দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন বনে ফুটন্ত পানির ভিন্ন ধরনের এক নদী রয়েছে। ‘স্ক্যালিং’ নামের এই নদীর পানির তাপমাত্রা প্রায় ৯৮ দশমিক ৮৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ২১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট; ফলে পানি আক্ষরিক অর্থেই ফুটতে থাকে। গরম পানির কারণে এই নদীর কাছাকাছি যত জীববৈচিত্র্য আছে, সেগুলো ধ্বংসের মুখে পড়ছে। পেরুর রেইনফরেস্টে বা মধ্য পেরুর মায়ানতুয়াকু অঞ্চলে অবস্থিত চার মাইল দৈর্ঘ্যের এই নদীর গতিপথ বেশ অদ্ভুত। ক্ষেত্রবিশেষে মাত্র ২০ ফুট চওড়া এই নদী নিয়ে অনেক কিংবদন্তি চালু আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিলি ফোর্টিয়ারের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী এই নদীর ৭০টি স্থানে জরিপ করেছেন। গ্লোবাল চেঞ্জ বায়োলজিতে প্রকাশিত সেই জরিপের ফলাফলে রিলি ফোর্টিয়ার বলেন, ভবিষ্যতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি বনের গঠনে কী প্রভাব ফেলবে, তা জানার সুযোগ পাচ্ছি আমরা। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৮ ফারেনহাইট বাড়লেই জীববৈচিত্র্য প্রায় ১১ শতাংশ কমতে থাকে। আর তাই নদীটির ভূগর্ভস্থ পানির সঙ্গে পৃথিবীর ভূতাপীয় শক্তির সংযোগ আছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। ভূত্বকের কোনো একটি ছিদ্র দিয়ে আসা তাপ নদীর তরল পানির মাধ্যমে উন্মুক্ত হচ্ছে বলে এই নদীর তাপমাত্রা এত বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, বৃষ্টির পানি মাটিতে প্রবেশের পরে পাললিক শিলা মাটির নিচে অতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখন উষ্ণ প্রস্রবণ হিসেবে নদীর পানি বাহিত হয়।

ফুটন্ত এই নদী স্থানীয়ভাবে শেনেই-টিম্পিশকা নামে পরিচিত, যার অর্থ সূর্যের তাপে সেদ্ধ নদী। অনেক স্থানীয় বাসিন্দা এই নদীকে শ্রদ্ধার জায়গা হিসেবে বিবেচনা করে। রিলি ফোর্টিয়ার বলেন, সামগ্রিকভাবে এই এলাকায় গাছের সংখ্যা বেশ কম, ফলে বৈচিত্র্যও কম। গরম জায়গায় কম প্রজাতি দেখা যায়। উষ্ণতম স্থান বলে বনের গঠন এখানে অন্য রকম।

বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি হচ্ছে। এর ফলে একই ধরনের পরিবর্তন অন্যান্য নিম্নভূমির রেইনফরেস্ট এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। আর তাই দীর্ঘদিন এই নদীর ওপরে নজর রাখার মাধ্যমে উষ্ণায়নের কারণে নদীর ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা জানতে আগ্রহী তাঁরা।

সূত্র: আর্থ ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘মাস্তান’কে ছাড়া রিয়ালের অ্যানফিল্ড–অভিযান এবং সালাহর রেকর্ডের হাতছানি

অ্যানফিল্ডে যাওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ দুঃসংবাদ পেল রিয়াল মাদ্রিদ। লিভারপুলের বিপক্ষে আজ রাতে খেলতে পারবেন না ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো। দলের মেডিকেল বিভাগ জানিয়েছে, আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডার ভুগছেন ‘স্পোর্টস হার্নিয়া’-তে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা লিখেছে, মাস্তানতুয়োনো কবে ফিরতে পারবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে আজকের ম্যাচে তাঁর না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত।

গতকাল অনুশীলনেও ছিলেন না মাস্তানতুয়োনো। সাধারণত প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন করে রিয়াল। কিন্তু এবার কোচ জাবি আলোনসো একটু ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। অ্যানফিল্ডে সাংবাদিকদের সামনে কৌশল প্রকাশ না করে তিনি শেষ অনুশীলন সেরেছেন ক্লাবের নিজস্ব মাঠ ভালদেবাসে। মার্কার বিশ্লেষণ, প্রতিপক্ষ যেন শেষ মুহূর্তে কিছু বুঝে না ফেলে, সে জন্যই আলোনসোর এ সিদ্ধান্ত।
রিয়ালের বর্তমান ফর্ম অবশ্য কোনোভাবেই লুকানো যাচ্ছে না। লা লিগায় গত পরশু রাতে ভ্যালেন্সিয়াকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে এটি তাদের ১৩তম জয়। একমাত্র হারের স্বাদ লিগে। ১২৬ বছরের ইতিহাসে রিয়ালের এর চেয়ে ভালো সূচনা হয়েছে মাত্র দুবার, সর্বশেষ ১৯৬১-৬২ মৌসুমে।

লিভারপুলের অনুশীলনে ভার্জিল ফন ডাইক ও মোহাম্মদ সালাহ

সম্পর্কিত নিবন্ধ