চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য নবনির্মিতব্য হলের নামকরণ ফজলুল কাদের চৌধুরী করার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। আগামী এক মাসের মধ্যে তারা এই নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া হলটির নাম পরিবর্তন করে বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলামের নামে নামকরণ করার দাবিও জানানো হয়েছে।

বুধবার বিকেলে সাড়ে চারটায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা। নগরের ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনে এই সম্মেলন হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইফাজ উদ্দিন আহমদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ফজলুল কাদের চৌধুরী ও তার ছেলে রাজাকার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রধানতম দালাল হয়ে কাজ করেছিলেন। চট্টগ্রামে শান্তি কমিটি, রাজাকার বাহিনী, আল বদর ও আল শামস বাহিনী গঠনে তিনি ভূমিকা পালন করেন। একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনী গণহত্যা শুরু করার পর মুসলিম লীগের শীর্ষনেতা মানিক মোহাম্মদ কাসিমকে সঙ্গে নিয়ে ফজলুল কাদের চৌধুরী গভর্নর টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করেন। এতে তিনি কীভাবে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনীকে সহযোগিতা করা যায় এবং তৎকালীন পূর্ব বাংলার স্বাধীনতার সংগ্রাম ধূলিসাৎ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ফজলুল কাদের চৌধুরীর গুডস হিলের বাড়িটি চট্টগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতনের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো। ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর নৌযানে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় আনোয়ারা উপজেলায় গহীরা উপকূলে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে তিনি। পরে তাকে বাঙালির বিরুদ্ধে ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের অভিযোগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী করা হয়।’

এই হল তার নামে না করে বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলামের নামে করার দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘যে মানুষটা কখনও চায়নি বাংলাদেশ নামে একটা রাষ্ট্রের জন্ম হোক, যিনি সরাসরি মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল তার নামে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নির্মিতব্য আবাসিক হলের নামকরণের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অবিলম্বে স্বাধীনতাবিরোধী ফজলুল কাদের চৌধুরীর নাম বাতিল করতে হবে। এই হলের নাম বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলাম ঘোষণা করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি সুদীপ্ত চাকমা, সাধারণ সম্পাদক ইফাজ উদ্দিন আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নয়ন কৃষ্ণ সাহা, শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সোহেল রানা এবং চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক শুভ দেবনাথ প্রমুখ। 

নেতারা জানান, তারা এই হলের নাম পরিবর্তনের জন্য প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন। তারা প্রশাসনকে এক মাসের সময় দিয়েছেন। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেবেন।

এর আগে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫৯তম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্রদের নামে নতুন এক হল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সভায় পুরোনো শামসুন নাহার হলের জায়গায় করা এই হলের নামকরণ করা হয় ফজলুল কাদের চৌধুরী হল। সভায় শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের পাঁচ জনের নামে থাকা চবির পাঁচটি স্থাপনাসহ মোট ছয়টি স্থাপনার নাম পরিবর্তন করা হয়। পাশাপাশি এই সভায় আরও ছয়টি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফজল ল ক দ র চ ধ র হল র ন ম ন মকরণ

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

সিলেটের জকিগঞ্জে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৬) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রথমে দুই শিক্ষার্থীর ছবি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন বলে এ ঘটনায় করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গত শনিবার সকালে উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী আজ বুধবার সকালে জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেছে।

মামলায় আসামি হিসেবে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের নিদনপুর গ্রামের ইমরান আহমদ (২৩), খিলগ্রামের তানজিদ আহমদ (১৮), মাইজগ্রামের শাকের আহমদ (২৪), একই গ্রামের শাকিল আহমদ (২১) ও মনতৈল গ্রামের মুমিন আহমদ (২০)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ২৬ জুলাই সকালে বারহাল ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় এক সহপাঠীকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সেখানে অভিযুক্ত পাঁচ তরুণ গোপনে তাঁদের ছবি ধারণ করেন। পরে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিযুক্ত তরুণেরা দুই শিক্ষার্থীকে বিষয়টি কাউকে জানানো হলে তাঁদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান।

এদিকে ঘটনার তিন দিন পর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে এলাকার একটি পক্ষ বিষয়টি সালিস বৈঠকে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জকিগঞ্জ থানা-পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ দিতে বিলম্ব ও বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া জকিগঞ্জ ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। আজ সকালে মামলা হওয়ার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদে আমাদের যে সম্মতি সেটি আইনের ঊর্ধ্বে: সালাহউদ্দিন
  • ওসমানী বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজের চাকা ফেটে তরুণের মৃত্যু
  • সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর চালুর প্রস্তাব কমিশনের, আলোচনায় উত্তেজনা
  • টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
  • মানিব্যাগ তুলতে সেপটিক ট্যাংকে নেমে বড় ভাইয়ের মৃত্যু, ছোট ভাই হাসপাতালে
  • ইসলাম অনুসারে সন্তানের আধুনিক নাম
  • সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
  • ৪ কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২১টি স্থাপনার নাম বদল
  • জুলাই সনদের খসড়ায় ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের চিত্র নেই: ইসলামী আন্দোলন
  • কক্সবাজারের সোনাদিয়া উপকূলে ভেসে এল অজ্ঞাতনামার লাশ, এখনো নিখোঁজ অরিত্র