আত্মপ্রকাশ করেছে টেলিভিশন রিপোর্টারদের স্বতন্ত্র ও প্রথম সংগঠন ‘চট্টগ্রাম টেলিভিশন রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক’ (সিটিআরএন)। গত বুধবার রাতে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন আর্ট গ্যালারির সম্মেলন কক্ষে ‘রিপোর্টার আড্ডা’ অনুষ্ঠানে দীর্ঘ আলোচনার পর এ সংগঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মূলত গতানুগতিকতার বাইরে ভিন্ন ধারার একটি প্লাটফর্ম এ সংগঠন। এখানে গুরুত্ব পাবে টেলিভিশন রিপোর্টারদের এক ছাতার নিচে আনা, পেশাগত মানোন্নয়ন, গবেষণা, সুদৃঢ় ঐক্য। আলোচনা শেষে উপস্থিত সবার মতামতের ভিত্তিতে সাত সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের রিজিওনাল এডিটর কামাল পারভেজ। এ ছাড়া টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান হোসাইন জিয়াদকে আহ্বায়ক, নাগরিক টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান এ কে আজাদকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।
কমিটির সদস্যরা হলেন– এনটিভির সিনিয়র রিপোর্টার আরিচ আহমেদ শাহ, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের স্পেশাল রিপোর্টার ফখরুল ইসলাম, এটিএন বাংলার স্টাফ রিপোর্টার সৈয়দ তাম্মিম মাহমুদ, সময় টিভির সিনিয়র রিপোর্টার ফেরদৌস লিপি, যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার শহিদুল সুমন। 
এর আগে আলোচনায় অংশ নেন এনটিভির ব্যুরো প্রধান শামসুল হক হায়দরি, বৈশাখী টিভির ব্যুরো প্রধান মহসিন চৌধুরী, চ্যানেল আইয়ের ব্যুরো প্রধান চৌধুরী ফরিদ, এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার আবুল হাসনাত, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান আলমগীর সবুজ, ডিবিসির ব্যুরো প্রধান মাসুদুল হক, এসএ টিভির ব্যুরো প্রধান সোহাগ কুমার বিশ্বাস, মাছরাঙা টিভির ব্যুরো প্রধান নাজমুল আলীম সাদেকি, বাংলা টিভির ব্যুরো প্রধান লোকমান চৌধুরী, একাত্তর টিভির রাজীব বড়ুয়া, এটিএন নিউজের মুনিরুল ইসলাম, আরটিভির সাইফুল ইসলাম, বৈশাখী টেলিভিশনের নাঈমুল ইসলাম চৌধুরী, দেশ টিভির মোহাম্মদ নাজিম, সময় টিভির পার্থ প্রতীম বিশ্বাস, সফিকুল আলম, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির আহসান রিটন, অনুপম শীল, আব্দুল্লাহ রাকিব, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের এমদাদুল হক, রণি দত্ত, জোবাইর মনজুর, ইবেন মীর, জিটিভির তৌহিদুল আলম, হুমায়ুন কবির, ডিবিসির মুজিবুল হক প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ