ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ৪ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন এক তরুণী। তিনি অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নুসরাত তাবাসসুমকে বারবার জানালেও তিনি কারও সহযোগিতা পাননি। তবে উমামা ও নুসরাত এই তরুণীর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পুনাব) ও জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স নামের দুটি সংগঠন ‘আন্দোলনে নারীর শক্তি, নারীর কথা: শিক্ষা, নেতৃত্ব ও সম্ভাবনার দিগন্ত’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে অংশ নিয়ে ওই তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা জানান। তাঁর এই বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

অভিযোগকারী তরুণী বলেন, ‘২০–২৫ জন নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজের পাশের কলেজ রোডের গলিতে আজমেরী ওসমানের বাড়ির নিচে একটা অফিসে নিয়ে যায়। আমাকে টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আশপাশে অনেক মানুষ থাকলেও কেউ সামনে আসেননি আটকানোর জন্য। আমাকে মারধর করে মুঠোফোন নিয়ে যায় তারা। সেই অফিসে নিয়ে যাওয়ার পর আমাকে অনেক বাজে বাজে কথা বলেছে, অনেক বাজে গালিগালাজ করেছে, আমার পরিবার নিয়েও অনেক কথাবার্তা বলেছে।  বাজে কথাও শুনতে হয়েছে। পরে ওখান থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে দুজন ছিল। দুজন মিলে পরে আমাকে ধর্ষণ করে। এটা এখন পর্যন্ত কোনো গণমাধ্যমে আসেনি। আমি নিজেই আসতে দিইনি। এখন পর্যন্ত তারা (অপরাধী) ঘুরছে, এখনো শাস্তি হয়নি।’

সারজিস আলম, উমামা ফাতেমা ও নুসরাত তাবাসসুম তাঁর ঘটনাটি জানেন বলে উল্লেখ করেন ওই তরুণী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘১০ নভেম্বর আমি কনসিভ (গর্ভধারণ) করি। উমামা ফাতেমাকে যখন আমি জানাই, তখন তিনি বলেন, “তোমার সাথে না অনেক খারাপ হইছে। আচ্ছা, দেখবোনে বিষয়টা।” শেষ। এখানেই ক্লোজ করে দিয়েছে টপিক। নুসরাত তাবাসসুম আপুকে জানাই। উনি আমাকে বলেন, “তুই আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নক দিস।” টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় আমি তাঁর পাশের টেবিলে বসে হোয়াটসঅ্যাপে নক করি। তিনি হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজগুলো দেখলেও কোনো রিপ্লাই করেননি।’

এই তরুণীর যে অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন, সেখানে অংশ নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন। অনুষ্ঠানের পর জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির নারী সেল ও আইন সেল রয়েছে। ওই তরুণী যোগাযোগ করলে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।’

অভিযোগ অস্বীকার

অভিযোগকারী তরুণীর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে উমামা ফাতেমা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তাঁর জায়গা থেকে ওই তরুণীকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছেন।

এ ছাড়া অভিযোগকারী তরুণীর বক্তব্যের পর আহনাফ তাহমিদ নামের এক ব্যক্তি বিষয়টির কড়া সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। ওই পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে নুসরাত তাবাসসুম ফেসবুকে অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। অভিযোগকারী তরুণীর নাম উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘একবার আমার সামনে এনে তাকে অভিযোগ করতে বলেন যে তাকে সাহায্য করতে চাওয়া হয়নি। তাকে সব রকম সাহায্য দিতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সুচিকিৎসা, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাস্থলে তদন্ত, মামলা—সবকিছুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সে চেয়েছিল অন্য কিছু। কিন্তু তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে আমি সেটা প্রকাশ করতে পারছি না।’

এদিকে বক্তব্যের বিষয়ে জানতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে রাত নয়টার দিকে ওই তরুণীর মুঠোফোনে কল করা হলে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। 

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।  

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।

এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে। 

পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপি কি জামায়াতকে চাপে রাখার কৌশলে
  • সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কমিটি গঠন
  • ৮নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন
  • আড়াইহাজারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কমিটি গঠন
  • মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা
  • ইসলামী আন্দোলনের বাবুরাইল ইউনিট কমিটি গঠন
  • পরিবার নিয়ে চীন ভ্রমণে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সদস্যরা
  • নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিবাদদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে : আবদুল্লাহ
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার