গত মাসের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছিল, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে ‘২০২৪ ওয়াইআর৪’ নামের এক গ্রহাণু। প্রায় ২০০ ফুট চওড়া এই গ্রহাণু ২০৩২ সালে পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। এই গ্রহাণু কোনো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। নাসার এ ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে গ্রহাণুটি। তবে সম্প্রতি নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণুটির সংঘর্ষের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

নাসার গ্রহ প্রতিরক্ষা দলের বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুটির গতিপথ পর্যালোচনা করে জানিয়েছেন, গ্রহাণুটির পৃথিবীতে আঘাত হানার ঝুঁকি আগে প্রায় তিন শতাংশ থাকলেও এখন তা কমে হয়েছে শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ। পৃথিবীতে গ্রহাণুটির আঘাত হানার সম্ভাবনা কমলেও আমাদের প্রাকৃতিক উপগ্রহ চাঁদের সঙ্গে আঘাত হানার সম্ভাবনা কিছুটা বেড়েছে। আগে শূন্য মাত্রায় থাকলেও এখন চাঁদে গ্রহাণুটির আঘাত হানার সম্ভাবনা প্রায় ১ শতাংশ।

আরও পড়ুন২০২৪ পিটি৫ গ্রহাণু কি চাঁদের অংশ ছিল৩১ জানুয়ারি ২০২৫

গ্রহাণুটি আকারে বেশ বড় হওয়ায় পৃথিবীতে আঘাত হানলে বেশ ক্ষতি হতে পারে। আর তাই গ্রহাণুটির গতিপথ নিয়মিত পর্যালোচনা করছেন বিজ্ঞানীরা। ২০২৪ সালে নাসার সেন্টার ফর নেওয়ার আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণুটির সংঘর্ষের সম্ভাবনা ২ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে গত মাসের শেষ নাগাদ তাঁরা জানান, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে এলেও গ্রহাণুটির আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশ কম, মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ।

আরও পড়ুনগ্রহাণুর আঘাতে বদলে গেছে যে গ্রহের চাঁদের গতিপথ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নাসার অনুমান, ২০৩২ সালের ডিসেম্বর মাসে পৃথিবীতে আঘাত না হানলেও পৃথিবী থেকে ৬৬ হাজার মাইলের মধ্যে চলে আসবে গ্রহাণুটি। আর তাই গ্রহাণুটিকে ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে। ফলে বিজ্ঞানীরা এখন গ্রহাণুটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন। ২০২৮ সালের আগে আর দেখা যাবে না গ্রহাণুটি।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।

অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ  ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।

একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের  প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে,  মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • সংশোধিত সাইবার অধ্যাদেশও আন্তর্জাতিক মানের হয়নি
  • জার্মানির ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, জেনে নিন সব তথ্য
  • ২০২৪ সালে মেটার কাছে ৩৭৭১ অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
  • কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইরান-ইসরায়েল
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে
  • ৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ
  • মেটার কাছে সরকার ৩,৭৭১টি অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে
  • যুদ্ধের কারণে বিশ্বে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা অসহনীয় পর্যায়ে: ইউএনএইচসিআর