পৃথিবীতে প্রাণ ধারণের জন্য অক্সিজেনের উপস্থিতি ভীষণভাবে প্রয়োজন। কিন্তু বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর মোট অক্সিজেনের পরিমাণ কমছে। এতে পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণের দম বন্ধের মতো অবস্থা তৈরি হতে পারে। অক্সিজেনসমৃদ্ধ গ্রহ হিসেবে পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ ঘটলেও পৃথিবীতে সব সময় অক্সিজেনের প্রাচুর্য ছিল না। বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ভবিষ্যতে বায়ুমণ্ডলে মিথেনের উপস্থিতি বাড়ছে। বেশ কম অক্সিজেনের এক অবস্থা দেখা যাবে। আরও এক বিলিয়ন বা এক শ কোটি বছর পরে এমন অবস্থা দেখা যাবে। অক্সিজেন কমে যাওয়ার এমন ঘটনা প্রায় ২৪০ কোটি বছর আগে একবার হয়েছিল বলে জানা গেছে। সেই ঘটনাকে গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্ট হিসেবে আখ্যা দেন বিজ্ঞানীরা।
জাপানের তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানী কাজুমি ওজাকি বলেন, ‘অনেক বছর ধরে সূর্য আমাদের পৃথিবীকে আলো দিয়ে যাচ্ছে। কার্বনেট-সিলিকেট জিওকেমিক্যাল চক্রের ওপর ভিত্তি করে পৃথিবীর জীবজগৎ বিকশিত হয়েছে। একটি মডেল অনুসারে বায়ুমণ্ডলে একটি ডিঅক্সিজেনেশন বা অক্সিজেন শূন্যের অবস্থা অনুমান করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেনের অভাবে অতীতের আর্কিয়ান আর্থের মতো অবস্থা তৈরি হতে পারে। তখন অক্সিজেনের মাত্রা এমন স্তরে তীব্রভাবে নেমে আসবে। পৃথিবীর জলবায়ু ব্যবস্থায় আর্দ্র গ্রিনহাউস অবস্থার সূচনা হওয়ার আগে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।’
সূর্যের উজ্জ্বলতা বাড়ছে। একই সঙ্গে পৃথিবীর তাপের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে কার্বন ডাই–অক্সাইড গ্যাস ভেঙে যাওয়ার হার বাড়বে। কম কার্বন ডাই–অক্সাইড মানে উদ্ভিদের মতো সালোকসংশ্লেষণকারী জীবের কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে যাবে। যার ফলে অক্সিজেন কম হবে।
বিজ্ঞানীরা এর আগের এক ভবিষ্যদ্বাণীতে জানান, ‘সূর্য থেকে আসা বিকিরণ প্রায় ২০০ কোটি বছরের মধ্যে আমাদের গ্রহের সমুদ্রের পানি শুকিয়ে ফেলবে। এরপর অক্সিজেনের হ্রাস দেখা যাবে। এতে পৃথিবীর অনেক প্রাণ মৃত্যুর মুখে পড়বে।’ যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী ক্রিস রেইনহার্ড বলেন, অক্সিজেনের পরিমাণ খুব চরম মাত্রায় কমবে। আজকের তুলনায় প্রায় এক মিলিয়ন গুণ কম অক্সিজেনের অবস্থা দেখা যাবে। অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার অনুমান নিয়ে গবেষণাটি নেচার জিওসায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে ৩৮ হাজার গ্যালন নিয়ে কার্গো বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৪
যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি অঙ্গরাজ্যে ৩৮ হাজার গ্যালন নিয়ে একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১ জন। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে উড্ডয়নের পরপরই এটি বিমানবন্দরের পাশের শিল্প এলাকায় গিয়ে পড়ে। সেখানে থাকা কেন্টাকি পেট্রোলিয়াম রিসাইক্লিং ও গ্রেড এ অটো পার্টস নামের দুটি প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরে যায়। আগুনের লেলিহান শিখায় আশপাশের বেশ কয়েকটি ভবনও পুড়ে যায়।
বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় এতে প্রায় ৩৮ হাজার গ্যালন (প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার লিটার) জেট জ্বালানি ছিল। এই বিপুল পরিমাণ জ্বালানিই আগুনের ভয়াবহতা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
ঘনবসতিপূর্ণ ওই এলাকায় বিপুল পরিমাণ জেট জ্বালানি ছড়িয়ে পড়ে, ফলে আরও বিস্ফোরণের আশঙ্কায় পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দমকলকর্মীরা কয়েক ঘণ্টা পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি।
কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত অন্তত চারজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি, তবে সংখ্যাটি বাড়তে পারে। আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।”
তিনি বলেন, “যারা ভিডিওগুলো দেখেছেন, তারা জানেন এটি কতটা ভয়াবহ ছিল। অনেক পরিবার এখন উদ্বেগে অপেক্ষা করছে। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সঠিক তথ্য দিতে কাজ করছি।”
লুইসভিল মেট্রো পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই একাধিক সংস্থা ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। আপাতত স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইউপিএস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত এমডি-১১ মডেলের কার্গো বিমানে তিনজন ক্রু সদস্য ছিলেন। তারা জীবিত আছেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
দুর্ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, বিমানটি উড্ডয়নের সময় হঠাৎ আগুন ধরে যায় এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিস্ফোরিত হয়ে পড়ে যায়।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে বিস্তারিত তদন্ত চলছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা আবহাওয়া-সংক্রান্ত কারণ নিশ্চিত করা যায়নি।
ঢাকা/ইভা