অর্থ পাচারের আরেকটি মামলায় বিসমিল্লাহ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরীন হাবিবসহ আটজনকে ১২ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি আসামিদের প্রত্যেককে প্রায় ২৪৯ কোটি টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডিত অন্য আসামিরা হলেন খাজা সোলেমানের বাবা বিসমিল্লাহ গ্রুপের পরিচালক সফিকুল আনোয়ার চৌধুরী, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকবর আজিজ মুতাক্কি, মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবুল হোসেন চৌধুরী, ব্যবস্থাপক রিয়াজউদ্দিন আহম্মেদ, নেটওয়ার্ক ফ্রেইট সিস্টেম লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো.

আক্তার হোসেন ও যমুনা ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মোজাম্মেল হোসেন।

আসামিরা পলাতক। আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। পাশাপাশি তাঁদের নামে থাকা সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনবিসমিল্লাহ গ্রুপের সোলেমানসহ ৯ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, দুর্নীতি, প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ভুয়া রপ্তানি করে ১০৫ কোটি ৩৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে ২০১৩ সালে সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী নওরীন হাবিবসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

এর আগে ২০১৮ সালে অর্থ পাচারের আরেকটি মামলায় খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রীসহ ৯ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

আরও পড়ুনবিসমিল্লাহ গ্রুপের জালিয়াতি মামলায় দুদকের অভিযোগপত্র০৭ মার্চ ২০১৯

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসমিল্লাহ গ্রুপ ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো মিলে মোট ১ হাজার ১৭৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনায় ২০১৩ সালে ১২টি মামলায় ৫৪ জনকে আসামি করা হয়। এর সব কটিতেই বিসমিল্লাহ গ্রুপের পরিচালক খাজা সোলেমান চৌধুরী আসামি।

আরও পড়ুনবিসমিল্লাহ গ্রুপের ৪১ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ দুদকে০৩ মার্চ ২০১৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি

জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া দেশের সব সচল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে এই জানিয়েছেন সমিতিটি।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার সারা দেশে সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়। তবে ২০১৩ সালের গেজেট মূলে ২০১২ সালের মে মাসে সারা দেশে ৩০ হাজার ৩৫২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও সেই সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় বাদ রেখে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়।

আরো পড়ুন:

পরীক্ষার দিন বাদ দিয়ে নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতায় সরকার যথেষ্ট উদ্বিগ্ন: উপদেষ্টা

তৃতীয় ধাপের বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের ক্ষেত্রে ২০১২ সালের মে মাসের আগে স্থাপিত ও পাঠদানের অনুমতির জন্য আবেদন করে রাখা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করতে হবে বলে জোর দাবি তোলেন বক্তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, একই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তৎকালীন কিছু কর্মকর্তা কর্মস্থলে না থাকায়, সব শর্ত পূরণ করার পরেও ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় জাতীয়করণের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এই বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে থেকে ২০১২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাসহ ১ হাজার ৩০০ বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য উপজেলা ও জেলায় যাচাই-বাচাই করা হয়েছে, যা মন্ত্রণালয় সংরক্ষণ করা আছে।

জাতীয়করণকালীন সময়ে পাঠদানের অনুমতি ও রেজিট্রেশনের কার্যক্রম স্থগিত রাখায় এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতার সুবিধা ও ছাত্র-ছাত্রীরা উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সতিমির নেতারা তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন।

মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান পরিচালনা করলেও বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ না হওয়ায় আমরা শিক্ষকরা মানবেতর যীবন যাপন করছি। আমরা অন্যের শিশুকে জ্ঞানের আলো দিলেও আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। এই অবস্থা দূর করতে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মহাসচিব মো. ফিরোজ উদ্দিন বলেন, “২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি সব বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়া হলেও ফ্যাসিস্ট সরকার বিগত দিনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় সুকৌশলে বাদ দেয়। এই বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী লিটন বলেন, “বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। শত প্রতিকূলতার মাঝেও বিশ্বদরবারে তারা আজ বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের চিঠি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে সারা দেশের প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও টিফিনসহ প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত হবে; সেই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে।”

মানববন্ধনে সারা দেশ থেকে আসা বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সদস্যদের দেখা যায়।

ঢাকা/রায়হান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৪ বছর বয়সী বৈভবের বিশ্ব রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে উড়ে গেল গুজরাট
  • বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি