পাবলিক অডিট বিলের খসড়া নিয়ে গোপনীয়তায় টিআইবির উদ্বেগ
Published: 20th, February 2025 GMT
‘পাবলিক অডিট বিল-২০২৪’ এর খসড়া নিয়ে গোপনীয়তার চর্চায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে অবিলম্বে খসড়া বিল উন্মুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানায় টিআইবি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়সহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান, একটি দাতা সংস্থা এবং বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মধ্যে আবদ্ধ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পাবলিক অডিট বিল-২০২৪ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
বিষয়টিকে অনভিপ্রেত উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড.
এ অবস্থায় পাবলিক অডিট বিল-২০২৪ এর খসড়া জনস্বার্থে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের জন্য অবিলম্বে উন্মুক্ত করতে আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
২০১৫ সালে ‘মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রককে (সিএজি) বাজেট, নিয়োগসহ সব বিষয়ে সাংবিধানিক স্বাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করাসহ ২০ দফা সুপারিশ করেছিল টিআইবি।
এ প্রতিবেদনের উল্লেখ করে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএজিকে শক্তিশালী করার দাবি আমরা দীর্ঘদিন ধরে উত্থাপন করে আসছি। গবেষণালব্ধ ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আমরা সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেছিলাম। এর মধ্যে, সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মাধ্যমে আলোচনার ভিত্তিতে প্রস্তাবিত নিরীক্ষা আইন, অর্গানোগ্রাম ও নিয়োগের বিধিমালা অনুমোদন এবং সিএজিকে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাবের বাইরে আনার ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি প্রত্যাশা ছিল, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএজিকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু খসড়া অডিট বিল পর্যালোচনা শুধুমাত্র সরকারি সংস্থাসমূহ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ফলে অবস্থাদৃষ্টে এমন মনে হওয়া অমূলক নয় যে, কর্তৃত্ববাদী সরকারের সময়ের মতো এখনো সিএজিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আমলাতন্ত্রের হাতে করায়ত্ত করে রাখার পাঁয়তারা চলছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে যে, সিএজি সরকারের বা কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দেশি-বিদেশি আমলাতন্ত্রের অধীন কোনো সংস্থা নয়। এটি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যার চূড়ান্ত মালিকানা জনগণের। তাই খসড়া আইনটি অবিলম্বে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আগ্রহী অংশীজনের মতামতের সুযোগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময়ের জন্য উন্মুক্ত করার আহ্বান জানাই। পরবর্তী সময়ে প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ায় তা চূড়ান্ত করা হোক।’’
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স শ ল ষ ট অ শ জন র মত মত র জন য র খসড় ট আইব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দায় যুক্ত করার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ ও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান মোল্লা বিষয়টিকে জনগণের আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আবেদন জানিয়েছেন।
এদিকে, ভাঙ্গা উপজেলা থেকে কেটে নেওয়া হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন মোল্লা এলাকাবাসীর পক্ষে চেয়ারম্যানের পাঁচটি দাবির কথা তুলে ধরে মীমাংসার আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল হাসান মোল্লা ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ২১৪ ফরিদপুর-৪ আসনে অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত ওই চিঠি সূত্রে জানাগেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেটের সূত্র উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, ফরিদপুর-২ এবং ফরিদপুর-৪ এর সংসদীয় সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হয়। উক্ত তালিকায় ফরিদপুর-৪ এর অন্তর্গত ভাঙ্গার দুটি ইউনিয়ন, আলগী ও হামিরদী জাতীয় সংসদীয় আসন ফরিদপুর-২ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
তালিকা প্রকাশিত হওয়ার ফলে গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নসহ ভাঙ্গা উপজেলার সাধারণ জনগণ উক্ত আসন বিন্যাস বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে থাকে। ফলশ্রুতিতে ক্রমান্বয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সর্বশেষ ১৫ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়, উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়, ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে পুলিশের কার্যালয় ও সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়াও বিক্ষোভকারীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রাখে। তৎপ্রেক্ষিতে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সাথে যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ার কারণে সাধারণ জনগণকে তীব্র ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবির সমর্থনে কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) সংসদীয় আসনের ভাঙ্গা হতে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সাথে যুক্ত করে সংসদীয় আসন পুনঃনির্ধারণের বিষয়টি দুইটি সংসদীয় আসনের জনগণ মেনে নিতে পারেনি। উক্ত দুইটি আসনের সর্বস্তরের জনগণ এ আন্দোলনের সাথে যুক্ত রয়েছে মর্মে জানা যায়। এ প্রেক্ষিতে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা না হলে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, বর্ণিত অবস্থায়, জাতীয় সংসদীয় আসন ২১২ ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা) এর অন্তর্গত ভাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়ন আলগী ও হামিরদীকে জাতীয় সংসদীয় আসন ২১৪ ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) এর মধ্যে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনাপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় অনুরোধ করা হলো।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বার্তায় হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন মোল্লা পাঁচটি দাবির কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি পাঁচটি দাবিকে ভাঙ্গাবাসীর প্রাণের দাবি হিসেবে উল্লেখ করে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ দাবিগুলো মেনে নেওয়া হলে তারা ঘরে ফিরে যাবেন।
দাবিগুলো হলো- আলগী এবং হামিরদী ইউনিয়নকে পুনরায় ভাঙ্গা উপজেলার সাথে সংযুক্ত করতে হবে; চেয়ারম্যানসহ সকলকে মুক্তি দিতে হবে; নিরীহ নিরপরাধ জনগণের ওপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে; নতুন কোনো মামলা দেওয়া যাবে না; রাতের বেলায় প্রশাসন দিয়ে সাধারণ জনগণকে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
ঢাকা/তামিম/এস