এফবিআই প্রধান হচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্যাশ প্যাটেল
Published: 21st, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) প্রধান হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্যাশ প্যাটেলের মনোনয়ন অনুমোদন করেছে মার্কিন সিনেট। গতকাল বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত উচ্চকক্ষ সিনেট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ মনোনয়ন অনুমোদন করে। খবর রয়টার্সের।
ট্রাম্পের অত্যন্ত অনুগত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ৪৪ বছর বয়সী ক্যাশ প্যাটেল। ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ পদে তার নিয়োগ চূড়ান্ত হলো।
ক্যাশ প্যাটেল হিসেবে পরিচিত হলেও তার পুরো নাম কাশ্যপ প্রমোদ বিনোদ প্যাটেল। তার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে। অভিবাসী হিসেবে তার মা-বাবা ভারতের গুজরাট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। ইউনিভার্সিটি অব রিচমন্ড থেকে ক্রিমিনাল জাস্টিস অ্যান্ড হিস্টোরি বিষয়ে স্নাতক করেন ক্যাশ প্যাটেল। এ ছাড়া তিনি পেস ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে পড়াশোনা করেছেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালে মার্কিন প্রশাসনে যোগ দিয়েছিলেন ক্যাশ প্যাটেল। ট্রাম্প প্রশাসনে তার দ্রুত উত্থান হয়েছিল। কিছু গণমাধ্যমের ভাষ্যমতে, ক্যাশ প্যাটেলের এই উন্নতির পেছনে ছিল ট্রাম্পের প্রতি তার পূর্ণ আনুগত্য।
সিনেটে ৫১-৪৯ ভোটে ক্যাশ প্যাটেলের মনোনয়ন অনুমোদন পায়। ডেমোক্র্যাট সিনেটরদের সবাই তার বিপক্ষে ভোট দেন। ভোটাভুটিতে তাদের সঙ্গে যোগ দেন সিনেটের দুই মধ্যপন্থী রিপাবলিকান সদস্য। তারা হলেন সুসান কলিন্স ও লিসা মুরকোস্কি।
অতীতে ট্রাম্পের পক্ষে ক্যাশ প্যাটেলের রাজনৈতিক ওকালতি এবং এফবিআইয়ের কার্যক্রমের ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এই দুই রিপাবলিকান সিনেটর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে ক্যাশ প্যাটেলের পক্ষের রিপাবলিকানরা যুক্তি দেন, এফবিআইয়ের ওপর জনগণের আস্থা পড়ে গেছে। এ সংস্থার সংস্কার করবেন ক্যাশ প্যাটেল।
ডেমোক্র্যাটরা জোরালোভাবে ক্যাশ প্যাটেলের মনোনয়নের বিরোধিতা করেন। তারা বলেন, তিনি অতীতে ট্রাম্পের সমালোচকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাই এফবিআইয়ের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি অযোগ্য।
সিনেটের জুডিশিয়ারি কমিটির (বিচারবিষয়ক কমিটি) শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সিনেটর ডিক ডারবিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, এফবিআইয়ের প্রধান হিসেবে ক্যাশ প্যাটেলের নিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।
ক্যাশ প্যাটেল অতীতে খোলাখুলিভাবে এফবিআইয়ের সমালোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ডিপ স্টেটের’ (রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র) অস্তিত্ব থাকার ধারণা তিনি জোরেশোরে প্রচার করেছেন। ট্রাম্পের ব্যাপারে এফবিআই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে বলে মনে করেন ক্যাশ প্যাটেল। তিনি সংস্থাটিকে ঢেলে সাজানোর পক্ষে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র প বল ক ন
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।