নির্বাচনের আগেই সংস্কারের সনদ তৈরি করতে হবে: জোনায়েদ সাকি
Published: 27th, February 2025 GMT
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। জন–আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সংস্কার প্রয়োজন। আবার সংস্কারকে সম্পূর্ণ করতেও নির্বাচন লাগবে। তাই নির্বাচিত সংসদ কী কী সংস্কার করবে, তা নির্বাচনের আগেই জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে একটি সনদ আকারে তৈরি করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার গণসংহতি আন্দোলন ছলিমাবাদ ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এক গণসংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানে এ গণসংলাপের আয়োজন করা হয়।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে জনগণকে সমস্ত ক্ষমতার কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। জনগণের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নের উপযোগী করে সংবিধানের সংস্কার না করলে আমরা কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারব না।’
জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে জন–আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা বাস্তবায়নে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী। তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরলেই ফ্যাসিবাদীরা সুযোগ নেবে। জনগণের সংগ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, শেখ হাসিনা জনগণের ভোটাধিকার ও নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে প্রজায় পরিণত করেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে জনগণ লড়াই করে বিজয় অর্জন করেছে। শুধু ভোটাধিকার নয়, বিদ্যমান রাজনৈতিক বন্দোবস্তের পরিবর্তে নতুন বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা মানুষের মাঝে তৈরি হয়েছে। যদি সমাজের বেশির ভাগ মানুষের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন নতুন বন্দোবস্তে না থাকে, দেশের মানুষ সেই বন্দোবস্ত মেনে নেবে না।
গণসংলাপে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা গণসংহতির নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির সাধারণ সম্পাদক আলিমুল কবির, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা গণসংহতি আন্দোলনের সংগঠক শামীম শিবলীসহ স্থানীয় নেতারা। এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের সংগঠন মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঈদের বিরতির পর ফের অবস্থান নিয়েছেন সংস্থাটির কর্মচারীরা। এর সঙ্গে ঢাকাবাসীর ব্যানারে নগরভবনে একত্রিত হয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা। সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন।
আজ রোববার সকাল থেকে ইশরাকের অনুসারীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরভবনে একত্রিত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও। সকাল ১১ টার দিকে নগরভবনে প্রবেশ করেন ইশরাক হোসেন এবং আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
ইশরাক হোসেন বলেন, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচল অবস্থা কেটে যাবে। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লংঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোনো অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন।
ইশরাক বলেন, আমরা যদি এখান থেকে পেছনের দিকে চলে যাই, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।
এদিকে তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’- এমন নানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের স্লোগানে উত্তাল ছিল পুরো নগরভবন। তাদের আন্দোলনের ফলে বিরতির আগে ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আজ থেকে ফের তারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয়; সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বেঞ্চ।