তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ দেবে ফেলোশিপ, আবেদন শেষ কাল বৃহস্পতিবার
Published: 19th, February 2025 GMT
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে গবেষণায় ফেলোশিপ বা বৃত্তির আবেদন চলছে। আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদনের শর্ত পূরণ সাপেক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ পাবেন।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আইসিটি খাতে গবেষণার জন্য ফেলোশিপ প্রদান, আইসিটি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনীমূলক কাজে উৎসাহ প্রদানের জন্য ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানকে অনুদান ও বিশেষ অনুদান প্রদানের লক্ষ্যে আবেদন গ্রহণের সময়সীমা ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো। নীতিমালায় বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন আগ্রহী দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, গবেষক ও প্রত্যাশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন আহ্বান করা যাচ্ছে।
আবেদন করার পদ্ধতি—
ফেলোশিপ বা বৃত্তির জন্য আবেদনে কয়েকটি ধাপ রয়েছে।
ধাপ ১: ওয়েবসাইটের হোম পেজ ওপেন করে শুরুতে স্লাইডে দেখানো ‘আবেদন করুন’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
আরও পড়ুনহার্ভার্ডে বৃত্তি নিয়ে এমবিএ’র সুযোগ বাংলাদেশিদের ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ধাপ ২:
ক.
রেজিস্টার্ড ইউজার হলে ই–মেইল অ্যাড্রেস ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে পারবেন।
খ. রেজিস্টার্ড ইউজার না হলে রেজিস্ট্রেশন ফরমটি যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। এ জন্য অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন বাটনে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুনপ্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বৃদ্ধি, বিদ্যালয়কে লাল–হলুদ ও সবুজ শ্রেণিতে ভাগ করার সুপারিশ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫অ্যাকাউন্ট তৈরির পর ই–মেইলে ভেরিফিকেশন লিংক পাঠানো হবে। ভেরিফিকেশন লিংকে ক্লিক করে নিজের ই–মেইল ভেরিফাই করে নিতে হবে। ই–মেইল ভেরিফিকেশনের পর আবেদনকারীর মুঠোফোন নম্বর ভেরিফিকেশন করতে হবে। এ জন্য প্রথমবার লগইন করার পরে মুঠোফোন নম্বরে চার ডিজিটের একটি কোড যাবে, সেই কোড লগইন–পরবর্তী পেজে সাবমিট করে মুঠোফোন নম্বর ভেরিফাই করতে হবে। উল্লেখ্য যে ভেরিফিকেশন ই–মেইলটি Spam/Inbox-এ যেতে পারে। যদি স্প্যাম ফোল্ডারে ই–মেইলটি থাকে, তবে ই–মেইলটি Not Spam করে Inbox-এ নিয়ে আসুন। ক্ষেত্রবিশেষে মুঠোফোনে কোড যেতে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।
ধাপ ৩: পেজের ওপরে ডান পাশে ‘আবেদন করুন’ বাটনে ক্লিক করুন। নির্ধারিত চার ধরনের আবেদনের খাত থেকে আপনার পছন্দের খাতের নিচের ‘আবেদন করুন’ বাটনে ক্লিক করুন। আবেদনপত্রের সব তথ্য যথাযথ ও সঠিকভাবে দিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করুন।
ধাপ ৪: আবেদনপত্র পূরণের সময় যেকোনো অবস্থায় নিচের বাঁ পাশের ‘Save As Draft’ বাটনে ক্লিক করে সেই আবেদন খসড়া হিসেবে সংরক্ষণ করতে পারবেন, যা পরে আগের অবস্থা থেকে আবার সম্পাদনা শুরু করা যাবে।
সবশেষে সব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ সম্পন্ন হলে নিচে ডান পাশের ‘প্রিভিউ দেখুন এবং জমা দিন’ বাটনে ক্লিক করলে পূরণকৃত আবেদনপত্রের প্রিভিউ দেখতে পারবেন এবং ‘ফিরে যান এবং সম্পাদনা করুন’ বাটনে ক্লিক করে ফিরে গিয়ে আবার সম্পাদনা করতে পারবেন অথবা ‘শেষ এবং জমা দিন’ বাটনে ক্লিক করে আবেদনপত্রটি জমা দিতে পারবেন।
আবেদনের পদ্ধতিসহ বিস্তারিত দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ল ক কর ন
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৭ সালের জুনের পর ‘করছাড়’ থাকবে না
২০২৭ সালের জুন মাসের মধ্যে শুল্ক-কর সংক্রান্ত সব ধরনের কর অব্যাহতি যৌক্তিক হারে কমিয়ে আনতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় এই লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। কর অব্যাহতি তুলে দেওয়ার ‘উচ্চ’ অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি এনবিআর মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল নামে ১০ বছরের একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেখানে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, প্রতি অর্থবছরে এনবিআরকে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকার মতো করছাড় দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, এই করছাড় না দিলে সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে আরও বেশি খরচ করতে পারত। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৭ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের পর আইন অনুসারে কিছু ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি থাকবে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেওয়া কর অব্যাহতি থাকবে না।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ ছাড়ের অন্যতম শর্ত হলো করছাড় কমিয়ে আনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করেছে।
এনবিআরের ওই পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, সিংহভাগ করছাড় পান সমাজের সুবিধাভোগী শ্রেণি ও সুবিধাপ্রাপ্ত শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা। এতে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) লোকসান হচ্ছে। করের ভার সমাজের সব শ্রেণির ওপর যৌক্তিকভাবে পড়ছে না। এসব কারণে করছাড় যৌক্তিক হারে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে এনবিআর।
যা করা হবে
কর অব্যাহতি কমানোর বিষয়ে আগামী দুই বছরে পাঁচ ধরনের কার্যক্রম নেওয়ার কথা বলা হয়েছে এনবিআরের ওই পরিকল্পনায়। এক. খাতভিত্তিক করছাড় কত দেওয়া হয়, চিহ্নিত করা হবে। দুই. করছাড় পর্যালোচনা করে যৌক্তিক হারে কমিয়ে আনা। তিন. করছাড় কমাতে অন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। চার. করহার কার্যকর করার জন্য একটি মানসম্পন্ন পরিচালনা বিধান তৈরি করা। পাঁচ. পর্যায়ক্রমে ভ্যাটছাড় তুলে দেওয়া হবে।
এনবিআরের করনীতি, ভ্যাটনীতি ও কাস্টমস নীতি—এই তিন বিভাগ এসব কাজ করবে। ২০২৭ সালের প্রথমার্ধেই এসব কাজ শেষ করার সময় নির্ধারণ করা আছে।
কোন খাতে কত ছাড়
এনবিআর ২০২৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত শুল্ক-কর ছাড়ের বিষয়ে তিনটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায়—আয়কর, ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, আমদানি শুল্ক ও আবগারি শুল্ক মিলিয়ে এক অর্থবছরে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৪১০ কোটি টাকার ছাড় দেওয়া হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি করছাড় দেওয়া হয় ভ্যাট খাতে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৭০ কোটি টাকার ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়। ওই অর্থবছরে এই খাতে এনবিআর আদায় করেছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ সেবার যত ভ্যাট আদায় হয়েছে, তার প্রায় ৮২ শতাংশের মতো ছাড় দেওয়া হয়েছে। ছাড় না দিলে ভ্যাট খাতে এই অর্থবছরে আদায় হতো ২ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। মূলত অব্যাহতি কিংবা শুল্ক-করের হার কমিয়ে ব্যবসায়ীদের এ ধরনের ছাড় দেওয়া হয়।
আয়কর খাতে আদায়ের চেয়ে ছাড়ের পরিমাণ বেশি। এনবিআরের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ লাখ ১৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার আয়কর ছাড় দেওয়া হয়। ওই বছর আয়কর আদায় হয়েছিল ৮৭ হাজার ৮৭১ কোটি টাকা। অর্থাৎ যত আয়কর আদায় হয়েছিল, তার চেয়েও প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা বেশি ছাড় দেওয়া হয়েছে। মূলত কর অবকাশ সুবিধা দিয়ে এবং উৎসে করকে চূড়ান্ত কর দায় দিয়ে বিভিন্ন খাতকে আয়কর ছাড় দেওয়া হয়।
এনবিআরের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি শুল্ক ও আবগারি শুল্ক বাবদ ৩৭ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা আদায় হয়।
গত পাঁচ দশকে ২০০-এর বেশি প্রজ্ঞাপন জারি করে বিভিন্ন খাতকে করছাড় দেওয়া হয়েছে। এসব করছাড় তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা বানাতে এনবিআরের একটি দল কাজ করছে।