যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) প্রধান হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্যাশ প্যাটেলের মনোনয়ন অনুমোদন করেছে মার্কিন সিনেট। গতকাল বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত উচ্চকক্ষ সিনেট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ মনোনয়ন অনুমোদন করে। খবর রয়টার্সের।

ট্রাম্পের অত্যন্ত অনুগত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ৪৪ বছর বয়সী ক্যাশ প্যাটেল। ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ পদে তার নিয়োগ চূড়ান্ত হলো।

ক্যাশ প্যাটেল হিসেবে পরিচিত হলেও তার পুরো নাম কাশ্যপ প্রমোদ বিনোদ প্যাটেল। তার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে। অভিবাসী হিসেবে তার মা-বাবা ভারতের গুজরাট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। ইউনিভার্সিটি অব রিচমন্ড থেকে ক্রিমিনাল জাস্টিস অ্যান্ড হিস্টোরি বিষয়ে স্নাতক করেন ক্যাশ প্যাটেল। এ ছাড়া তিনি পেস ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে পড়াশোনা করেছেন।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালে মার্কিন প্রশাসনে যোগ দিয়েছিলেন ক্যাশ প্যাটেল। ট্রাম্প প্রশাসনে তার দ্রুত উত্থান হয়েছিল। কিছু গণমাধ্যমের ভাষ্যমতে, ক্যাশ প্যাটেলের এই উন্নতির পেছনে ছিল ট্রাম্পের প্রতি তার পূর্ণ আনুগত্য।

সিনেটে ৫১-৪৯ ভোটে ক্যাশ প্যাটেলের মনোনয়ন অনুমোদন পায়। ডেমোক্র্যাট সিনেটরদের সবাই তার বিপক্ষে ভোট দেন। ভোটাভুটিতে তাদের সঙ্গে যোগ দেন সিনেটের দুই মধ্যপন্থী রিপাবলিকান সদস্য। তারা হলেন সুসান কলিন্স ও লিসা মুরকোস্কি।

অতীতে ট্রাম্পের পক্ষে ক্যাশ প্যাটেলের রাজনৈতিক ওকালতি এবং এফবিআইয়ের কার্যক্রমের ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এই দুই রিপাবলিকান সিনেটর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

অন্যদিকে ক্যাশ প্যাটেলের পক্ষের রিপাবলিকানরা যুক্তি দেন, এফবিআইয়ের ওপর জনগণের আস্থা পড়ে গেছে। এ সংস্থার সংস্কার করবেন ক্যাশ প্যাটেল।

ডেমোক্র্যাটরা জোরালোভাবে ক্যাশ প্যাটেলের মনোনয়নের বিরোধিতা করেন। তারা বলেন, তিনি অতীতে ট্রাম্পের সমালোচকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাই এফবিআইয়ের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি অযোগ্য।

সিনেটের জুডিশিয়ারি কমিটির (বিচারবিষয়ক কমিটি) শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সিনেটর ডিক ডারবিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, এফবিআইয়ের প্রধান হিসেবে ক্যাশ প্যাটেলের নিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।

ক্যাশ প্যাটেল অতীতে খোলাখুলিভাবে এফবিআইয়ের সমালোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ডিপ স্টেটের’ (রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র) অস্তিত্ব থাকার ধারণা তিনি জোরেশোরে প্রচার করেছেন। ট্রাম্পের ব্যাপারে এফবিআই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে বলে মনে করেন ক্যাশ প্যাটেল। তিনি সংস্থাটিকে ঢেলে সাজানোর পক্ষে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র প বল ক ন

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ