উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে কম মূল্যে বাংলাদেশে সুতা রপ্তানি বা ডাম্পিং করছে ভারত। গ্যাসের অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি, সীমান্ত খুলে দিয়ে এবং দেশীয় সুতায় প্রণোদনা কমিয়ে দিয়ে সেই সুযোগ করে দিচ্ছেন দেশের নীতিনির্ধারকরা। এ কারণে দেশের টেক্সটাইল মিলগুলোর উৎপাদিত ১০ হাজার কোটি টাকার সুতা অবিক্রীত পড়ে আছে। দেশের বস্ত্র ও পোশাক খাত ভারত মুখাপেক্ষিতায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। 
গতকাল সোমবার এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বস্ত্র খাতের শিল্পোদ্যোক্তাদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। রাজধানীর গুলশান ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। অথচ দেশীয় বস্ত্রকলগুলোর উৎপাদিত সুতা অবিক্রীত পড়ে আছে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ সুতা আসার কারণে এ অবস্থা হয়েছে। কোনো রকম ঋণপত্র (এলসি) ছাড়াই স্থলবন্দরগুলো দিয়ে ট্রাকভর্তি সুতা ঢুকছে দেশে। মিথ্যা ঘোষণায়ও সুতা আসছে।  
তিনি আরও বলেন, ভারত যে বাংলাদেশে সুতা ডাম্পিং করছে, তার বড় প্রমাণ হচ্ছে দেশটির স্থানীয় বাজারের চাইতে রপ্তানি সুতার দাম কম। তারা প্রণোদনা দিয়ে বাংলাদেশে সুতা রপ্তানি করছে। এ কারণে ভারতে দিন দিন কারখানার সংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের কারখানাগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বন্ধ হতে চলেছে। দেশীয় বস্ত্রকলগুলো বাঁচাতে হলে এখনই স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করতে হবে। 
বস্ত্র খাতের অন্যান্য সমস্যা প্রসঙ্গে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, গ্যাসের অপর্যাপ্ততা আরেক সংকট তৈরি করেছে। এ কারণে বস্ত্রকলগুলোর উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেকও উৎপাদন করতে পারছে না। এ সুযোগেই ভারত এ দেশে তাদের সুতা বস্ত্র ডাম্পিং করতে পারছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শওকত আজিজ রাসেল বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত ভারতীয় সুতা আমদানিতে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্কারোপের উদ্যোগ নেওয়া। গত বছর ভারত থেকে সুতা আমদানি ৪০ শতাংশ বেড়েছে। ভারত পাট শিল্প তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। এখন পোশাক ও বস্ত্র নিয়েও টানাটানি করছে।
বিটিএমএ সহসভাপতি সালেউদ জামান খান বলেন, ভারত তাদের বস্ত্র শিল্পের বিকাশে ১০ বছর মেয়াদি নীতি নিয়েছে। এখন তারা ডাম্পিং দরে অর্থাৎ উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দরে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে সুতা দিচ্ছে। যখন বাংলাদেশের বস্ত্র খাতে পুরোপুরি ধস নামবে ভারত তখন আর সুতা দেবে না। পরিণতিতে তৈরি পোশাক রপ্তানিও বন্ধের পথে হাঁটবে। তখন আর করার কিছু থাকবে না। এ বিষয়ে এখনই সতর্ক হতে পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দেন তিনি। 
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএর সহসভাপতি শামীম ইসলাম, আবুল কালাম,  পরিচালক খোরশেদ আলম, ইঞ্জিনিয়ার রাজিব হায়দার, শাহিদ আলম প্রমুখ। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

আখাউড়া দিয়ে ভারত থেকে এলো সাড়ে ১২ টন জিরা

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে  ভারত থেকে জিরা আমদানি করা হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাড়ে ১২ টন জিরা বন্দরে খালাস করা হয়। এর আগে সোমবার ১২ টন জিরা নিয়ে একটি ট্রাক বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়।

জানা গেছে, সারা এগ্রো এনিমাল হেলথ এবং সততা ট্রেডিং নামে দুটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এই জিরা আমদানি করেছে। কাস্টমস ক্লিয়ারিং ও ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে আখাউড়া স্থলবন্দরের মেসার্স আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।

আখাউড়া কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রতি কেজি জিরা প্রায় ৩ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪২৭ টাকায় আমদানি করা হচ্ছে। গত কয়েক দিনে মোট ৩৬.৫ টন জিরা আমদানি হয়েছে, যার মাধ্যমে ৯৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৯০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মাহমুদুল হাসান বলেন, চলতি বছরে এর আগেও কয়েকবার এই বন্দর দিয়ে জিরা আমদানি হয়েছে। ঈদুল আজহা সামনে রেখে আরও আমদানির সম্ভাবনা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে এল ২১ টন কচুর মুখি
  • ভারত থেকে এল ১২ টন কচুরমুখি 
  • ৩০ হাজার টাকার শুল্কের জন্য ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়: শওকত আজিজ
  • তেঁতুলিয়ায় বিরল প্রজাতির শকুন উদ্ধার
  • আখাউড়া দিয়ে ভারত থেকে এলো সাড়ে ১২ টন জিরা