শুরু। এক সময় খুব জমজমাট ছিল এ হাট। তিনিও এক সময় চামড়া কেনাবেচায় জড়িত ছিলেন। ব্যবসায় লস খাওয়ায় চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন এখন।
জানা যায়, ১৮৬০ থেকে ১৮৭০ সালের দিকে এ বাজারের যাত্রা। এখন এ ব্যবসার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। ট্যানারি মালিকরা টাকা আটকে রাখায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। চামড়া বেচাকেনা যখন জমজমাট ছিল, তখন ঈদকেন্দ্রিক বাজার সরব থাকত।
স্থানীয়রা জানান, অতীতে ঈদকেন্দ্রিক মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ শতাধিক মানুষ চামড়া কেনাবেচা করতেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মাংস ছিলে লবণ লাগিয়ে বড় পুঁজির ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেন। বড় ব্যবসায়ীরা আগেকার দিনে ঢাকার হাজারীবাগ এবং নাটোরে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতেন। শওকত মেম্বার, সানুর মিয়া, আনোয়ার মিয়া, মো. তারণ, মিন্টু মিয়া, সুলেমান মিয়ারা তাদের আদি পুরুষের ব্যবসার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।
গত ৭ জুন ঈদের দিন সন্ধ্যায় সরেজমিন বালিকান্দি চামড়ার বাজারে যেতে দেখা যায় চামড়াবোঝাই ছোট-বড় ট্রাক-পিকআপ, টমটম, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভিড়ে জ্যাম লেগে গেছে। ফাঁড়ি রাস্তায় যেতে হয়েছে বালিকান্দি বাজারে। সেখানে শামিয়ানা টানিয়ে সড়কের পাশে, কোথাও সড়কের অংশজুড়ে চলছে চামড়া থেকে মাংস সরানোর কাজ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এ কাজ করছেন।
চামড়া ব্যবসায়ী সুলেমান মিয়া জানান, ঈদের সময় বালিকান্দি বাজারে এখনও ১৫ থেকে ১৬ হাজার চামড়া কেনাবেচা হয়। এতে এক দিনে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়। এবার গরুর আকারভেদে দেড়শ থেকে ৬০০ টাকা দরে চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। চামড়া বিক্রি করতে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা তাফাজ্জুল বিন ফারুকী রাজনগরী জানান, চামড়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দেড়শ-দুইশ টাকায় প্রতি পিস চামড়া কিনেছেন। এতে ট্রাক ভাড়া ও অন্যান্য খরচ ওঠানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শওকত মিয়া মেম্বার সমকালকে জানান, ব্যবসার মজা শেষ হয়ে গেছে ২০১৩ সাল থেকে। আগে ঈদ এলেই ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধ করে দিতেন। এখন বছরের পর বছর যাওয়ার পরও পাওনা টাকা পরিশোধ করেন না। গত বছরের পাওনা ৫৫ লাখ টাকার মাঝে এবার ঈদের আগের দিন ট্যানারি মালিক মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এ বছর চার হাজারের বেশি চামড়ায় লবণ লাগিয়ে রেখেছেন। আরও কিছু লবণযুক্ত চামড়া কেনার জন্য দাম-দর চলছে। তিনি জানান, এ বছর বড় গরু কোরবানি দেওয়ার সংখ্যা খুব কম। ছোট চামড়ার সংখ্যাই বেশি।