বাংলাদেশে সুতা ডাম্পিং করছে ভারত
Published: 24th, February 2025 GMT
উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে কম মূল্যে বাংলাদেশে সুতা রপ্তানি বা ডাম্পিং করছে ভারত। গ্যাসের অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি, সীমান্ত খুলে দিয়ে এবং দেশীয় সুতায় প্রণোদনা কমিয়ে দিয়ে সেই সুযোগ করে দিচ্ছেন দেশের নীতিনির্ধারকরা। এ কারণে দেশের টেক্সটাইল মিলগুলোর উৎপাদিত ১০ হাজার কোটি টাকার সুতা অবিক্রীত পড়ে আছে। দেশের বস্ত্র ও পোশাক খাত ভারত মুখাপেক্ষিতায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে।
গতকাল সোমবার এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বস্ত্র খাতের শিল্পোদ্যোক্তাদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। রাজধানীর গুলশান ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। অথচ দেশীয় বস্ত্রকলগুলোর উৎপাদিত সুতা অবিক্রীত পড়ে আছে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ সুতা আসার কারণে এ অবস্থা হয়েছে। কোনো রকম ঋণপত্র (এলসি) ছাড়াই স্থলবন্দরগুলো দিয়ে ট্রাকভর্তি সুতা ঢুকছে দেশে। মিথ্যা ঘোষণায়ও সুতা আসছে।
তিনি আরও বলেন, ভারত যে বাংলাদেশে সুতা ডাম্পিং করছে, তার বড় প্রমাণ হচ্ছে দেশটির স্থানীয় বাজারের চাইতে রপ্তানি সুতার দাম কম। তারা প্রণোদনা দিয়ে বাংলাদেশে সুতা রপ্তানি করছে। এ কারণে ভারতে দিন দিন কারখানার সংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের কারখানাগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বন্ধ হতে চলেছে। দেশীয় বস্ত্রকলগুলো বাঁচাতে হলে এখনই স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করতে হবে।
বস্ত্র খাতের অন্যান্য সমস্যা প্রসঙ্গে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, গ্যাসের অপর্যাপ্ততা আরেক সংকট তৈরি করেছে। এ কারণে বস্ত্রকলগুলোর উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেকও উৎপাদন করতে পারছে না। এ সুযোগেই ভারত এ দেশে তাদের সুতা বস্ত্র ডাম্পিং করতে পারছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শওকত আজিজ রাসেল বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত ভারতীয় সুতা আমদানিতে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্কারোপের উদ্যোগ নেওয়া। গত বছর ভারত থেকে সুতা আমদানি ৪০ শতাংশ বেড়েছে। ভারত পাট শিল্প তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। এখন পোশাক ও বস্ত্র নিয়েও টানাটানি করছে।
বিটিএমএ সহসভাপতি সালেউদ জামান খান বলেন, ভারত তাদের বস্ত্র শিল্পের বিকাশে ১০ বছর মেয়াদি নীতি নিয়েছে। এখন তারা ডাম্পিং দরে অর্থাৎ উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দরে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে সুতা দিচ্ছে। যখন বাংলাদেশের বস্ত্র খাতে পুরোপুরি ধস নামবে ভারত তখন আর সুতা দেবে না। পরিণতিতে তৈরি পোশাক রপ্তানিও বন্ধের পথে হাঁটবে। তখন আর করার কিছু থাকবে না। এ বিষয়ে এখনই সতর্ক হতে পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএর সহসভাপতি শামীম ইসলাম, আবুল কালাম, পরিচালক খোরশেদ আলম, ইঞ্জিনিয়ার রাজিব হায়দার, শাহিদ আলম প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরে ইজিবাইকচালক শওকত হত্যার ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
ফরিদপুরে ইজিবাইকচালক শওকত মোল্লা (২০) হত্যার ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালত মাকসুদুর রহমান এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার মেহেদী আবু কাওসার, জনি মোল্লা ও আবু রাসেল শেখ (পলাতক), রবিদাসপল্লির রাজেশ রবিদাস এবং গোয়ালচামট মহল্লার রবিন মোল্লা। তাঁদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে রাজবাড়ীর সদরের মসলিসপুর গ্রামের বাদশা শেখকে। সেই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১০ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন বাদে বাকি সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়, শওকত মোল্লা শহরের পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার আয়নাল মোল্লার ছেলে। ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ইজিবাইক নিয়ে বেরিয়ে তিনি নিখোঁজ হন। পরদিন ১৫ নভেম্বর সকালে শহরের মোল্লাবাড়ি সড়কের পাশের একটি ধানখেতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। ১৬ নভেম্বর অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন শওকতের বাবা আয়নাল মোল্লা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শওকতকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের ইজিবাইক ও তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি ছিনতাই করে নিয়ে যায় হত্যাকারীরা।
আদালতের সরকারপক্ষের কৌঁসুলি চৌধুরী জাহিদ হাসান জানান, বর্তমানে ইজিবাইক হাতিয়ে নেওয়ার জন্য খুনের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। এ রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি সমাজের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।